প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্রলীগকে নীতি ও আদর্শ নিয়ে চলা উচিত। এ সংগঠন থেকেই ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গড়ে উঠবে।’
রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনে ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পুনর্মিলনী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরামর্শে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি গঠিত দেশের সবচেয়ে বড় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সংগ্রাম ও সাফল্যের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য রয়েছে।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্যকে পূর্ণকালীন দায়িত্ব প্রদান করেন।
ছাত্রলীগের প্রধান পৃষ্ঠপোষক শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্রলীগের মনে রাখা উচিত যে এ সংগঠনের মধ্য দিয়ে আগামী দিনের নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্ররাই দেশের ভবিষ্যৎ আর একটি স্বাধীন দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব অবশ্যই মেধাবীদের মধ্যে থেকে আসা উচিত।
শেখ হাসিনা বলেন, আদর্শ ছাড়া, নীতি ছাড়া, সততা ছাড়া কখনো কোনো নেতৃত্ব গড়ে উঠতে পারে না।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান বলেন, ‘আদর্শ ছাড়া নেতৃত্ব সাময়িকভাবে অর্থ সম্পদের মালিক হতে পারে, নাম ডাক হতে পারে। কিন্তু সেটা সময়ে আবর্তে বিলীন হয়ে যায়।’
‘এ ধরনের নেতৃত্ব শুধু দেশের জন্য বা ইতিহাসে কিছু রেখে যাবার মতো কোনো কাজ করতে পারে না . . . সেই নেতৃত্ব মানুষের কল্যাণে কোনো কাজ করতে পারে না। কোনো ধরনেরই সফলতা দেখাতে পারে না,’ যোগ করেন তিনি।
অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান ও এইচএম এরশাদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র ও টাকা ধরিয়ে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র, তাদের হাতে অর্থ তুলে দিয়ে তাদের ব্যবহার করত একটা লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে। এইভাবে বহু মেধাবী ছাত্রের জীবন সে নষ্ট করেছে।’
জিয়া পাকিস্তানের সহযোগীদের জেল থেকে মুক্তি দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাদের পুনর্বাসিত করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দেখেছেন কীভাবে জিয়াউর রহমান, এইচএম এরশাদ ও খালেদা জিয়ার আমলে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার জন্য মেধাবী শিক্ষার্থীদের অস্ত্রধারী ক্যাডার, জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খালেদ মোহাম্মদ আলী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি তোফায়েল আহমেদ এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপত্বিতে দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের অনুষ্ঠানে পরিচয় করিয়ে দেন।
শেখ হাসিনা জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এ সময় জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন। পরে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে দেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী এক বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও প্রত্যক্ষ করেন।