কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বুধবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদেশে বাংলা ব্লকেড ( বাংলা অবরোধ) কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা।
এর আগে সোমবার(৮ জুলাই) তারা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলা অবরোধ এবং রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে রেলপথ ও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। তবে মঙ্গলবার আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি পালন করেননি।
মঙ্গলবার(৯ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
আরেক সমন্বয়ক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের পক্ষে আন্দোলন করছি না। বরং আমরা এই ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবি জানিয়েছি। কিছু গণমাধ্যম আমাদের দাবির ভুল ব্যাখ্যা করেছে। এই আন্দোলন মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে নয়। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের কোটার বিরুদ্ধে। এখন আন্দোলন গণআন্দোলনে রূপ নিয়েছে। কৃষক, শ্রমিক-প্রবাসী সকলেই আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: কোটাবিরোধী আন্দোলনে বুয়েট শিক্ষার্থীদের সংহতি প্রকাশ
সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের আদেশের প্রতিবাদে গত কয়েকদিন ধরে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এর আগে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন কোটা আন্দোলনকারীরা।
বুধবার (১০ জুলাই) আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হবে।
চেম্বার বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম আজ বিকালে এ দিন ধার্য করেন।
গত ৪ জুলাই রিট আবেদনকারীর আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি মুলতবি করেন হাইকোর্ট।
এরপর কোটাবিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।
আরও পড়ুন: চাকরিতে কোটা সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ২ শিক্ষার্থীর আবেদন
এমন পরিস্থিতিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, কোটা সংস্কারকারীরা চাইলে আপিল বিভাগে আবেদন করতে পারবেন।
সরকারি চাকরিতে বিভিন্ন কোটায় ৫৬ শতাংশ পদ সংরক্ষিত রাখা কোটা পদ্ধতি ২০১৮ সালে বাতিল করা হয়। ২০২১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারীরা এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করলে ২০২৪ সালের ৫ জুন হাইকোর্ট মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলকে অবৈধ ঘোষণা করে।
পরে সরকার ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে।
গত ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চে এ শুনানি হয়। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় সাময়িকভাবে বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর লিভ টু আপিল করতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: কোটা নিয়ে সব পক্ষের বক্তব্য শুনে ন্যায়বিচার করবেন আদালত: আইনমন্ত্রী