পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমাজের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিক বিবেচনায় এটি নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞবদ্ধ। এজন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি, বিধিমালা যুগোপযোগীকরণ ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অহেতুক বেশি ও উচ্চশব্দের শব্দযন্ত্র ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
এছাড়া অযথা হর্ন বাজানো, হাইড্রোলিক হর্ন পরিহার করতে গাড়িচালকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পরিবহন মালিক ও ব্যবহারকারীরা এটি নিশ্চিত করতে পারেন।
আরও পড়ুন: তামাক চাষ বন্ধে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে মন্ত্রণালয়: পরিবেশমন্ত্রী
বুধবার খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সমন্বিত ও অংশীদারীত্বমূলক প্রকল্পের অধীনে আয়োজিত সচেতনতামূলক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
পরিবেশমন্ত্রী এসময় ইমাম ও পুরোহিত সহ সকল ধর্মীয় নেতাকে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে এ বিষয়ে বক্তব্য রাখার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকেরা জনগণকে সচেতন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকবল সংকট আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা চাই। হাইড্রোলিক হর্নের উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিআরটিএ ও পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এছাড়া যানবাহনের ফিটনেস সনদ প্রদানের সময় হাইড্রোলিক হর্ন ও অধিক মাত্রার হর্ন ব্যবহারকারী যানবাহনকে অনুমতি প্রদান না করার জন্য তিনি অনুরোধ করেন।
পরিবেশমন্ত্রী এসময় হাইড্রোলিক হর্ন ও শব্দদূষণের বিরুদ্ধে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য মাঠ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, অধিক পরিমাণে সবুজ বৃক্ষ থাকলে শব্দদূষণ কমে আসে তাই আমাদের অধিক পরিমাণে গাছ লাগাতে হবে। প্রতিবেশী দেশগুলোতে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে থাকলে আমরা কেনো পারবো না। আগামী প্রজন্মের জন্য শব্দদূষণ মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সকলের সহযোগিতা চাই। মানুষের সুস্থতার স্বার্থেই আমাদেরকে শব্দদূষণ রোধে সবাইকে কাজ করতে হবে।
খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম, খুলনা রেঞ্জ পুলিশের এর অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক মো. ইকবাল, খুলনার জেলার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন এবং খুলনা মেডিকেল কলেজের নাক, কান ও গলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. মো. কামরুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিরা শব্দদূষণ রোধে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এছাড়াও, কর্মশালায় উপস্থিত সকলকে শব্দদূষণ হতে রক্ষা পেতে ইয়ারপ্লাগ ও এর বিষয়ে সচেতন করতে স্টিকার প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে দূষণমুক্ত করতে সম্ভাব্য সবকিছু করা হবে: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ সংরক্ষণে টিলাকাটা ও পুকুর ভরাট বন্ধ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী