প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, তারা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে জনগণই হবে প্রকৃত ক্ষমতার উৎস। পাশাপাশি সারা বিশ্বে মানবতা ও সহানুভূতিশীলতার প্রতীক হিসেবে স্বীকৃত হবে জাতি।
নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি গড়ে তুলে সরকার সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নির্মাণের প্রচেষ্টা চালাবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ আয়োজিত সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি শক্তিশালী করার জন্য বিশ্বব্যাপী সহযোগিতার ওপর জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা। একই সঙ্গে সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার আহ্বানও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও সহযোগিতার ভিত্তিতে সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখব। এসব নীতিই হবে আমাদের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি। জলবায়ু সংকট মোকাবিলা এবং বৈশ্বিক শান্তি ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা শক্তিশালী করতে একসঙ্গে কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: সশস্ত্র বাহিনী দিবসে শিখা অনির্বাণে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের শ্রদ্ধা
বৈশ্বিক উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দেন প্রদান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমাদের তরুণ সমাজ যেন মেধার ভিত্তিতে জাতি গঠনে অবদান রাখতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।’
মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের কথা স্মরণ করে ইউনূস বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে সশস্ত্র বাহিনীর সাহসী সদস্যরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে।
এটি যুদ্ধের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত হয়, যার ফলে বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
শহীদদের প্রতি সম্মান জানান ইউনুস।
তিনি বলেন, ‘আজ আমি স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাণ উৎসর্গ করা সব সাহসী আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তাদের বিদেহী আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করি।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীরদের স্বজনদের প্রতি তিনি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
সম্প্রতি ছাত্রনেতৃত্বাধীন গণঅভ্যত্থান প্রসঙ্গে ইউনুস বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের প্রচেষ্টায় ‘নতুন বাংলাদেশ’ অর্জিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণকে একটি বৃহত্তর পরিবারে ঐক্যবদ্ধ করা। মতামতের পার্থক্য স্বাভাবিক, কিন্তু এই পার্থক্যের কারণে আমাদের কখনই একে অপরকে শত্রু ভাবা উচিত নয়, তা আদর্শিক হোক বা ধর্মীয় হোক।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এমন হওয়া উচিত যেখানে সব নাগরিক সমান হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের বৈষম্য ও শোষণমুক্ত রাষ্ট্রের স্বপ্ন পূরণে সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন ইউনূস। তিনি বলেন, 'জাতীয় জীবনে কেউ কারো উপরে বা নিচে নয়।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারসহ বাংলাদেশের জনগণের শান্তি, সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় আকস্মিক নেতিবাচক কিছু নেই: অধ্যাপক ইউনূস