চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের একটি দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১১টি অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। এসময় তিনজনকে আটক করেছে র্যাব-৭।
শনিবার রাতে উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুরে অভিযান পরিচালনাকালে র্যাবের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমান প্রকাশ মশিউর বাহিনীর সঙ্গে র্যাবের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ১০ টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, একটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, একটি ধারালো ছুরি এবং মোট ২২ রাউন্ড গুলি। এছাড়াও এ সময় মিলিটারি গেজেট, মিলিটারি পোশাক, মিলিটারি বাইনোকোলার ও অবৈধ ধাতব মুদ্রা উদ্ধার করা হয়।
অভিযানে খুলনার অন্ধ জামাল (৪২), লালমনিরহাটের সিরাজ (৩৫) এবং বাঁশখালীর চশমা মিজানকে আটক করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাবের সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নূরুল আবছার বলেন, উদ্ধার করা অস্ত্র এবং বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন ফাইল ও কাগজপত্র যাছাই-বাছাই চলছে।
আরও পড়ুন: ববি ছাত্রী লাঞ্ছিত: র্যাবের হাতে ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার
র্যাব সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ ডিসেম্বর ভোরে জঙ্গল ছলিমপুর থেকে র্যাবের হাতে আটক হয় ২৭ মামলার আসামি, ছিন্নমূল সংগঠনের নেতা ও চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী ও সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমান। এ সময় তার কাছে থেকে দুই রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগাজিন সহ একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, দুটি এলজি, একটি দুনলা বন্দুক ও ১৩ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের সহকারী পরিচালক আরও জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাতে র্যাব জঙ্গল সলিমপুরে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান চালানো শুরু করতেই মশিউরের ছেলে সন্ত্রাসী শিবলুর নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী র্যাবকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে, লাঠি সোটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে র্যাবের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করে র্যাবের কর্মকাণ্ডে বাধা দিয়ে গ্রেপ্তার আসামিদের ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে র্যাবও পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে দূর্গম পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়। নিজেদের জীবন ও অস্ত্র ও গোলাবারুদ রক্ষার্থে র্যাবও বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে ১২৯ রাউন্ড গুলি করে। র্যাব এলাকাটিকে ঘিরে রাখে পরবর্তীতে আরও অধিক ফোর্স নিয়ে সন্ত্রাসীদের আস্তানায় ব্যাপক তল্লাশি শুরু হয়। এসময় মশিউর বাহিনীর প্রধান (মশিউরের ছেলে) মহিরুল হাসান ওরফে শিবলীসহ একাধিক সন্ত্রাসী দূর্গম পাহাড়ের মধ্যে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
উদ্ধার করা আগ্নেয়াস্ত্রের ভিত্তিতে সীতাকুণ্ড থানায় অস্ত্র মামলা ও র্যাবের ওপর আক্রমণ, সরকারি কাজে বাধা দেয়া, একটি র্যাব এসোল্ট মামলা ও মিলিটারি উপকরণ রাখা ও অবৈধভাবে ধাতব মুদ্রা রাখায় পৃথক তিনটি মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: র্যাব মানবাধিকার লুণ্ঠন করে না, রক্ষা করে: মুখপাত্র