গণতন্ত্রকে আরও ফলপ্রসূ করতে সরকারি কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক সুশাসন প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘সরকারি সব কাজে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে গণতন্ত্রকে আরও ফলপ্রসূ করা প্রয়োজন...।’
রবিবার একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশনের ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন,গত দেড় দশকে সরকারের উন্নয়ন কাজ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যয় বেড়েছে। সরকারি তহবিলের অপব্যবহার ঠেকাতে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করারও আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘সময়বদ্ধ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে প্রকল্পের শতভাগ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’
জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎস হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি সাংসদদের সব কিছুর ঊর্ধ্বে জনস্বার্থকে রাখার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: তরুণদের মানবতা ও জনকল্যাণে কাজ করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের নিরাপদ, সুখী, সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেয়া উচিত।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কারণে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।
আবদুল হামিদ বলেন, মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হওয়ার পাশাপাশি মানুষ যাতে তাদের ধর্ম পালন করতে পারে সেদিকে সরকার সচেষ্ট রয়েছে।
এ সময় ধর্মের নামে কোনো ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী যেন দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলেন তিনি।
ভাষণে রাষ্ট্রপ্রধান করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকারের সাফল্য এবং পরিবহন, অবকাঠামো, অর্থনীতি, শিক্ষা, কৃষি, সামাজিক নিরাপত্তা, গ্রামীণ উন্নয়ন ও পরিবেশসহ বিভিন্ন খাতে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের কথাও উল্লেখ করেন।
এর আগে রবিবার বিকাল ৪টায় একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশন শুরু হয়। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করছেন। এটি ২০২২ সালের প্রথম অধিবেশন এবং শীতকালীন অধিবেশন নামেও পরিচিত।
সংবিধানের ৭৩ (২) ধারা অনুযায়ী, প্রত্যেক বছরের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণ দেবেন। এ জন্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০২২ সালের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সংলাপ: ইসি গঠনে আইন চায় ওয়ার্কার্স পার্টি
পরে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব এনে সাধারণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সংসদে প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার আগে সংসদ সদস্যদের আলোচনায় অংশ নেয়ার কথা। এর আগে রাষ্ট্রপতির ভাষণের অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার এবারের সংসদের ষোড়শ অধিবেশনের জন্য পাঁচ সদস্যের প্যানেল অব চেয়ারম্যান মনোনীত করেন।
প্যানেল সদস্যরা হলেন-মো. আব্দুস শহীদ (মৌলভীবাজার-৪), এ বি তাজুল ইসলাম (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬), মো. মুজিবুল হক (কিশোরগঞ্জ-৩), মঞ্জুর হোসেন (ফরিদপুর-১) ও পারভীন হক সিকদার (মহিলা আসন-৩৯)।
তারা স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে কালানুক্রমিকভাবে সংসদের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
সংসদ সচিবালয় অনুযায়ী, করোনার মধ্যে অধিবেশন হওয়ায় সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হবে।
এর আগে গত বছরের ২৮ নভেম্বর জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশন শেষ হয়েছিল।
গত ১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংবিধানের ৭২ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাঁর ওপর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বর্তমান সংসদের ষোড়শ অধিবেশন আহ্বান করেন।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে ঘরে বসে না থেকে মাঠে নামার আহ্বান রাষ্ট্রপতির