পারমাণবিক অস্ত্র সাধারণ ও সম্পূর্ণ নির্মূলের মাধ্যমে একটি নিরাপদ বিশ্ব নিশ্চিতকরণে অধিকতর আন্তর্জাতিক সংহতির আহ্বান জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) পারমাণবিক অস্ত্র সম্পূর্ণ নির্মূল বিষয়ক আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আয়োজিত এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় এমন আহ্বান জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীতে যতদিন পরমাণু অস্ত্র থাকবে, ততদিন আমরা কেউ নিরাপদ নই। কারণ, পারমানবিক অস্ত্র সারা বিশ্বে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তে মৃত্যু ও ধ্বংস ঘটায়। কেবলমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রের সম্পূর্ণ নির্মূলই মানব জাতির এই হুমকির বিরুদ্ধে সুনিশ্চিত সমাধান।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর, কিন্তু কিছু গোষ্ঠী তিক্ততা সৃষ্টির চেষ্টা করছে: মোমেন
ড. মোমেন বিশ্বব্যপী পারমাণবিক অস্ত্রের সাধারণ ও সম্পূর্ণ নির্মূল এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তির (ট্রিটি অন প্রহিবিশন অব নিউক্লিয়ার ওয়েপনস) বাস্তবায়নের প্রতি বাংলাদেশের সুদৃঢ় অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি এই চুক্তির সদস্য রাষ্ট্রসমূহের প্রথম বৈঠক, এতে গৃহীত রাজনৈতিক ঘোষণাপত্র ও ৫০-দফা কর্মপরিকল্পনাকে স্বাগত জানান এবং পারমাণবিক অস্ত্রধারি রাষ্ট্র ও নিউক্লিয়ার আমব্রেলা রাষ্ট্রসহ সকল রাষ্ট্র কর্তৃক পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
প্রদত্ত বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকির কথাও তুলে ধরেন। তা উদ্দেশ্যমূলক হোক বা দুর্ঘটনাজনিত হোক।
তিনি বলেন, এই বিধ্বংসী অস্ত্রগুলো পরিচালনা করার বহুমুখী চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান।
তিনি পরমাণু অস্ত্রধারী দেশগুলোকে সন্ত্রাসবাদী বা অন্য অননুমোদিত অপশক্তির হাতে পারমাণবিক অস্ত্র পড়ার ঝুঁকি এড়াতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ই-কোয়ালিটি সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ ইনোভেশনের উদ্বোধন করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পারমাণবিক প্রযুক্তির গবেষণায় অধিকতর বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং মানবজাতির স্বার্থে এর শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের সম্ভাবনা অন্বেষণের আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি পারমাণবিক অস্ত্রের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বন্ধ করে সেই অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা, টেকসই উন্নয়ন, শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রকল্পে ব্যবহারের আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী শান্তির সংস্কৃতি লালন, পরমাণুমুক্ত বিশ্বের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা এবং নিরস্ত্রীকরণ আলোচনা পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, সভাটিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের উপ রাষ্ট্রপ্রধান, মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ভুল তথ্য-অপপ্রচার মোকাবিলা করতে প্রবাসীদের প্রতি মোমেনের আহ্বান