প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে কাজ করা ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, শুক্রবার রাত ১১ টা ২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্স এসভি ৮০৪ ফ্লাইটে দেশে ফেরেন তারা। এ নিয়ে গত তিনদিনে মোট ৩৩২ জন বাংলাদেশিকে ফিরতে হলো।
দেশে ফেরা এসব শ্রমিকদের বরাবরের মতো প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় বিমানবন্দরে জরুরি খাবার-পানি প্রদানসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর সহায়তা প্রদান করে ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচি।
শরিফুল হাসান জানান, চলতি বছর এ পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সেপ্টেম্বর থেকে ধরপাকড়ের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। শুক্রবার রাতে যারা ফেরত এসেছেন তাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন যারা কয়েক মাস আগে সেখানে গিয়েছিলেন। অনেকে জানিয়েছেন, তাদের যে কাজ দেয়ার কথা ছিলো সেই কাজ পাননি। দীর্ঘদিন ধরে থাকা কয়েকজন বলছেন কেন তাদের পাঠানো হলো জানেন না। কয়েকজন বলছেন, কাজের বৈধ অনুমোদন (আকামা) নবায়নের জন্য তারা টাকা দিয়েছিলেন, কিন্তু নিয়োগকর্তা সেটি নবায়ন করেনি। এখন পুলিশ ধরলেও তারা দায়িত্ব নিচ্ছেন না।
এ ধরনের প্রতিটি ঘটনার জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতা আদায় করা জরুরি বলে মনে করছেন শরিফুল হাসান।
ফেরত আসা নরসিংদীর সজিব হোসেন অভিযোগ করেন, তিনি ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে আলফালা কোম্পানিতে গিয়েছিলেন মশা নিধন কর্মী হিসেবে কাজ করতে। কিন্তু সৌদিতে গিয়ে কাজ পান একটি সাপ্লাই কোম্পানিতে। এক বছরেও তিনি কোনো বেতন পাননি। পরে আর কোনো উপায় না পেয়ে শূন্য হাতে দেশে ফিরলেন।
ফরিদপুরের মামুন মিয়া বলেন, সাড়ে চার বছর ধরে তিনি সৌদি আরবে ছিলেন। আকামা নবায়নের জন্য কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকাও দিয়েছিলেন। কিন্তু কফিল আকামা নবায়ন করেননি। অভিযানে গ্রেপ্তার হলে কফিল তার দায়িত্বও নেয়নি।
ভুক্তভোগী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাসুম মিয়ার অভিযোগ, আট মাসের আকামার মেয়াদ থাকলেও রাস্তা থেকে ধরে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে পাঠানো হয়েছে তাকে। তিনি বলেন সৌদি আরবে নয় বছর বৈধ আকামা নিয়ে কাজ করতেন। কেন তাকে পাঠানো হলো তাও তিনি জানেন না।
ফেরত আসা আরেক শ্রমিক মো. জুয়েলের বাড়ি মৌলভীবাজার। তিনি জানান, মাত্র এক মাস আগে সৌদিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ধরপাকড়ের কারণে তাকেও শূন্য হাতে দেশে ফিরতে হলো।
একইভাবে ফেনীর মিজবাহ আড়াই মাস, গাইবান্ধার মাহাবুব পাঁচ মাস, সাদিরুল সাত মাস, কুমিল্লার জুয়েল আট মাস আগে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। কিন্তু ধরপাকড়ের কারণে তাদের খালি হাতে দেশে ফিরতে হয়।