যানজটের নগরীতে পরিণত হয়েছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা। চাষাড়া থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের পুরাতন সড়কটির পঞ্চবটি, ফতুল্লা বাজার, পোস্ট অফিস থেকে পাগলার মুন্সী খোলা পর্যন্ত যানজট যেন নিত্যদিনের রুটিনে পরিণত হয়েছে।
স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী এবং গামেন্টর্স শ্রমিকসহ নানা পেশাজীবী মানুষ যানজটের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জেলা ট্রাফিক সংস্থাসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরধারীর অভাবে যানজট কোনও ভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এ সড়কে গণপরিবহন ব্যবহারকারী সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তির কোনও শেষ নেই।
জানা যায়, এই যানজটের সূত্রপাত পঞ্চবটী মোড়ে; যত্রতত্র মিশুক/ইজিবাইক দাড় করিয়ে যাত্রী তোলা আর রাস্তার দুইপাশে এলোমেলো ফুটপাত। এদিকে ফতুল্লা মসজিদ সংলগ্ন বাজারের প্রবেশ মুখে মালবাহী ট্রাক রেখে লোড-আনলোড করা এবং সরু রাস্তার উভয় পাশে থানার প্রবেশ মুখ থেকে ফতুল্লা বালুঘাট পর্যন্ত উভয় পাশে ফুটপাত গড়ে ওঠা।
এছাড়া, ফতুল্লা পোস্ট অফিসে শিবু মার্কেটের প্রবেশ মুখের উভয় পাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইজিবাইক স্ট্যান্ড।
ফলে এই অত্যাবশ্যকীয় সড়কে যানজট লেগেই থাকে এবং যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
আরও পড়ুন: ঢাকার যানজট সমস্যা নয়, চ্যালেঞ্জ: ডিএনসিসি মেয়র
এমনকি যানজটের আরেকটি কারণ হলো ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডিএনডি সড়কে খালি ট্রাক পার্কিং করা। খালী ট্রাকগুলোও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডিএনডি সড়কের দুইপাশে রাখছেন ট্রাকের মালিক ও চালকেরা। যে যার মত করে রাস্তা দখল করে প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি করছে।
এদিকে পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো ফতুল্লার প্রবেশ ও বহির্গমন পয়েন্ট অতিক্রম করতে প্রতিনিয়ত অসুবিধার সম্মুখীন হয়।
এছাড়া পাশে ট্রাফিক পুলিশ থাকার পরেও তারা সঠিকভাবে দায়িত্বে পালন করছেন না।
বিসিক গেট ২ থেকে পঞ্চবটি পর্যন্ত সড়কে প্রায়ই যানজট থাকে। শুধুমাত্র ট্রাক চালক ও অটোরিকশা ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করার কারণে যাত্রীদের জন্য প্রচণ্ড দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়।
এমনকি পথচারীদেরও ফুটপাথে চলতে অসুবিধা হয়।
মুন্সীখোলা, তালতলা দেশের বৃহত্তম রড সিমেন্টের হাব। এখান থেকে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে ইট, সিমেন্ট ও রড সরবরাহ করা হয়।
এই সড়কে চলাচলকারী অনেক যাত্রী বলেন, পবিত্র রমজান মাসে তাদের যাতায়াত কেমন হবে তা বলা মুশকিল। এছাড়া পুরো রাস্তা দখলের পাশাপাশি কাচা রাস্তায় ইজিবাইক-মিশুক-বাস-ট্রাক পার্ক করে মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
এদিকে যাত্রীরা স্বীকার করেন, ছোট-বড় কোনো যানবাহনের চালকই ট্রাফিক নিয়ম মানতে চান না।
এ রুটে যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশিং বাড়ানোর জোর দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
যা রাস্তার কিছু অংশ যানজট মুক্ত করতে পারে।
বিশেষত, যাত্রীরা আনন্দ এবং বোরাক পরিবহন এর চালক ও হেলপারদের ট্রাফিক বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী করেছে।
ফতুল্লার বাসিন্দাদের দাবি, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডিএনডি সড়কে যানজট নিরসনে চালক-হেলপার, মালিক সমিতি ও শ্রমিক নেতাদের সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং এ সমস্যা সমাধানে প্রশাসন ও ট্রাফিক পুলিশকে সজাগ থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: টঙ্গী থেকে মগবাজার পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট