সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস পালিত হয়েছে। এতে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ হয়েছে বিভিন্ন মহলে।
সোমবার পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শোক দিবসের অংশ হিসেবে জাতীয় পতাকা উত্তোলণ ও কালো ব্যাজ ধারণ শেষে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণের পর শোক র্যালির আয়োজন করা হয়। পুস্পস্তবক অর্পণে অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের উপস্থিতি দেখা মিললেও শোকর্যালিতে বেশিরভাগ জুড়েই ছিল বিএনসিসির উপস্থিতি। অধিকাংশ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে দেখা যায়নি, ছিল না শিক্ষক নেতাদের একাংশ। শাবিপ্রবিতে মূলত জাতীয় শোক দিবস পালন করে থাকে আওয়ামী সমর্থিত দু’টি শিক্ষক প্যানেল। প্রতি বছর যথাযথ মর্যাদায় জাতীয় শোকদিবস পালন করে থাকেন উভয় প্যানেলের শিক্ষকেরা। কিন্তু এ বছর জাতীয় শোক দিবসের শোক র্যালি ও শোকসভায় শিক্ষকদের অনুপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।
আরও পড়ুন: ‘ঝাড়ুর লাঠি’তে পতাকা: পাকিস্তানি ‘হাবিব ব্যাংকে’র বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগ
দিবসটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চা ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ প্যানেলের শিক্ষকদের সকল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেলেও আওয়ামী সমর্থিত শিক্ষক প্যানেল ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদ’ শিক্ষকদের অধিকাংশই ছিল অনুপস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শোক র্যালি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পরিবর্তে যেমন বিএনসিসির দখলে ছিল ঠিক শোকসভায় শিক্ষক কর্মকর্তাদের পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটরিয়াম ছিল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দখলে।
‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’র আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রোগ্রামে (ম্যূরালে পুস্পস্তবক) অংশগ্রহণ করেছি এবং নিজেদের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছি।
শোকর্যালি ও শোকসভায় অনুপস্থিতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুপুরের ট্রেনে আমি ঢাকায় যাচ্ছি। এজন্য পুস্পস্তবকের পর সবাইকে বলে চলে আসা হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষকদের মাঝে নানা রকমের ব্যাপার-ক্ষোভ আছে সেইসব বলাও যায় না। আমরা আমাদের মতো অবজার্ব করলাম।
দিবসটিতে প্রশাসন কর্তৃক জানানো হয়েছে কিনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রশাসন থেকে একটি চিঠি ইস্যু করে সবাইকে অংশগ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। আমরা ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ নিজেদের প্রোগ্রাম নিজেরাই করি।
আরও পড়ুন: সারাদেশে জাতীয় শোক দিবস পালন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিনিয়র অধ্যাপক বলেন, শাবিপ্রবিতে দুই আওয়ামী সমর্থিত শিক্ষকদের মধ্যে প্রতিযোগীতা সবসময় কাজ করে। পূর্ববর্তী বছরগুলোতে দুই শিক্ষক গ্রুপ একসঙ্গে এই দিবসগুলো পালন করে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কাজে উপাচার্য ঢাকায় অবস্থান করায় জাতীয় শোক দিবসে একটি পক্ষ ম্যুরালে ফুল দিয়ে বাকি আনুষ্ঠানিকতাগুলোতে আগ্রহ দেখায়নি। তবে উচিৎ ছিল বঙ্গবন্ধু ইস্যুতে সবাই একত্রে এই দিবসটি পালন করা।
শাবিপ্রবিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী পালন করা হয়।