জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ক্ষতিকর জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ ও নবায়নযোগ্য বিনিয়োগের দাবিতে বরিশালে ব্যতিক্রমী নৌকা শোভাযাত্রা করেছেন মান্তা জনগোষ্ঠীর মানুষরা।
ন্যায্য রূপান্তরে সবুজ পৃথিবী ও টেকসই ভবিষ্যতের আহ্বানে পরিবেশবাদী সংগঠন ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস কর্মসূচির আয়োজন করে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি সপ্তাহের অংশ হিসেবে (২৬ মে থেকে ১ জুন) ‘চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ’র সহযোগিতায় ১২টি প্রতিষ্ঠান ও তরুণ সংগঠন সারা দেশে নানামুখী কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (৩১ মে) বরিশাল সদর উপজেলার টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়নের বুখাইনগর নদে এ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মান্তা ও তরুণ জলবায়ুকর্মীদের হাতে ও আয়োজনে অংশ নেওয়া নৌকাগুলোর ছাউনিতে থাকা ব্যানার-ফেস্টুনে জ্বালানি খাতের রূপান্তর, জ্বালানি মহাপরিকল্পনা সংশোধন, নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা ও বিভিন্ন জ্বালানি নীতির সমন্বয়, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের বিপদ, জলবায়ু অর্থায়ন ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নানা স্লোগান দেখা যায়।
এ আয়োজন দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করে।
মান্তা সম্প্রদায়ের সর্দার মো. জসিম বলেন, আমরা ঝড়, বন্যা মোকাবিলা করে নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। নদীতে আগের মতো মাছ পাই না আর দিন দিন যে হারে ঝড়-বন্যা বাড়ছে সেক্ষেত্রে সংসার পরিচালনা নিয়ে আরও বেশি চিন্তিত। রাতের আঁধারে বাচ্চাদের জন্য চিন্তিত থাকি যে নদীর মধ্যে পড়ে না যায়। আমরা তো আর বিদুৎ সুবিধা পেয়ে থাকি না। বিদ্যুতের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা থাকলে আবহাওয়া ও ঘূর্ণিঝড়ের খবরা খবর নিয়ে নদীতে চলাচল করতে পারতাম। এছাড়া আমাদের কিছু পরিবার সোলার প্যানেল ব্যবহার করে। আমরা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার না করেও এর নির্দোষ ভুক্তভোগী।
ইয়ুথনেটের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি আরিফুর রহমান শুভ বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ফলে প্রতিনিয়ত পৃথিবীর উষ্ণায়ন বেড়েই চলছে। যার ফলে ঋতুর অস্বাভাবিক পরিবর্তনসহ ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে এবং মান্তা সম্প্রদায়ের মতো সমাজে যারা পিছিয়ে রয়েছে তারা সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই সবার উচিত নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহারে উৎসাহিত হওয়া।
সারা বিশ্বে বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিত করতে ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আরও সোচ্চার হতে বিশ্বনেতাদের প্রতিও আহ্বান জানান জলবায়ু কর্মীরা।
এছাড়া প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখতে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন জীবাশ্ম জ্বালানিতে আর বিনিয়োগ না করে তা নিশ্চিত করতে উন্নত দেশগুলোর কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে জোর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তরুণ জলবায়ুকর্মীরা।
আরও পড়ুন: তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়: প্রতিমন্ত্রী