বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে কর্মরত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের ঐক্য সংগঠন বাংলাদেশি জার্নালিস্টস ইন ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া (বিজেআইএম) আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
প্রাথমিক কার্যক্রম শুরুর এক বছর পর শনিবার (২২ জুলাই) থেকে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার অন্যতম কণ্ঠস্বর হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করা, বাংলাদেশের সাংবাদিকতার পেশাগত উন্নতি সাধন এবং সাংবাদিকদের সামগ্রিক সামাজিক নিরাপত্তা ও ক্রান্তিকালে জরুরি আর্থিক সহায়তা নিশ্চিতে কাজ - এই তিনটি প্রাথমিক উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বিজেআইমের প্রতিষ্ঠা।
আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ এবং কার্যক্রম শুরুর এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বিজেআইএম ২২ জুলাই থেকে ধানমণ্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে ‘থার্ড আই: উইটনেসিং আওয়ার টাইম’- শিরোনামে একটি সপ্তাহব্যাপী চিত্রপ্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।
একই সঙ্গে 'থার্ড আই’ নামক একটি স্যুভেনির ম্যাগাজিন প্রকাশ করা হয়। ম্যাগাজিনটিতে সাংবাদিকতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ে বিভিন্ন দল, মত, সংগঠন ও সাংবাদিকদের লেখা ও ছবি থাকছে। প্রদর্শনীটি সকলের জন্য উন্মুক্ত।
আরও পড়ুন: উন্নত সাংবাদিকতার লক্ষ্যে ইএমকে-বিজেএস ফেলোশিপ চালু
এই আয়োজনের উদ্বোধন করেন ২০১৭ সালে রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণ হারানো সমকাল পত্রিকার সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুলের স্ত্রী নুরুন নাহার খাতুন ও তার দুই ছেলে-মেয়ে।
অনুষ্ঠানে নুরুন নাহার খাতুন আজও তার স্বামী হত্যার বিচার না পেয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি সমাজের প্রতি সাংবাদিক সমাজের দায়বদ্ধতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আপনারা আপনাদের কলম থামাবেন না।’
বিজেআইএমের আয়োজনের অংশ হিসেবে আগামী ২৫, ২৭, ২৮ ও ২৯ জুলাই আলিয়ঁস ফ্রঁসেজেই সমসাময়িক বিষয় নিয়ে চারটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে।
সেগুলোয় আলোচক হিসেবে থাকবেন বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মুন্নী সাহা, আল-মাসুম মোল্লা, ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হারুন অর রশীদ, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, সাইমুম রেজা তালুকদার, সম্পাদক নুরুল কবীর, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আয়েশা কবীর, বিকেএমইএ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম, অধ্যাপক শাহাব এনাম খানসহ আরও অনেকে।
আলোচনায় স্বতঃস্ফূর্ততা ও অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্যানেলগুলো অফ-দ্য-রেকর্ড রাখা হয়েছে। প্যানেলে অংশগ্রহণ করতে চাইলে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, নির্দেশনা বিজেআইএমের ফেসবুক পেইজে পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২৯ পেলেন সাংবাদিক-লেখক শাহনাজ মুন্নী
সাংবাদিকদের পেশাগত উন্নতির জন্য বিজেআইএম ইতোমধ্যে এডওয়ার্ড এম কেনেডি (ইএমকে) সেন্টারের ব্যক্তিপর্যায়ে স্মল গ্রান্ট ফাণ্ডের মাধ্যমে ৪০ জন পেশাদার সাংবাদিকের জন্য একটি ফেলোশিপ পরিচালনা করছে। সাংবাদিকতার জরুরি সাতটি বিষয় নিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক-প্রশিক্ষকরা সেখানে প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন।
বিজেআইএমের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হিসেবে রয়টার্সের সাংবাদিক স্যাম জাহান এবং সদস্য সচিব হিসেবে আল জাজিরার সাংবাদিক ফয়সাল মাহমুদ বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন।
পেশাদার সাংবাদিকদের এই সংগঠনটির নির্বাহী সদস্য হিসেবে আছেন ইরাবতী পত্রিকার মুক্তাদির রশিদ, ইপিএ ফটো সংস্থার মনিরুল আলম, গার্ডিয়ান পত্রিকার রেদওয়ান আহমেদ, ও বার্তা সংস্থা এএফপির মুহাম্মদ আলী মাজেদ।
সংগঠনটির অন্য সদস্যরা হলেন আল-জাজিরার তানভীর চৌধুরী, এএফপি ব্যুরো প্রধান শফিকুল আলম, নিউইয়র্ক টাইমসের সাইফ হাসনাত, এএফপি ফ্যাক্টচেক সম্পাদক কদরউদ্দিন শিশির, আল জাজিরা প্রযোজক সোলায়মান হোসেন শাওন, বেনার নিউজের শরীফ খিয়াম, এএফপি ফটোসাংবাদিক মুনীর উজ জামান, ডয়চে ভেলে একাডেমির প্রশিক্ষক মাকসুদা আজিজ, আনাদলু এজেন্সির নাজমুস সাকিব রাফসান, টিআরটি ওয়ার্ল্ড-এর মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, আরব নিউজের শিহাব সুমন, চায়না ডেইলি অনলাইনের উপ-সম্পাদক শামীম আশরাফ, ম্যাট্রিক্স ইমেজের ফটোসাংবাদিক আবীর আবদুল্লাহ, সোপা ইমেজ এর ফটোসাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেন, থার্ড পোলের রফিকুল ইসলাম মন্টু, ব্লুমবার্গ সাংবাদিক নাজমুল আহসান, জুমা প্রেসের ফটোসাংবাদিক কেএম আসাদ এবং এএফপিতে কাজ করা শামসুদ্দিন ইলিয়াস।
আরও পড়ুন: ইউনিসেফের মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেলেন ১১ সাংবাদিক