জলবায়ু অভিবাসী ও উদ্বাস্তু বৃদ্ধিতে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিরূপ প্রভাবসহ অন্যান্য যেসব বিষয় নেতিবাচক ভূমিকা রাখছে সেগুলোর উপর আলোকপাত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
জাতিসংঘের অভিবাসী ও শরণার্থী সংজ্ঞার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করতে জলবায়ু অভিবাসী ও উদ্বাস্তুদের সংজ্ঞা দ্রুত পরিবর্তন করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ‘যতদূর আমরা জানি শুধু এই গ্রহে জীবনের উৎস রয়েছে।’
শনিবার তুরস্কের আন্টালিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্টালিয়া কূটনীতি ফোরামের প্রথম প্যানেল আলোচনায় বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন, জলবায়ু অভিবাসী ও জলবায়ু শরণার্থী সমস্যা নিয়ে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে: জাতিসংঘ পরিবেশ সম্মেলনে পরিবেশমন্ত্রী
মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং ভিয়েতনামের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপমন্ত্রী “বিল্ডিং এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিওনাল আর্কিটেকচার: দ্য চ্যালেঞ্জ অব আনম্যাচিং ইন্টারেস্টস”র বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন।
অন্যান্য অনেক ছোট ও দ্বীপ রাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশও জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, গত তিন দশক ধরে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং গ্রিনহাউস গ্যাস বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের সমগ্র উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
‘এটি প্রতিনিয়ত জলবায়ু অভিবাসনের কারণে হচ্ছে। সমস্যাটি এখন এতটাই বাস্তব ও বাংলাদেশের জন্য যে, অবিলম্বে বিশ্ব সম্প্রদায়ের জলবায়ু অভিবাসী ও শরণার্থীদের সংজ্ঞা পরিবর্তন করা প্রয়োজন,’ তিনি বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন, যদিও দেশ ও অনেক পরিবেশ বিজ্ঞানী বহু বছর ধরে বিষয়টির উপর গুরুত্বারোপ করেছেন, তবুও অনেক বিশ্ব নেতাই এটি বিশ্বাস করেন না। ইদানীং তা সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
হাসান বলেন, ‘তবুও বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রধান অবদানকারী ধনী দেশগুলো, সমস্যাটি মোকাবিলা করতে এবং আমাদের পরিবেশ রক্ষার জন্য খুব কম এগিয়ে এসেছে।’
এটি স্থানীয় সমস্যা হলেও এর প্রভাব বিশ্বব্যাপী ।
এই রূঢ় বাস্তবতার অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে, বাংলাদেশ সব এক্টিভিস্ট ও বিশ্বনেতাদের জলবায়ু অভিবাসী ও উদ্বাস্তুদের সংজ্ঞা পরিবর্তনের গুরুত্ব মেনে নেওয়ার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ও ভবিষ্যত প্রজন্মের সুরক্ষার জন্য এর গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা প্রণয়ন করার আহ্বান জানিয়েছে, বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ দিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইগন্যাসিও ক্যাসিসের সঙ্গে বৈঠক করেন। দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন ক্ষেত্রসহ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
এ সময় তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আমানুল হক, মন্ত্রীর একান্ত সচিব আরিফ নাজমুল হাসান, সুইজারল্যান্ডের আন্তুর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক পরিচালক রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল লুশিংগার ও সুইস পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উপদেষ্টা সেড্রিক স্টাকি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।