শনিবার সকালে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রীর শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এসময় দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর সম্মান জানিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন আবদুল হামিদ ও শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল এ সময় শহীদদের প্রতি সশস্ত্র সালাম জানায়। বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের খোঁজখবর নেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী সেখানে কিছুসময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে আওয়ামী লীগের প্রধান হিসেবে দলীর কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শেখ হাসিনা।
পরাজয় নিশ্চিত জেনে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে বাংলাদেশকে মেধাশূণ্য করতে প্রখ্যাত শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ দুই শতাধিক মেধাবী বাঙালিকে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী।
মেধাবী বাঙালিদের বাড়ি থেকে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে ধরে নিয়ে নৃশংসভাবে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়। পরে তাদের মরদেহ রাজধানীর রায়েরবাজার ও মিরপুরসহ বিভিন্ন বধ্যভূমিতে ফেলে দেয়া হয়।
পাকিস্তানি বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ঠাণ্ডা মাথায় এ গণহত্যা চালায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ যাতে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।
জাতির মেধাবী সন্তানদের লাশ পরে মিরপুর ও রায়েরবাজারসহ অন্যান্য স্থানে পাওয়া যায়।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, ড. ডালিম চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, ড. ফজলে রাব্বি, সিরাজুদ্দিন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, অধ্যাপক জিসি দেব, জেসি গুহ ঠাকুর্তা, অধ্যাপক সান্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেব, নিজামুদ্দিন আহমেদ, এসএ মান্নান, এএনএম গোলাম মুস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক ও সেলিনা পারভিন।
এরপর থেকে দিনটি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।