ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) নির্ভরযোগ্যতা ও এর অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে যন্ত্রটির ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্যের আহ্বান জানিয়েছেন নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মজুমদার ইভিএমকে 'ত্রুটিপূর্ণ ও বিতর্কিত ডিভাইস' বলে উল্লেখ করেন।
নির্বাচনি আইন, বিধিবিধান ও প্রক্রিয়ার দুর্বলতা দূর করতে নির্বাচন সংস্কার কমিশন এ পর্যন্ত ২১টি বৈঠক করেছে।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্র সংস্কারে জামায়াতের ৪১ প্রস্তাবনা, বিচার ব্যবস্থা সংস্কার ও ইভিএম বাতিলের আহ্বান
বৈঠকগুলোতে আলোচনার ভিত্তিতে কমিশন অধিকতর স্বচ্ছ ও দক্ষ নির্বাচনি ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বেশ কিছু সুপারিশ প্রস্তুত করেছে।
বদিউল আলম বলেন, ‘আমাদের সদস্যরা বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শও করেছেন। আমরা আমাদের ওয়েবসাইট, ইমেল এবং সামাজিক মাধ্যমেও প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করছি। এখনও পর্যন্ত আমরা ৩৬৪টি ইমেইল ও মেসেজের মাধ্যমে মূল্যবান মতামত পেয়েছি।’
কমিশনের নিরপেক্ষতার কথা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, 'আমাদের কোনো গোপন কর্মসূচি নেই। আমাদের কাজ নিরপেক্ষ এবং কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংযুক্ত নয়। অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’
মজুমদার আগের নির্বাচনগুলোতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কথিত ভূমিকার নিন্দা জানিয়ে অভিযোগ করেন যে, তারা ভোটার এবং প্রার্থীদের বেআইনিভাবে হয়রানি করেছে। ‘যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত। গণতান্ত্রিক নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় এ ধরনের অনিয়মের কোনো স্থান নেই।’
ইভিএম ব্যবহারে চ্যালেঞ্জ
প্রযুক্তিগত সমস্যা ছাড়াও ইভিএম সংক্রান্ত আরও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পরিচালনার অদক্ষতা এবং স্বচ্ছতার অভাবক। হঠাৎ করে ভোটকেন্দ্র এর ব্যবহারের ঘোষণা যৌক্তিক জটিলতা তৈরি করেছে, যা নির্বাচনি প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের আস্থা আরও কমিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেডে (বিএমটিএফ) বর্তমানে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার ত্রুটিপূর্ণ ইভিএম মজুদ রয়েছে। এতে নিয়মিত গুদাম ব্যয় বহন করতে হচ্ছে, যা প্রাথমিক প্রকল্পের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ, অংশীজনরাও আশা করছেন এই প্রচেষ্টাগুলো দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে শক্তিশালী করবে।
আরও পড়ুন: সিসিক নির্বাচন: ভোটকেন্দ্রে ১৭৪৭টি সিসি ক্যামেরা, কেন্দ্রে যাচ্ছে ইভিএমসহ ভোটের সরঞ্জাম