ভারতের নয়াদিল্লিতে তিনদিনের সফর শেষে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।
এক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার সন্ধ্যায় নগরীর একটি হোটেলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলমের সাথে বিগানের বৈঠক করার কথা রয়েছে।
এছাড়া তিনি বৃহস্পতিবার সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সাথে বৈঠকের পরে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করবেন বলে ইউএনবিকে জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
আলোচনার সময়, বিগান বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্বের বিষয়টি পুনরায় নিশ্চিত করবেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের অফিস থেকে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরে কোভিড-১৯ মোকাবিলা কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সহযোগিতার পাশাপাশি ‘ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস)’ সম্পর্কিত দুই দেশের অভিন্ন লক্ষ্য নিয়েও আলোচনা হবে।
এর আগে সোমবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সাথে সাক্ষাত করেছেন বিগান।
বাংলাদেশের অগ্রাধিকার
মার্কিন এই আধিকারিকের ঢাকা সফরের সময় বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ইস্যুটি উত্থাপন করবে এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য আরও শক্তিশালী বৈশ্বিক সমর্থন চাইবে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘এটি একটি বৈশ্বিক দায়িত্ব। রোহিঙ্গাদের অবশ্যই মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা বাংলাদেশের একার দায়িত্ব নয়, এটি বৈশ্বিক দায়িত্ব এবং বাংলাদেশ বিষয়টি উত্থাপন করবে।’
বাংলাদেশ মানবিক সহায়তায় আগ্রহী নয় উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, ‘এটি একটি অংশ তবে মূল অংশ নয়। রোহিঙ্গাদের অবশ্যই মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে। আমাদের জন্য এটিই মূল বিষয়।’
মিয়ানমার সরকারের প্রতি রোহিঙ্গাদের ‘আস্থার অভাব’ থাকায় ২০১৮ সালের নভেম্বরে এবং ২০১৯ সালের আগস্টে দু’বার প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর প্রত্যাবাসন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার।
আইপিএস এবং বাংলাদেশ
সোমবার ড. মোমেন বলেছেন, মার্কিন পক্ষ ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস) নিয়ে কথা বলবে এবং বাংলাদেশের কোনো সমস্যা নেই।
তিনি জানান, আলোচনার সময় অবকাঠামো উন্নয়ন ও ভিসা সংক্রান্ত ক্ষেত্রেও বিনিয়োগ চাইবে বাংলাদেশ।
ড. মোমেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের আইপিএস’র বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই, তবে আইপিএস কার্যকর করতে এখানে অবকাঠামো উন্নয়নে অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের এগিয়ে আসতে হবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যদি সত্যিই বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় তাহলে আগামী তিন বছরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্যের (আরএমজি) শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়ে সহায়তা করতে পারে।
আগামী ১৬ অক্টোবর ঢাকা ত্যাগ করবেন মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন ই বিগান।