বুধবার বিচারপতি মো. হাবিবুল গণি ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুরাদ রেজা ও ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমেদ রানজীব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম।
আরও পড়ুন: নুসরাত হত্যা: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মুক্তির জন্য ফেনীতে দোয়া মাহফিল!
নুসরাতের কবরে পিবিআইয়ের শ্রদ্ধা নিবেদন
সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত ২০১৯ সালের মার্চে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন। সে সময় সোনাগাজী থানায় তার জবানবন্দি নেন তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। তার কয়েক দিন পর মাদ্রাসার ছাদে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের গায়ে আগুন দিলে সারা দেশে আলোচনা শুরু হয়। তখন নুসরাতের ওই জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হলে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ওই বছরের ১৫ এপ্রিল ওসি মোয়াজ্জেমকে আসামি করে ঢাকায় বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। পরিদর্শক মোয়াজ্জেমই ওই ভিডিও ছড়িয়েছেন- পিবিআইয়ের এমন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ মামলার বিচার শুরু হয়।
বিচার শেষে ২৮ নভেম্বর এই মামলার দুই ধারায় মোয়াজ্জেমকে আট বছরের কারাদণ্ড দেন সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন। একইসঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে দুটি ধারায় আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
রায়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬ ধারায় মোয়াজ্জেমকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং ২৯ ধারায় তিন বছর কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। সাজা ধারাবাহিকভাবে কার্যকর হবে বিধায় ওসি মোয়াজ্জেমকে আট বছরই কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
আরও পড়ুন: নুসরাত হত্যা: আপিল শুনানি শেষে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি পরিবারের
এরপর হাইকোর্টে আপিল করেন ওসি মোয়াজ্জেম। গত বছরের ১৮ আগস্ট হাইকোর্ট তার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে। পরে তিনি সেই আপিলে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
এদিকে, নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় তার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৬ জনকে ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড দেয় ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। সেই রায় ডেথ রেফারেন্স হিসেবে শুনানির জন্য ইতোমধ্যে হাইকোর্টে রয়েছে।