পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, কয়েকটি বিরোধী দলের এক দফা অসাংবিধানিক দাবি সত্ত্বেও সরকার সংবিধান অনুযায়ী জনগণের অংশগ্রহণে 'অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ' নির্বাচন অনুষ্ঠানে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
শুক্রবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের সম্মানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আস্থা ও প্রস্তুতি অনুযায়ী আসন্ন নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে বলে আমরা আশা করছি।’
আরও পড়ুন: এ অঞ্চলে যেকোনো দ্বন্দ্ব-যুদ্ধ বাংলাদেশকে উন্নয়ন লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পারে: পররাষ্ট্র সচিব
ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, গণমাধ্যমের সম্পাদকসহ বাংলাদেশি সাংবাদিকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মাসুদ বলেন, সরকার নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে এবং আসন্ন নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
অতীতে সামরিক, আধা-সামরিক এবং ছদ্ম-সামরিক শাসনামলে নির্বাচনী জালিয়াতির সম্ভাবনা নির্মূল করার ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক ভোটার আইডি এবং স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সসহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এই উপমহাদেশের জনগণ ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উভয় ইস্যুতে রাজনৈতিকভাবে অধিকতর সচেতন ও সম্পৃক্ত। এ কারণেই উপমহাদেশের জরিপে ফলাফল বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে বেশি।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, 'ভোটার ও রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থকরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত।’ এর ফলে নির্বাচনে তীব্র প্রতিযোগিতা হয় যা প্রায়ই সহিংস হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: ভোট দিতে কোনো চাপ নেই, তবে 'একটি দলের' লিফলেটে না দিতে বলা হয়েছে: সিইসিকে উদ্ধৃত করে পররাষ্ট্র সচিব
তিনি বলেন, 'বিশ্বের এই অংশে হতাহতের ঘটনা, এমনকি মৃত্যুও একটি সাধারণ ঘটনা। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে হতাহতের ঘটনা বেশি ঘটে, যেখানে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিযোগিতা হয়।’
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশ একটি তরুণ জাতি এবং পশ্চিমা গণতন্ত্র এখনো এখানে পূর্ণরূপ ধারণ করতে পারেনি।
তিনি বলেন, 'সম্প্রতি পরিপক্ক পশ্চিমা গণতন্ত্রেও ফাটল দেখা যাচ্ছে। সুতরাং, এটি ক্রমবর্ধমানভাবে অনুভূত হচ্ছে যেকোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থাই নিখুঁত নয় এবং সেই অর্থে কোনো গণতন্ত্র পরিপূর্ণ নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে জাতি হিসেবে আমরা গণতান্ত্রিক চর্চায় বৈশ্বিক মানদণ্ড অর্জনের চেষ্টা করছি। আমরা আমাদের প্রচেষ্টায় বিশ্বজুড়ে আমাদের বন্ধুদের কাছ থেকে সমর্থন চাই।’
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে হবে: সিইসি
তিনি আশা প্রকাশ করেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতির পাশাপাশি বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনে সফল হবে, যা নিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গর্ববোধ করবে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সরকার বিশ্বাস করে যে, সাংবিধানিক বিধানের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এবং নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করা মানবাধিকারের রীতিনীতি ও চর্চা প্রতিষ্ঠার মূল চাবিকাঠি।
সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: ৬৯ দেশের অনারারি কনসাল ও কনসাল জেনারেলদের পররাষ্ট্র সচিবের সংবর্ধনা