রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আট মিলিয়ন টন কয়লা সরবরাহের চুক্তি জিতেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, তিনটি কোম্পানি কয়লা সরবরাহের জন্য দরপত্র জমা দিয়েছে।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানির(প্রা.) (বিআইএফপিসিএল) এক শীর্ষ কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছে, ‘আইসিআই-২-এর সূচকের অধীনে বিদ্যুত কেন্দ্রের জেটি পর্যন্ত পণ্য পৌঁছানোর জন্য বসুন্ধরা লিমিটেড সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে প্রতি মেট্রিক টন কয়লা ২৩২ দশমিক ৩৩ ডলার প্রস্তাব করে।
বিআইএফপিসিএল কয়েক মাস আগে দরপত্র আহ্বান করেছিল এবং তিনটি কোম্পানি-স্থানীয় বসুন্ধরা, আকিজ এবং দুবাই-ভিত্তিক কমোডিটি ফার্স্ট-- কয়লা সরবরাহ চুক্তি জেতার জন্য তাদের নিজ নিজ দরপত্র জমা দেয়।
সোমবার দরপত্রগুলো খোলা হয় এবং বসুন্ধরা প্রথম সর্বনিম্ন মেট্রিক টন কয়লার মূল্য ২৩২ দশমিক ৩৩ প্রস্তাব করে এবং কমোডিটি ফার্স্ট প্রতি মেট্রিক টন ২৩৪ ডলার প্রস্তাব করে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন হয় এবং আকিজ গ্রুপ প্রতি মেট্রিক টন ২৮২ ডলার মূল্যে কয়লা সরবরাহের প্রস্তাব দেয়।
এর আগে, বসুন্ধরা গ্রুপ দক্ষিণ বাগেরহাট জেলার রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের (২*৬৬০ মেগাওয়াট) জন্য সীমিত তিন লাখ মেট্রিক টন কয়লা সরবরাহের জন্য প্রথম দরপত্র জিতেছিল।
সে সময় যৌথ উদ্যোগে দুটি সহযোগী সংস্থা বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড(বিএফবিআইএল) এবং বসুন্ধরা মাল্টি ট্রেডিং লিমিটেড (বিএমটিএল)-বিআইএফপিসিএল-এর আন্তর্জাতিক টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে টেন্ডার জিতেছিল।
মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট, রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্ট নামে পরিচিত, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (বিআএফপিসিএল) বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) এবং ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন (এনটিপিসি) এর মধ্যে ৫০:৫০ যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হয়েছিল। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করে।
যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ সরকারের বিপিডিবি এবং ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে এনটিপিসি।
আরও পড়ুন: কয়লার অভাবে ৮ দিন ধরে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ
২০১০ সালে ঢাকা ও দিল্লি যৌথ উদ্যোগে প্ল্যান্টটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্ল্যান্টটি নির্মাণে প্রায় ১৩ বছর সময় লেগেছিল।
বিপিডিবি প্ল্যান্টের পুরো আউটপুট ২৫ বছরের জ্বালানি ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) অধীনে ক্রয় করবে। কিন্তু বিপিডিবি এখনও তার বাণিজ্যিক কার্যক্রমের তারিখ (সিওডি) নিশ্চিত করেনি।
চুক্তি অনুযায়ী বিপিডিবি তার বিরতিহীন কর্মক্ষমতা নিয়ে সন্তুষ্ট হলেই সিওডি শুরু হবে।
বিআইএফপিসিএলের প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা (সিপিও) জিয়াউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান যে আট মিলিয়ন মেট্রিক টন কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চালু থাকা দুটি ইউনিটের তিন বছরের চাহিদা পূরণ করবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে বা মোংলা বন্দরে সম্ভাব্য সুবিধার ওপর নির্ভর করে কয়লা আনলোড করা হবে এবং তারপর পাঁচ হাজার মেট্রিক টন থেকে তিন হাজার মেট্রিক টন ক্ষমতা সম্পন্ন ছোট জাহাজের মাধ্যমে প্ল্যান্টের জেটিতে নিয়ে যাওয়া হবে।
ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানি করা হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
বসুন্ধরা গ্রুপের মতে, স্থানীয় সংস্থা, বসুন্ধরা মাল্টি ট্রেডিং সরকারি-বেসরকারি প্রকল্পের জন্য উচ্চমানের কয়লা এবং পাথর সরবরাহের জন্য ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করে।
বসুন্ধরা ওয়েবসাইটে বলেছে, কোম্পানিটি তার পরিষেবা এবং পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে একটি শক্তিশালী সাপ্লাই চেইন নেটওয়ার্ক স্থাপনের মাধ্যমে এই খাতে একটি নেতৃস্থানীয় উদ্যোগতায় পরিণত হয়েছে।