কোনো নীতিমালা ছাড়াই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে ক্ষমা করে দেওয়ার ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
রিটে নীতিমালা ছাড়া সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করার ক্ষমতা কেন অসাংবিধানিক হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারিরও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা কমানোর ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত
পাশপাশি সংবিধানের এই বিধান প্রয়োগে নীতিমালা প্রণয়নে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি, অসাংবিধানিক এবং সংবিধানের ৭, ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, জানতে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে রিটে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইসরাত হাসান সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট করেন।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামী সপ্তাহে রিট আবেদনটির শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবেদনকারী।
রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইনসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পার্লামেন্ট সচিব ও রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের প্রদত্ত যেকোনো দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করার এবং যেকোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা কমানোর ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করার এই ক্ষমতা অবাধ, যার কোনো নীতিমালা নেই। কে, কিসের ভিত্তিতে ক্ষমা পাচ্ছেন, তার কোনো নীতিমালা নেই, যা সংবিধানের ৭, ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আরও পড়ুন: আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠনের আদেশ হাইকোর্টের
ইতোমধ্যেই এই ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে অনেক সাজাপ্রাপ্ত আসামি ক্ষমা পেয়েছেন। যার মধ্যে সাবেক সেনাপ্রধানের ভাই জোসেফ, আসলাম ফকির অন্যতম। রাজনৈতিক বিবেচনায় অনেক সময় দণ্ডিতদের সাজা মওকুফ করতে দেখা গেছে, যা ক্ষমতার অপব্যবহার।
অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, বছরের পর বছর রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করার ক্ষমতার সর্বোচ্চ অপব্যবহার হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে রাষ্ট্রপতি ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাজাপ্রাপ্ত খুনিদের ক্ষমা করেছেন। এর ফলে, সাধারণ জনমনে ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে আশঙ্কার তৈরি হয়। ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। এই ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে, নীতিমালা প্রণয়ন করা আবশ্যক।