প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেছেন, সাক্ষরতা ও উন্নয়ন নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। এর একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটি চিন্তা করা যায় না।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের নানামুখী কর্মসূচির কারণে আগের তুলনায় সাক্ষরতার হার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এখনও প্রায় ২৩ দশমিক ২ শতাংশ জনগোষ্ঠী নিরক্ষর। শতভাগ জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরজ্ঞান দিতে বর্তমান সরকারের নিরলস প্রয়াস অব্যাহত আছে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাক্ষরতা অর্জনের মাধ্যমে মানুষের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি পায়, মানুষ সচেতন হয় স্বনির্ভর হয় দেশে জন্মহার এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস পায়, স্বাস্থ্য সূচকের উন্নয়ন ঘটে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটে। সর্বোপরি পরিবার, একটি সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে সাক্ষরতার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ ‘রিপোর্ট অন বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্টাটিস্টিক ২০২২’- অনুসারে সাত বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সের বর্তমান সাক্ষরতার হার ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের গেজেট ছয় মাসের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী
জাকির হোসেন বলেন, শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত জনগোষ্ঠিকে সাক্ষরজ্ঞানদান, জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকায়ন, দক্ষ মানবসম্পদে পরিণতকরণ, আত্ম-কর্মসংস্থানের যোগ্যতাসৃষ্টিকরণ এবং বিদ্যালয় বহির্ভূত ও ঝরেপড়া শিশুদের শিক্ষার বিকল্প সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সরকার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন ২০১৪ প্রণয়ন করেছে। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি৪) অর্জনের জন্য সরকার অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (২০২১-২০২৫) উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা খাতের জন্য তিনটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে-
• ৩৩ দশমিক ৭৯ মিলিয়ন কিশোর-কিশোরী ও বয়স্ক নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে মৌলিক সাক্ষরতা প্রদান করা
• মৌলিক সাক্ষরতা অর্জনকারী ৫ মিলিয়ন নতুন সাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিকে কার্যকর দক্ষতা প্রশিক্ষণ প্রদান করা
• উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বোর্ডকে কার্যকর করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।
প্রসঙ্গত, আগামীকাল (৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালিত হতে যাচ্ছে। ইউনেস্কো ঘোষিত দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘প্রোমোটিং লিটারেসি ফর ওয়ার্ল্ড ইন ট্রান্জিশন: বিল্ডিং দ্য ফাউন্ডেশন ফর সাসটেইনেবল এন্ড পিসফুল সোসাইটিস।’
যা বাংলায় মূলভাব ‘পরিবর্তনশীল ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে সাক্ষরতার প্রসার’।
আরও পড়ুন: নতুন বইয়ের আনন্দে শিশুরা আলোকিত বাংলাদেশ গড়বে: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী