বাংলাদেশি দর্শনার্থীদের প্রবেশযোগ্যতা বাড়াতে এবং ওমরাহ যাত্রা সহজ করতে নুসুক প্ল্যাটফর্মের প্রস্তাব দিয়েছে সোদি আরব।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক রোড শোতে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী ড. তৌফিগ আল-রাবিয়াহ এই প্রস্তাব দেন।
২০২২ সালে চালু হওয়া নুসুক মক্কা ও মদিনায় হজ বা ওমরাহ’র ভ্রমণসূচি তৈরির জন্য প্রথমবারের মতো অফিসিয়াল পরিকল্পনা, বুকিং এবং অভিজ্ঞতার প্ল্যাটফর্ম।
নুসুকের মাধ্যমে সারা বিশ্বের ভ্রমণকারীরা সহজেই ই-ভিসার জন্য আবেদন করা থেকে শুরু করে হোটেল এবং ফ্লাইট বুকিং পর্যন্ত তাদের পুরো প্রক্রিয়াটি সংগঠিত করতে পারেন।
সৌদি সরকারের ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগ নুসুক বাংলাদেশিদের জন্য এর অফিসিয়াল ইন্টিগ্রেটেড ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের প্রচারে প্রথম রোড শো আয়োজন করে। এখানে নুসুক এপিএসি প্রেসিডেন্ট আলহাসান আলদাববাগসহ সৌদি প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে আধ্যাত্মিক ও পর্যটন উদ্দেশ্যে সৌদি আরব ভ্রমণের পরিকল্পনা করা হয়।
রোড শোতে ওমরাহ কোম্পানি, ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্সি, ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন অংশ নেয়।
আরও পড়ুন: ব্রিকস জোটে যোগ দিতে যাচ্ছে ইরান, সৌদি আরব ও মিশরসহ ৬ দেশ
পিলগ্রিম এক্সপেরিয়েন্স প্রোগ্রামের চেয়ারম্যান ড. তৌফিগ আল-রাবিয়াহ বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক সময়ের সঙ্গে পরীক্ষিত ও প্রমাণিত হয়েছে। আমরা একে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই এবং দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, দুটি পবিত্র মসজিদের রক্ষক হিসেবে সারা বিশ্ব থেকে আল্লাহর মেহমানদের স্বাগত জানাতে পারা আমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মান ও সৌভাগ্যের বিষয়।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি আমাদের পবিত্র দায়িত্ব এবং তীর্থযাত্রীদের আধ্যাত্মিক যাত্রা নিরাপদ, সহজ, ঝামেলামুক্ত এবং আরামদায়ক করার জন্য আমরা সম্ভাব্য সবকিছু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা ক্রমাগত আপনাদের তীর্থযাত্রার অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করার জন্য কাজ করছি।’
নুসুকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফাহাদ হামিদাদ্দিন বলেন, আন্তঃসরকার ও বাণিজ্যিক অংশীদারের সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশে এই রোড শো প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে। যা দেশটির ভ্রমণকারীদের জন্য অসাধারণ সম্ভাবনা উন্মোচনে আমাদের সাহায্য করেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আকাশ সীমা সুযোগ নিয়ে সৌদি মন্ত্রীর বক্তব্য
তিনি বলেন, এ বছর সৌদি আরব এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৩২ হাজারের বেশি বাংলাদেশি ভ্রমণকারীকে স্বাগত জানিয়েছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এ সংখ্যা ৩০ লাখে উন্নীত করার প্রত্যাশায় রয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আমরা আমাদের মূল বাণিজ্য অংশীদারদের একসঙ্গে কাজ করতে এবং আমাদের ভাই ও বোনদের ওমরাহ স্বপ্ন এবং আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির সুবিধার্থে তাদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।’
নুসুক এপিএসি সভাপতি আলহাসান আলদাববাগ বলেন, ‘nusuk.sa এর মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য বিশেষত ওমরাহ যাত্রীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্য এবং প্রবেশযোগ্যতা বৃদ্ধি করা।’
সৌদি আরব এই মিশনকে এগিয়ে নিতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- মুসলিম দর্শনার্থীরা অনলাইনে ওমরাহ ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভিসা প্রক্রিয়াকে সহজতর করেছি এবং ইউকে/ ইউএস/শেনজেন পাসপোর্টধারীদের ভিসা-অন-অ্যারাইভাল পরিষেবা দিচ্ছি, যাতে তারা অবাধে ওমরাহ পালন করতে পারে এবং দেশের অনন্য সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য অন্বেষণ করতে পারে।’
আলহাসান আলদাববাগ আরও বলেন, সৌদি আরব ওমরাহ ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে ৯০ দিন করেছে। ওমরাহ যাত্রীদের জন্য বীমা খরচ কমিয়েছে এবং যে কোনো ধরনের ভিসার সঙ্গে জমজমের পানি সহজলভ্য করেছে। বাংলাদেশ ৯৬ ঘণ্টার স্টপওভার ভিসার জন্যও যোগ্য। এর মাধ্যমে মুসলমানরা ভ্রমণ বিরতি হিসেবে ওমরাহ পালন করতে পারবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সৌদির সমর্থন থাকবে: সৌদি মন্ত্রী