কোরবানির চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে সরকার বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা ও কোরবানি বিষয়ক সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক শেখ বশিরউদ্দীন।
বুধবার (২১ মে) দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত কমিটির প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘কোরবানির চামড়ার ওপর এতিমের হক রয়েছে। চামড়ার সঠিক মূল্য নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মাদরাসা ও এতিমখানায় ৩০ হাজার টন লবণ সরবরাহ করবে সরকার, যাতে তারা চামড়া সংরক্ষণ করতে পারে যতক্ষণ না ন্যায্য দাম পাওয়া যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসব প্রতিষ্ঠানকে চামড়া সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। একটি নির্দেশনামূলক ভিডিও তৈরি করে তা প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানো হবে।’
আরও পড়ুন: ১৫ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা নষ্ট করা হয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আগে একসঙ্গে কাঁচা চামড়া বাজারে আসায় সেগুলো পচে যেত। এ বছর সে সমস্যা হবে না। বৃহস্পতিবার (২২ মে) আবারও বৈঠক হবে, যেখানে এ বছরের চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হবে এবং তা গত বছরের তুলনায় বেশি হবে।’
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে, নির্ধারিত পশুর হাটের বাইরে কেনা-বেচা নিরুৎসাহিত করা হবে এবং হাটের হাসিল পাঁচ শতাংশ থেকে কমিয়ে আনার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। সরবরাহ ও চাহিদা সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘যদি ন্যায্য মূল্য না পাওয়া যায়, তাহলে সরকার প্রয়োজনে কাঁচা চামড়া রপ্তানি করবে।’
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, ‘বাজার ও পরিবহন ব্যবস্থার সুষ্ঠু বাস্তবায়নের পাশাপাশি প্রাণীদের প্রতি নৃশংসতা ও ক্ষতিকর ওষুধ প্রয়োগ রোধে কাজ করছে সরকার।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ বলেন, ‘চাঁদাবাজি রোধে পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ কাজ করবে এবং সেনাবাহিনী সার্বিক সহায়তা দেবে। একটি কেন্দ্রীয় সেল গঠন করা হবে এবং ৯৯৯ ও হটলাইন নম্বরে অভিযোগ জানালে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে সাংবাদিকদের সহায়তা কামনা করেন তিনি।
এ বছর কোরবানির চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতসহ কোরবানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় কমিটি করে প্রজ্ঞাপন জারী হয় গত মঙ্গলবার (২০ মে)।
কোরবানির সময় চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য গত ২০ মে সরকার ১৭ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে। বাণিজ্য উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়ক এবং বাণিজ্য সচিব সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
কমিটি কোরবানির চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ, যথাযথ লবণ সরবরাহ, ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থ সংরক্ষণ, হাট ব্যবস্থাপনা, পশু পরিবহন ও চামড়া শিল্প নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে নীতিগত দিকনির্দেশনা ও বাস্তবায়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে।