বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উপকমিটির সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠান হবে পুরোনো বিমানবন্দরের প্যারেড স্কয়ারে। অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে উপকমিটির দ্বিতীয় সভা হয়েছে। ১৭ মার্চ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লক্ষাধিক অতিথি আসবেন। সেদিন ট্রাফিক রুট কী হবে তা পরে জানিয়ে দেয়া হবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, দেশি-বিদেশি অতিথি ও কূটনৈতিকদের আসনগ্রহণসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আমাদের দেশের ভিআইপিদের জন্যও সে ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। প্রতি স্তরে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফায়ার সার্ভিস ও মেডিকেল টিম সব সময় প্রস্তুত থাকবে। সারা দেশব্যাপী সিটি করপোরেশন, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। নিরাপত্তা উপকমিটি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখনই প্রয়োজন হবে সভা করবে।’
‘নাশকতা প্রতিরোধ ও সোশাল মিডিয়ায় গুজবকারীদের দিকে নজর থাকবে। এমন কিছু পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ৩টা ১৫ মিনিটের মধ্যে অনুষ্ঠানস্থলের সব গেট বন্ধ হয়ে যাবে। সেদিন সকাল ১১টার মধ্যে ঢাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনুষ্ঠান শেষ করবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে অনুরোধ জানানো হবে,’ যোগ করেন তিনি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনের প্রতিবাদ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেটাই আমাদের বক্তব্য। নতুন করে আমাদের কিছু বলার নেই। কোনও ব্যক্তি কী বলল বা কী করল সেটি দেখার বিষয় না। মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের যে সাপোর্ট দিয়েছে, সেটি সব সময় স্মরণ করি। আমরা মনে করি তিনি আসবেন। আমরা চলব আমাদের মতো করে। আমরা অসাম্প্রদায়িক দেশ। সেভাবেই আমরা চলব।’
মুজিব বর্ষ পালন উপলক্ষে নাশকতার কোনও আশঙ্কা নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থাও এ বিষয়ে এমন কিছু জানায়নি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে কোনও নাশকতা হবে সেটি আমরা ভাবতেই পারি না।’
করোনাভাইরাসের কারণে অনুষ্ঠানে কোনও বাধা নিষেধ থাকবে কি না জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করিনি। আমন্ত্রিতরা সবাই আসবেন বলে মনে করছি। করোনা নিয়ে কোনও জটিলতা হলে আপনারা দেখবেন। আর এ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তায় যত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য প্রয়োজন তাই আমরা রাখব। ১০ হাজার লাগলে তাই থাকবে, বেশি লাগলে বেশি থাকবে। আমরা কোনও অনিশ্চয়তা রাখব না।’
এ সময় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছেন ও বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকসহ যারা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে আসবেন তাদের বিষয়ে কাজ চলছে। কিছু দিনের মধ্যে চূড়ান্তভাবে কারা আসছে জানাতে পারব। তবে কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান আসবেন। তাদের সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এটি বড় আকারের অনুষ্ঠান। এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হাজার খানেক পারফর্মার থাকবে। বিশাল আয়োজনে বিপুল সংখ্যক অতিথি আসবেন, দর্শকরা থাকবেন। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের দেখতে হবে।’
বিএনপিকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি একটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সবাই এতে অংশ নেবেন বলে আশা করছি।’