প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল বা কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণ কাজের আংশিক সমাপ্তি উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ঘোষণা দেবেন টানেলের দক্ষিণ প্রান্তের কাজ শেষ করার।
টানেলের দক্ষিণ প্রান্তের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। আর টানেলের উত্তর প্রান্তের ৯৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে সেতু বিভাগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
শুক্রবার(২৫ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস টানেলের পতেঙ্গা প্রান্তে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান।
কায়কাউস বলেছেন, ‘সেতু বিভাগ টানেলের দক্ষিণ অংশের সমাপ্তি উপলক্ষে একটি প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এই কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। আমরা আশা করি যে আগামী জানুয়ারির শেষ নাগাদ পুরো টানেলটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।’
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, টানেলের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে দু’টি পাঁচ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণ করা হচ্ছে।
টানেলের দৈর্ঘ্য তিন দশমিক ৩২ কিলোমিটার।
কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত, প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯৪ শতাংশ। বাকি কাজ শেষ করতে আরও দুই মাস সময় লাগবে।’
১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে টানেলটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল যা নদীর তলদেশে নির্মিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা
সরকারের লক্ষ্য হলো কর্ণফুলী টানেলের মাধ্যমে চট্টগ্রামকে চীনের সাংহাইয়ের মতো ‘এক নগরীর দুই শহর’করা।
এ প্রকল্পে সব ধরনের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে চীন। বর্তমানে, টানেলের ভিতরে অগ্নিনির্বাপণ, আলো এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়াও, ৫২টি সেচ পাম্পও স্থাপন করা হচ্ছে যাতে বর্ষা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় পানির স্তর বৃদ্ধির কারণে টানেলটি আটকে না যায়, প্রকল্প কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ)।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল সংলগ্ন দু’টি টিউব নির্মাণ করা হয়েছে। টানেলে একই সঙ্গে লাইট, পাম্প এবং ড্রেনেজ সিস্টেম স্থাপন করা হচ্ছে এবং একটি ৭৭২ মিটার ফ্লাইওভারও নির্মিত হয়েছে।
বর্তমানে টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে টোল প্লাজা নির্মাণের কাজ পুরোদমে চলছে।
কর্ণফুলী টানেল ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে আশা করছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা। চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় টানেলের অ্যাপ্রোচ রোডের দুই পাশে নতুন নতুন শিল্প স্থাপনের মধ্য দিয়ে এরই মধ্যে ভাগ্যের পরিবর্তন হতে শুরু করেছে।
প্রকল্প কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কর্ণফুলী টানেল দেশের পর্যটন ও শিল্প খাতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি এ টানেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে পাইপলাইনে ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানি শুরু: প্রধানমন্ত্রী