প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হবে, যাতে জনগণকে আরও ভালোভাবে সেবা প্রদান করা যায়।
‘পিছনে ফিরে তাকানোর দরকার নেই। স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সাথে জড়িতদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ। আপনাদের প্রত্যেকের একটু বেশি মনোযোগ এবং নিষ্ঠা ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে,’ বলেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে বিদ্যমান কাঠামোর মধ্যে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ উন্নতি সম্ভব।
আরও পড়ুন: এলডিসি উত্তরণে জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে জেলা সিভিল সার্জনদের এক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছিলেন অধ্যাপক ইউনূস।
সম্মেলনের উদ্বোধন করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের প্রতি তাদের (স্বাস্থ্য খাতের ব্যক্তিদের) প্রচেষ্টা দেখে মানুষ হয় অনুপ্রাণিত হতে পারে, নয়তো হতাশ হতে পারে।
তবে তিনি স্বাস্থ্য খাতের প্রয়োজনীয়তাগুলো সমাধানের আশ্বাস দেন। এই খাতের সাথে জড়িত প্রতিটি ব্যক্তির কাছ থেকে আরও ভালো প্রচেষ্টা নিশ্চিত করার উপর জোর দেন, যা যথাযথ মনোযোগ দেওয়া হলে একেবারে সম্ভব।
‘আমাদের নিজেদেরকে জিজ্ঞাসা করতে হবে, আমরা কেন তা করতে পারি না? আমার মনে হয় যদি আমাদের সেই মানসিকতা থাকে, তাহলে পরিবর্তন সম্ভব,’ অধ্যাপক ইউনূস বলেন।
বর্তমান মুহূর্তকে ‘বড় সুযোগ’ বলে অভিহিত করে অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন যে বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি বাংলাদেশের দিকে রয়েছে এবং তিনি স্বাস্থ্য খাতের পেশাদারদের জাতির আরও ভালোভাবে সেবা করার জন্য এই মুহূর্তটি কাজে লাগাতে উৎসাহিত করেন।
তিনি স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সম্প্রতি জমা দেওয়া প্রতিবেদনের কথাও উল্লেখ করেন, যাতে পদ্ধতিগত উন্নতির লক্ষ্যে কিছু সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বিভিন্ন হাসপাতালে আকস্মিক পরিদর্শন নিয়ে নিজের পর্যবেক্ষণের বিবরণ দেন।
আরও পড়ুন: বিভিন্ন খাতে আমিরাতের বিনিয়োগ প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তিনি কিছু ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা এবং জবাবদিহিতার অভাব লক্ষ্য করেছেন বলেও জানান। ‘এই সমস্যাগুলো সমাধান না করে আমরা অর্থপূর্ণ সাফল্য আশা করতে পারি না,’ বলেন তিনি।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা স্বাস্থ্যসেবা প্রদান উন্নত করার জন্য সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার মধ্যে সহযোগিতার গুরুত্বের উপর জোর দেন। অধ্যাপক ইউনূসের নীতির প্রতিধ্বনি করে তিনি আরও বলেন, ‘কোন কিছুই অসম্ভব নয়। অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করা আপনার দায়িত্ব।’
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জনবলকে শক্তিশালী করার জন্য পর্যায়ক্রমে ৭,০০০ ডাক্তার এবং অতিরিক্ত নার্স নিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। তিনি জেলা সিভিল সার্জনদের স্থানীয় পর্যায়ে আরও আলোচনা এবং সমাধানের জন্য মূল চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করার আহ্বান জানান।