কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের স্লোগান বিশেষ করে ‘রাজাকার’ শব্দ ব্যবহারে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)।
সোমবার এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু একটি বিবৃতিতে বলেন, ‘চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের একটি অংশ দেশে অস্থিরতার পরিবেশ তৈরি করতে চায় বলে মনে হচ্ছে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছে সাংবাদিক ফোরাম।’
এর আগে রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিক্ষোভকারীরা নিজেদের 'রাজাকার' বলে স্লোগান দেয়; এটি একই সঙ্গে দুর্ভাগ্যজনক এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের জন্য চরম অপমানজনক।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সবাই সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার চায়। কিন্তু এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ লক্ষ্য করেছে, একটি স্বার্থান্বেষী মহল কোটা আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে।’
বিবৃতিতে এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ সব পক্ষকে এ ধরনের বিভাজন সৃষ্টি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
পৃথক এক বিবৃতিতে বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক ও মহাসচিব দীপ আজাদ কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি, স্বার্থান্বেষী একটি মহল কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে।’
বিবৃতিতে বিএফইউজে আরও জানায়, ‘শুধু তাই নয়, কেউ কেউ এমন আচরণ করছেন যা মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির প্রতিনিধিত্ব করে। আমরা এ ধরনের আচরণের নিন্দা জানাই।’
সাংবাদিক নেতারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজাকারদের উল্লেখ করে স্লোগান দেওয়ার নিন্দা জানান। তারা বলেন, ‘এ ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
সাংবাদিক ফোরাম ছাড়াও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, অভিনয়শিল্পী ইক্যুইটি বাংলাদেশ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উচ্চারিত স্লোগানের নিন্দা জানায়।
কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।