মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক ‘সোনার বাংলা’ গড়ার শপথ নিয়ে ৫১তম বিজয় দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও নতুন শক্তিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে ৫০ বছর আগে মুক্তিযুদ্ধে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেন সর্বস্তরের মানুষ।

৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বরের গৌরবময় দিনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।  ১৯৭১ সালের এই দিনেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে।

মুক্তিযুদ্ধে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করেছে।

আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় এবারের বিজয় দিবসের বিশেষ তাৎপর্যও রয়েছে।

৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হয়।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বৃহস্পতিবার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ দিন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপ্রধান। 

পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এছাড়া রাষ্ট্রপতি স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে রাখা দর্শনার্থী বইয়েও স্বাক্ষর করেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি সকাল ৬টা ৩৪ মিনিটে দেশের মহান বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের মানুষ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা নিবেদন

দিবসটি উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ১০টায় তেজগাঁও জাতীয় প্যারেড স্কোয়ারে বর্ণাঢ্য এক সামরিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে অভিবাদন গ্রহণ ও কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করবেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। 

মুক্তিযোদ্ধা, সশস্ত্র বাহিনী ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সদস্যরা কুচকাওয়াজে  অংশ নেয়।

পরবর্তীতে ৫১তম বিজয় দিবস উপলক্ষে গণভবনে একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ পর্যটনের ব্র্যান্ড নাম ‘মুজিব’স বাংলাদেশ’ লেখা সম্মিলিত একটি লোগো উন্মোচন এবং জন্মশতবর্ষ ও সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেন।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীসহ বিজয় দিবস উপলক্ষে ‘গৌরবময় বিজয়ের সর্বশ্রেষ্ঠ নায়ক’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এক অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে।

দুই দিনব্যাপী এ বিশেষ অনুষ্ঠান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ উদ্বোধন করেন।

সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির হিসেবে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভারতের রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা নিবেদন