দেশের শিল্প খাতে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ১২ শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২২ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
আগামী মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) প্রধান অতিথি হিসেবে এই পুরস্কার তুলে দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
রাজধানীর আব্দুল গনি সড়কে অবস্থিত ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হবে বলে জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
পুরস্কারের জন্য নির্বাচিতদের হাতে স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট, টাকা ও সম্মাননা পত্র তুলে দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্বাচিত ১২ শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে ২টি, ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে একটি, কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে একটি এবং হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে ২টি মনোনিত হয়।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে শিল্প মন্ত্রণালয়ের নানা উদ্যোগ
এই বছর হস্ত ও কারু শিল্প ক্যাটাগরিতে কোনো প্রতিষ্ঠান মনোনিত হয়নি।
বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড, দ্বিতীয় হয়েছে জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেড এবং তৃতীয় হয়েছে বিএসআরএম স্টিলস্ লিমিটেড।
মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে নিতা কোম্পানী লিমিটেড, দ্বিতীয় হয়েছে নোমান টেরি টাওয়াল মিলস্ লিমিটেড।
ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে হযরত আমানত শাহ স্পিনিং মিলস্ লিমিটেড, দ্বিতীয় হয়েছে বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড এবং তৃতীয় হয়েছে টেকনো মিডিয়া লিমিটেড।
মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়েছে, গ্রিন জেনেসিস ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড।
কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতেও শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়েছে সামসুন্নাহার টেক্সটাইল মিলস্।
হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং দ্বিতীয় হয়েছে সুপার স্টার ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাক্সেসরিজ লিমিটেড।
প্রথম পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ৩ লাখ টাকা ও ২৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট। দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা ও ২০ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট এবং তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা ও ১৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: দেশে লবণের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে: শিল্প মন্ত্রণালয়
স্বর্ণের ক্রেস্টগুলো ১৮ ক্যারেট মানের স্বর্ণ দ্বারা নির্মিত। এ ছাড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত সবাইকেই সম্মাননাপত্র প্রদান করা হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মো. মাহবুবুল আলম।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও স্বাগত বক্তব্য রাখবেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা।
ডাচাই বাছাইয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বার্ষিক টার্নওভার, আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদন, স্থানীয় কাঁচামাল ব্যবহার, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, সামাজিক দায়িত্ব পালন, নিষ্কণ্টক ভূমি ও ভূমির পরিকল্পিত ও দক্ষ ব্যবহার, পরিবেশ সংরক্ষণ প্রভৃতি ক্ষেত্রের অবদান বিবেচনা করা হয়েছে।
পুরস্কারের জন্য শিল্প উদ্যোক্তা বা শিল্প প্রতিষ্ঠান মনোনয়নে কয়েকটি নির্দিষ্ট যোগ্যতা ও শর্ত পূরণ আবশ্যক। এর মধ্যে শিল্প উদ্যোক্তা বা শিল্প প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে স্থাপিত হতে হবে। শিল্প ক্ষেত্রে আবেদনকারী শিল্পপতি বা উদ্যোক্তার সামগ্রিক অবদান সন্তোষজনক হতে হবে ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পূরণ বা আমদানি বিকল্প বা রপ্তানিমুখী পণ্য উৎপাদন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কার্যকর অবদান রাখতে হবে।
এ ছাড়া, নিয়মিত কর পরিশোধ করতে হবে। কোনো ফৌজদারি অপরাধের জন্য কোনো ট্রাইব্যুনাল বা আদালত কর্তৃক ৬ মাস বা তদধিক সময়ের জন্য কোনো উদ্যোক্তা বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিককে দণ্ডিত করলে এবং দণ্ডভোগের পর ন্যূনতম ২ বছর সময় অতিক্রান্ত না হলে কিংবা তার বিরুদ্ধে কোনো ট্রাইব্যুনাল বা আদালতে উক্তরূপ কোনো মামলা চলমান থাকলে, সেই শিল্প উদ্যোক্তা বা শিল্প প্রতিষ্ঠান মনোনয়নের জন্য বিবেচনা করা হয়নি। ঋণ খেলাপি, সরকারি বিল খেলাপি, কর খেলাপি, অর্থ পাচারকারী, সরকারি জায়গায় অবৈধ দখলদার ও পরিবেশ দূষণকারী শিল্প উদ্যোক্তা বা শিল্প প্রতিষ্ঠানও এই সম্মানজনক পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হয় না। উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কোনো প্রতিষ্ঠান একবার পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হলে, একই ক্যাটাগরিতে পরবর্তী তিন বছরের জন্য তার আবেদন বিবেচনা করা হয় না।
আরও পড়ুন: কেএসআরএমের শিপইয়ার্ড বন্ধ করে দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়