বৃহস্পতিবার সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পরিবার তার লাশ গ্রহণ করে বলে জানিয়েছেন ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরীফুল হাসান।
আবিরনের পরিবার বলছে, সৌদিতে দুই বছর ধরে নানা নির্যাতনের শিকার হওয়া আবিরন ১৭ জুলাই মারা যান। এ খবর তার পরিবার জানতে পারে ৫১ দিন পর।
সৌদি থেকে দেয়া আবিরনের মৃত্যু সনদে মারা যাওয়ার কারণ লেখা আছে হত্যা। তবে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি ফাতেমা এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসেস (আরএল-১৩২১) পরিবারকে জানিয়েছিল যে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান।
ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সহযোগিতায় দূতাবাস ও ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে আবিরনের লাশ দেশে ফিরেছে।
বিমানবন্দরে লাশ নেয়ার পর কাঁদতে কাঁদতে তার ছোট বোন রেশমা জানান, শুরুতে সৌদি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও পরে তা বাতিল করেছিলেন আবিরন। কিন্তু রিক্রুটিং এজেন্সির চাপ ও হুমকির মুখে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে তিনি সৌদি যেতে বাধ্য হন। সেখানে গিয়ে নিয়োগকর্তার নির্মম নির্যাতনের শিকার হন তিনি। সমস্যার কথা নিয়ে এজেন্সি ও দালালের কাছে গেলে তারা বিভিন্নভাবে হুমকি দেয় পরিবারকে। বলে, এমন ব্যবস্থা নেব যে আবিরন আর কথাও বলবে না কোনো দিন। এজেন্সির হুমকির মুখে পরিবারও ছিল অসহায়।
আবিরনের পরিবারের সদস্যরা জানান, তার নিয়োগকর্তা নির্মম নির্যাতন চালিয়ে তাকে মেরে ফেলেছেন। এমনকি দুই বছরে কোনো বেতনও তাকে দেয়া হয়নি। মৃত্যুর পর তাদের জানানোও হয়নি।
ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরীফুল হাসান বলেন, ‘আবিরনের পরিবার আমাদের জানায় যে নিয়োগকর্তা তাকে হত্যা করেছে। কিন্তু লাশটি তারা আনতে পারছিলেন না। আমরা যেন সহায়তা করি। তিনি যে নিয়োগকর্তার বাড়িতে ছিলেন সেখানে শুরু থেকেই নির্যাতিত হচ্ছিলেন। বারবার বলার পরেও কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
তিনি জানান, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ১১৯ নারীসহ ২,৯০০ প্রবাসীর লাশ দেশে ফিরেছে।