বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, এ বছর ভারতের জি-২০ সভাপতিত্বে অতিথি দেশ হিসেবে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আর এ আমন্ত্রণ জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের 'উন্নয়নমূলক অভিজ্ঞতা ও ক্রমবর্ধমান সক্ষমতা' আলোচনা সমৃদ্ধ করবে বলে ভারতের বিশ্বাসকে জোরদার করেছে।
তিনি বলেন, যা ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি ভারতের গুরুত্বকেও প্রতিফলিত করে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে হাইকমিশনার ভার্মা ভারতের সভাপতিত্বে ৯-১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ উপলক্ষে 'জি-২০ সামিট: ঢাকা টু নিউ দিল্লি' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বাংলাদেশের অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ ও জি-২০ শেরপা মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, কূটনৈতিক কর্পসের সদস্য এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশের অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে ভারতের সহায়তাপুষ্ট ৩ মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন: হাইকমিশনার
হাইকমিশনার ভার্মা ভারতের প্রতিবেশি ও বিশেষ বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশকে সারা বছর ধরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে জি-২০ আলোচনায় সক্রিয়ভাবে যোগদান ও সমৃদ্ধ করার জন্য এবং ভারতের জি-২০ সভাপতিত্বকে সফল করতে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ভারতের জি-২০ সভাপতিত্ব এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন কোভিড-১৯ মহামারির কবল থেকে বৈশ্বিক পুনরুদ্ধার এবং অগণিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্ন, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা ঝুঁকি, ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, মুদ্রাস্ফীতি ও ক্রমবর্ধমান ঋণ সংকট ইত্যাদি। যার ফলেই অর্থনৈতিক মন্দা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
জি-২০ সভাপতিত্বে এই কঠিন সময়ে এজেন্ডা নির্ধারণ এবং সম্মিলিত কল্যাণের জন্য বৈশ্বিক প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের ক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি।
হাইকমিশনার ভার্মা উল্লেখ করেন, ভারত জি-২০ এর অগ্রাধিকার এবং আলোচনার মধ্যে গ্লোবাল সাউথের আকাঙ্ক্ষা এবং দৃষ্টিভঙ্গি আনতে বিশেষ প্রচেষ্টা চালিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারত পৃথিবীর পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় ঠিকানা: ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার
তিনি এ বছর জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণকে এ লক্ষ্যে মূল্যবান অবদান হিসেবে বর্ণনা করেন।
হাইকমিশনার আরও বলেন, জি-২০ প্রেসিডেন্সির সময় ভারত অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সবুজ প্রবৃদ্ধি অর্জন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির 'পরিবেশের জন্য জীবনধারা', দুর্যোগ স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তোলা, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের মাধ্যমে জলবায়ু পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে 'এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ' ভিশনের ওপর ভিত্তি করে বৈশ্বিক এজেন্ডা গঠনের চেষ্টা করেছে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই ধারণাগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে বাংলাদেশের সমর্থন চায় ভারত।
অনুষ্ঠানে কূটনীতিক, কর্মকর্তা এবং বিশেষজ্ঞ কর্তৃক ভারতের জি-২০ প্রেসিডেন্সির তিনটি প্রধান অগ্রাধিকার ক্ষেত্র: ওমেন-লেড ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারস এবং লাইফস্টাইল ফর এনভায়রনমেন্ট (এলআইএফই) এবং গ্রিন ডেভেলপমেন্ট-এর ওপর প্যানেল আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ভারত-বাংলাদেশের বিশেষ সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে: হাইকমিশনার