জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতাকে যারা ব্যর্থ করতে চেয়েছিল আজ তারাই ব্যর্থ।’
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়াললি অংশ নেন।
আরও পড়ুন: বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের একটি কারাগারে সাড়ে ৯ মাস বন্দিদশা কাটিয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন। এক প্রহসনমূলক মামলায় কারাগারে তাকে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। ওই মামলায় তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ক্ষণগণনা করে যাচ্ছিলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী পরাজিত শক্তিরা চায়নি বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বজুড়ে মাথা উঁচু করে মর্যাদার সাথে চলাফেরা করুক। এজন্য তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছিল।
আরও পড়ুন: বাড়ি ভাড়া ভাতা পেতে সরকারি বাসায় থাকতেই হবে: প্রধানমন্ত্রী
‘এখানেই শেষ নয়, তারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে বিপথগামী করেছিল, তারা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে দেশের সত্যিকারের ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত করেছিল,’ বলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো। সেগুলো আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে।’
একইসঙ্গে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এগুলোর হাত থেকে দেশকে মুক্ত রেখে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় স্বাধীন দেশ হিসেবে বিশ্বে মর্যাদা ধরে রেখে বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগই জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে চলছে বলে দেশকে কিছু দিতে পেরেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের একটাই চিন্তা যে জাতির জন্য আমাদের মহান নেতা (বঙ্গবন্ধু) জীবন দিয়ে গেছেন, সেই জাতির কল্যাণ করা। তাদের জীবন সুন্দর হোট, এটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ভিশন ২০২১, ভিশন ২০৪১ এবং ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ সহ সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘এগুলো আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
আরও পড়ুন: করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে না: প্রধানমন্ত্রী
‘সেই সাথে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এগুলোর হাত থেকে দেশকে মুক্ত রেখে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো। জাতির পিতার প্রত্যাবর্তন দিবসে এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। এ জাতি বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে,’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিয়েছে এবং তা আসবে।
সবাইকে এই মারাত্মক ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশিকা মেনে চলার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সরকার প্রধান বলেন, গত মার্চ মাসে এই ভাইরাস আমাদের বেশি ক্ষতি করেছে, তাই এবারও এ সময়ে আরও একটি ঢেউ আসতে পারে।
আরও পড়ুন:মানবাধিকার, আইনের শাসনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিন: পুলিশদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী দেশ ও জনগণের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন, সংগ্রাম ও ত্যাগের বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ থেকে স্বাগত বক্তব্য দেন।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আবদুর রাজ্জাক, রমেশ চন্দ্র সেন, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল-আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক ও এসএম কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ড. রোকেয়া সুলতানা, আওয়ামী লীগের ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি, ঢাকা উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ও ঢাকা উত্তর সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি প্রমুখ বক্তব্য দেন।