ঠান্ডাজনিত রোগে দক্ষিণের ছয় জেলায় নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আক্রান্তদের বয়স ২৫ দিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে। প্রতিদিন গড়ে আড়াইশ’ শিশু খুলনা শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসছে। ভর্তি ইচ্ছুক রোগীর শয্যা দিতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, ৪ ডিসেম্বর ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে অতিবৃষ্টির পর এ সব অঞ্চলে তাপমাত্রা কমতে থাকে। এরপর অক্টোবর থেকে শিশুদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়।
হাসপাতালের সূত্র জানায়, গত অক্টোবর মাসে নিউমোনিয়ায় ২৩০ জন, নভেম্বরে ১৬০ ও ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০২ জন। ডায়রিয়ায় অক্টোবর মাসে ২৫৬ জন, নভেম্বরে ৩৬২ ও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৮১ জন রোগী আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডায়রিয়ার প্রকোপ, বাড়ছে শিশু রোগীর চাপ
গত বছর অক্টোবর মাসে নিউমোনিয়ায় ৮৭, নভেম্বরে ১১৫ ও ডিসেম্বরে ৭১ জন। ডায়রিয়ায় অক্টোবর মাসে ৩১৯, নভেম্বরে ৪০১ ও ডিসেম্বরে ৬১৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়।
নড়াইল, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, গোপালগঞ্জ, মোংলা ও খুলনা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে শিশুরা আক্রান্ত হয়ে খুলনা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে।
শিরোমনি মো. বেল্লাল হোসেনের এক বছর দুই মাস বয়সী ছেলে রবিউল ইসলাম ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সোমবার শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়। তার বাবার অভিযোগ শিশুর শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে।
যশোরের অভয়নগর উপজেলার আশরাফুল ইসলামের ১৪ মাসের আরবান বুধবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শিশুটির মা জানান, তার সন্তান ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছিল। আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠছে।
আরও পড়ুন: শীতে রোটা ভাইরাসের প্রকোপ: মতলব হাসপাতালে শিশু রোগীর ভিড়
শিশু হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. মো. নুর-এ- আলম সিদ্দিকী জানান, রোটা ভাইরাল ডায়রিয়া ও ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে ২৫ দিন থেকে ৫ বছর পর্যন্ত শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ২৫০ রোগী হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসছে। ভর্তির সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ার কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। ভাইরাল ডায়রিয়ার নির্দিষ্ট ওষুধ নেই।
শিশুর শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিলে খাবার স্যালাইন, মায়ের বুকের দুধ, ডাবের পানি ও বিশুদ্ধ খাবার পানি পানের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।