আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে কিছুটা স্বস্তির জন্য বাংলাদেশ ঋণ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দ্য রিজ-কার্লটন হোটেলের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য চার দশমিক সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করে।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, আইএমএফের এমডি শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন, যা কোভিড-১৯ মহামারির পর বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করে তুলেছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের জন্য আরও সমর্থন বাড়ান: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, আইএমএফ প্রধান বলেন যে সব বাধা মোকাবিলা করে দেশকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মতো নেতৃত্ব প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ নিশ্চিতকরণ এবং আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার কারণে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আইএমএফ প্রধানকে তার দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তার সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে অবহিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন একদিনে হয়নি, বরং এটি দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা ও কাজের ফল।’
তিনি বলেন, ২০০৭ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনে সামরিক সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি কীভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন করতে চান সে পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন এবং ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর সেই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেন।
শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে মধ্যস্থতা করতে পারে জাপান: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আইএমএফ গত ১৪ বছর ধরে সবসময় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে আইএমএফের সঙ্গে চার দশমিক সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি প্রকল্পে নিয়োজিত রয়েছে, যা মাত্র দুই সপ্তাহের আলোচনার পরে দেশটি পেয়েছে। যদিও অনেক দেশ বছরের পর বছর ধরে আলোচনার পরেও ঋণ নিতে পারে না।
আইএমএফ প্রধানের উদ্ধৃতি দিয়ে রউফ বলেন, ‘আইএমএফ ভবিষ্যতেও এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আইএমএফের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করেন।
এ সময় অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান উপস্থিত ছিলেন।
জানুয়ারিতে আইএমএফের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী ৪২ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ সাতটি কিস্তিতে এই ঋণ পাবে। ঋণের গড় সুদ হবে দুই দশমিক ২ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিনিয়োগ ব্যাপক সাফল্য বয়ে আনবে: জাপানি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী