ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) এবং যুক্তরাজ্য সরকার মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) সঙ্গে যৌথভাবে তাদের অংশীদারিত্ব শুরু করেছে।
তারা টিআইবির মূল প্রকল্প ‘পার্টিসিপেটরি অ্যাকশন এগেইনস্ট করাপশন: টুয়ার্ডস ট্রান্সপারেন্সি অ্যান্ড একাউন্টেবিলিটি’ (প্যাক্টা) বাস্তবায়নে যৌথভাবে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত এই প্রকল্পটিতে সুইস ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সি (এসডিএস), দ্য অ্যাম্বাসি অব সুইডেন ও দ্য কিংডম অব দ্য নেদারল্যান্ডস যৌথভাবে আগে থেকেই টিআইবিকে সহায়তা দিয়ে আসছে।
ঢাকার বারিধারায় ইউএন রোডে ব্রিটিশ হাইকমিশনে অভিষেক অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, ইউএসএআইডি মিশন ডিরেক্টর রিড এশলিম্যান, ব্রিটিশ হাইকমিশনের ঢাকা টিম লিডার, গভর্নেন্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল ইউনিট টিমথি ডাকেট এবং ইউএসএআইডি, ব্রিটিশ হাইকমিশন ঢাকা ও টিআইবির অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করার মাধ্যমে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় টিআইবির চলমান প্রচেষ্টার অংশীজন হতে পেরে ইউএসএআইডি ও ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত হাস বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের অন্যতম নীতি অনুষঙ্গ দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকার ও লড়াইয়ের অংশ হিসেবে টিআইবির সঙ্গে ইউএসএআইডির এই অংশীদারিত্বের কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে। সর্বোচ্চ পর্যায়ের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে যুক্তরাষ্ট্র সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক, ব্যবসায়িক ও বিনিয়োগসহ যে বহুমাত্রিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, তার অধিকতর বিকাশের সঙ্গে উচ্চতর মাত্রায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক সুশাসন এবং বিশেষ করে সকল ধরনের দুর্নীতি প্রতিরোধ ও প্রতিকার প্রচেষ্টা অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পর্কিত।’
আরও পড়ুন: টিআইবির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হলেন সুলতানা কামাল
ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক প্রায় দুই দশক ধরে টিআইবির সঙ্গে যুক্তরাজ্য সরকারের দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্বের কথা স্মরণ করেন এবং বলেন, ‘বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন অধিকতর বেগবান করার মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন নিশ্চিতে টিআইবির চলমান প্রচেষ্টার অংশীদার হতে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস একত্র হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি কাক্ষিত পর্যায়ের উন্নয়ন, বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধি অর্জনের অন্যতম প্রধান প্রতিবন্ধক। যুক্তরাজ্যসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায় যে কোনো একক পরিকল্পনা বা পন্থায় দুর্নীতি প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বরং সামগ্রিকভাবে একটি রাষ্ট্রকাঠামো যখন অধিকতর জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহকে কার্যকর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তুলতে পারে, যেখানে সুশীল সমাজ নিঃসঙ্কোচে ও স্বাধীনভাবে তাদের মতামত প্রকাশ এবং ব্যক্তি-খাত বিকশিত হওয়ার অবারিত সুযোগ লাভ করে, সেখানে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা অপেক্ষাকৃত সহজ।’
যুক্তরাজ্য সরকার ও ইউএসএআইডির প্রতি টিআইবির প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘তাদের সহযোগিতা আমাদের বিবেচনায় অর্থমূল্যের চেয়ে অনেক বেশি।’
তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার অন্যতম অন্তরায় এবং বৈষম্য ও অবিচার বৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি যে দুর্নীতি, তার প্রতিরোধে শত প্রতিকূলতার বিপরীতে সামাজিক আন্দোলনকে অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে এই সহযোগিতা আমাদের সক্ষমতা ও অনুপ্রেরণার অন্যতম উৎস।’
আরও পড়ুন: সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ প্রত্যাখ্যান করেছে টিআইবি
রাজধানীতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে দুই সিটি করপোরেশনের উদ্যোগ হতাশাজনক: টিআইবি