বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী অধ্যাপক সমরজিৎ রায় চৌধুরীর সৎকার সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার রাজধানীর সবুজবাগ কালিবাড়ি শশ্মানে তার শেষ যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। রবিবার ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সমরজিৎ রায় চৌধুরী।
শেষ শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত তার মরদেহ রাখার পর সবুজবাগের কালীবাড়ি শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রায়ের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হয়, যেখানে একুশে পদক বিজয়ী শিল্পীর শেষ দেখা দেখতে আসেন অনেক বিশিষ্ট শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।
অভিনেতা ও নাট্যকার রামেন্দু মজুমদার, শিল্পী হাশেম খান, গোলাম মোস্তফা, কামাল পাশা চৌধুরীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ অনেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হন।
আরও পড়ুন: ‘বান্ধবী’র সঙ্গে দেখা করতে বরিশালে ভারতীয় নৃত্যশিল্পী, হতাশ হয়ে দেশে ফিরলেন
সমরজিৎ রায়ের ছেলে সুরজিৎ রায় চৌধুরী বলেন, ‘তিনি শুধু একজন শিক্ষকই ছিলেন না, একজন বাবাও ছিলেন। আমার বাবা আমার বন্ধু ছিলেন। আমার প্রতিটি সমস্যার সমাধান ছিলেন বাবা। আমার বাবা শেষবারের মতো আমার জন্য দোয়াও করেছিলেন।’
রায়ের মরদেহ শহীদ মিনারে নেয়ার আগে তার প্রায় ছয় দশকের কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে সহকর্মী, ছাত্র এবং বন্ধুদের শ্রদ্ধা জানাতে সকাল ১০টার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও চারুকলা অনুষদের ডিন, ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য প্রশাসনিক সংস্থা এবং সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ অধ্যাপক সমরজিৎ রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যান।
ঢাবি উপাচার্য মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, ‘অধ্যাপক সমরজিৎ রায়ের মৃত্যুতে জাতি একজন বরেণ্য শিল্পীকে হারালো। তিনি ছিলেন দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও বিখ্যাত শিল্পী।’
আরও পড়ুন: চিত্রশিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী মারা গেছেন
চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, ‘অধ্যাপক সমরজিৎ রায় তার পুরো জীবন এই অনুষদেই কাটিয়েছেন বলেই আমরা তাকে অনুষদ থেকে অবসর নেয়ার পর সম্মানসূচক অধ্যাপক হিসেবে পেতে পেরেছি। তার মৃত্যু আমাদের জন্য এক বিরাট ক্ষতি। তার মৃত্যুতে শুধু চারুকলা অনুষদ নয়, দেশ একটি অপূরণীয় সম্পদ হারালো।’
সমরজিৎ রায় চৌধুরী ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে গ্রাফিক ডিজাইন ডিগ্রি অর্জন করেন এবং তারপরে একজন অনুষদ সদস্য হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন।
শিল্পকলায় অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৪ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন।
আরও পড়ুন: চিত্রশিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক