বুধবার বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত পরিচিতি ও মতবিনিময় সভায় মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, ‘ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান চলছে, এগোচ্ছে, তবে কাঙ্ক্ষিত গতিতে না।’
তিনি আবারও চালকল মালিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘চালের বাজার স্থিতিশীল রাখেন, সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করেন। যদি তা না করেন তবে সরকার চাল আমদানিতে যেতে বাধ্য হবে। যারা সরকারি খাদ্যগুদামে চাল দেবেন তারা সুনজরে থাকবে। যারা চাল সরবরাহ করবেন না তাদের অবশ্যই কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।’
খাদ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চলমান কার্যক্রমগুলো আরও জোরদার ও গতিশীল করার নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা যাতে খাদ্যে ভেজাল মুক্ত থাকতে পারি, নিরাপদ খাদ্য ভোগ করতে পারি সে লক্ষ্যেই ২০১৩ সালে নিরাপদ খাদ্য আইন এবং ২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠিত হয়।’
মন্ত্রী জানান, নিরাপদ খাদ্য নিয়ে তারা অতীতে বিভিন্ন সেমিনারসহ অনেক কাজ করেছেন। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির জন্য সে কাজগুলো সেভাবে আর হচ্ছে না। কিন্তু অচিরেই নতুন করে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করা হবে।
কেউ যেন ভেজাল খাদ্য তৈরি করতে না পারে, ভেজাল খাদ্য বিক্রি করতে না পারে, প্রতিটি খাদ্যের নিরাপত্তা যেন নিশ্চিত হয় সে দিকে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলেন তিনি।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আইন, বিধিবিধান যতই তৈরি করা হোক না কেন, যদি এগুলোর সঠিক প্রয়োগ না হয়, কার্যকারিতা না থাকে, তবে তা কোনো সুফল বয়ে আনবে না।’
আরও পড়ুন: ফরিদপুর সরকারি খাদ্যগুদামে নিম্নমানের চাল মেশানোর অভিযোগ
তিনি আধুনিক ল্যাবরেটরি স্থাপনের প্রয়োজনের কথা তুলে ধরে বলেন, প্রথমত ল্যাবরেটরি প্রয়োজন এবং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। প্রতিটি জেলায় ভ্রাম্যমাণ টেস্টিং ল্যাবরেটরি তৈরি করতে পারলে যত বেশি খাদ্যদ্রব্য টেস্ট করা যাবে তত বেশি মানুষ এ সম্পর্কে জানতে পারবে এবং সচেতন হবে। এ জন্য জেলায় জেলায় ভ্রাম্যমাণ ল্যাবরেটরি প্রদান করার ওপর জোর দেন মন্ত্রী।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ডক্টর মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমের সমন্বয় ও সঞ্চালনায় সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মনজুর মোরশেদ আহমেদ সভায় একটি উপস্থাপনা দেন।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য, কার্যাবলী, কর্তৃপক্ষের জনবল নিয়োগ, স্যানিটারি ইন্সপেক্টরদের দায়িত্ব প্রদান, বিধি-প্রবিধানমালা প্রণয়ন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, নিরাপদ খাদ্য দিবস, অর্জিত নানা সাফল্য, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সভায় আরও জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় ২০১৮ সাল থেকে ২ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ‘জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং যথারীতি উৎসাহ-উদ্দীপনায় দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবসের ধারণা পূর্বে কোনো দেশে ঘোষণা বা পালন করা হয়েছে এরূপ কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ‘সুস্থ-সবল জাতি চাই, পুষ্টিসম্মত নিরাপদ খাদ্যের বিকল্প নাই’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে ২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস পালিত হয়।