স্বাস্থ্যসেবা
তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা বাড়াতে ২০০০ চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে: রিজওয়ানা
তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা বাড়াতে আরও দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেছেন, ‘পিএসসির মাধ্যমে ৩ হাজার ৪৯৩ জন চিকিৎসক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান। এর অতিরিক্ত হিসেবে আরও দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্যে হলো গ্রামাঞ্চলের মানুষ চিকিৎসাসেবা পায় না। তাদের চিকিৎসা–সুবিধার জন্য যেন পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিশ্চিত করা যায়, সে জন্য এ সিদ্ধান্ত।’
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। পরে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পরিবেশ উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সস্তায় তেল সরবরাহ করবে আরামকো: রিজওয়ানা
বৈঠকে দুটি প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান রিজওয়ানা হাসান। এগুলো হলো— বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ট্রাস্ট আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ।
তিনি জানান, এ পর্যন্ত উপদেষ্টা পরিষদে ১৩৫টি সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৯২টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৬৮ শতাংশ।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর এবং সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।
৬ দিন আগে
বরগুনায় ১৪৭ চিকিৎসকের বিপরীতে কর্মরত ১৪, যোগদান করেননি ৯ জন
বরগুনা জেলার ৬টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪৭ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ১৪ জন। আর ১৪ জন রয়েছেন অনুমোদিত ছুটিতে। চিকিৎসক সংকট নিরসনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জেলায় ১৩ জন চিকিৎসককে পদায়ন করা হলেও যোগদান করেছেন মাত্র ৪জন। এতে জেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ভেঙে পড়েছে চিকিৎসা সেবা।
১২ লক্ষাধিক জনসংখ্যার উপকূলীয় এ জেলার চিকিৎসা সেবার ভঙ্গুরতা ও চিকিৎসক সংকট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে বাসিন্দাদের মধ্যে। স্বাস্থ্য বিভাগের যথাযথ জবাবদিহিতা না থাকায় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে সচেতন নাগরিকরা মনে করেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কঠোরতা অবলম্বন করলে পদায়নকৃত চিকিৎসকরা কর্মস্থলে যোগদান করতে বাধ্য হতো।
প্রায় ২ হাজার বর্গ কিলোমিটার আয়তনের উপকূলীয় জেলার সর্বস্তরের মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক ও জনবল পদায়নের দাবিতে বহু আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন বাসিন্দারা। কিন্তু কোনো প্রতিকার ও পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।
জেলার ৬টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিভিল সার্জন অফিসে মোট ১৪৭ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। কর্মরত রয়েছেন মাত্র ২৮ জন। এর মধ্যে আবার ১৪ জন অনুমোদিত ছুটিতে থাকায় বর্তমানে কর্মস্থলে আছেন মাত্র ১৪ জন চিকিৎসক। এর উপর আবার রয়েছে অন্যান্য জনবলের সংকট।
বরগুনা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসক সংকট নিরসনের লক্ষ্যে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর জেলায় ১৩ জন নতুন চিকিৎসককে পদায়ন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু, তাদের মধ্যে যোগদান করেছেন মাত্র ৪ জন। আর বাকীরা এখনো যোগদান করেননি। এ বিষয়ে একাধিকবার চিঠি চালাচালি করলেও এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি।
জেলার পাথরঘাটা উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২৭ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কাগজে-কলমে কর্মরত মাত্র ৪ জন। তাদের মধ্যে আবার ২ জন আছেন অনুমোদিত ছুটিতে। এছাড়া বাকি দু’জনের মধ্যে একজন এম. এস. রেসিডেন্সি কোর্সে যাবেন। বাকী একজন দিয়ে চলবে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
বামনা উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৫ জন চিকিৎসকের বিপরীতে কাগজে-কলমে কর্মরত ৫ জন। কিন্তু একজন অনুমোদিত ছুটিতে এবং আরেকজন যাবেন এমডি কোর্সে। বেতাগী ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৭ জন চিকিৎসকের বিপরীতে কাগজে-কলমে কর্মরত আছে ৫ জন। তার মধ্যে একজন অনুমোদিত ছুটিতে, একজন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সংযুক্তিতে কর্মরত এবং আরেকজন এমডি কোর্সে যাবেন। আমতলী উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৯ জন চিকিৎসকের বিপরীতে কাগজে-কলমে কর্মরত ৪ জন। যার মধ্যে একজন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে এবং আরেক এমডি কোর্সে যাবেন। তালতলী উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৪ জনের বিপরীতে কর্মরত আছেন ২ জন। এছাড়া বরগুনা সদর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে ১৩ জনের বিপরীতে ৭ জন থাকলেও তাদের মধ্য থেকে ৪ জন বরগুনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সংযুক্তিতে কর্মরত এবং সিভিল সার্জন অফিসের ২ জন মেডিকেল অফিসারের স্থলে আছেন মাত্র একজন।
গেল বছরের ১৮ ডিসেম্বর বরগুনার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পদায়ন করার পরও যোগদান না করা চিকিৎসকরা হলেন- ডা. নুর-ই জান্নাতুল ফেরদৌস, ডা. মো. সাজ্জাদ হোসেন, ডা. পথিক বিশ্বাস, ডা. মো. রাকিবুল হাসান, ডা. মানা শায়ন্তা ঘোষ, ডা. রাফসানা রউফ, ডা. মো. ফখরুল ইসলাম চৌধুরী, ডা. মো. সাইফুর রহমান ও ডা. বুশরা নওরীন।
আরও পড়ুন: বাকৃবি: ১০ হাজার মানুষের জন্য চিকিৎসক মাত্র ৮ জন
বরগুনা সচেতন নাগরিক কমিটির (টিআইবি) সভাপতি মনির হোসেন কামাল বলেন, বরগুনায় চিকিৎসক সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ চিকিৎসককে পদায়ন করার পরও তারা যোগদান করছেন না। তার দাবি, চিকিৎসকদের যথাযথ জবাবদিহিতার আওতায় আনতে না পারার কারণে এমন সুযোগ নিচ্ছেন তারা।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল হাফিজ বলেন, সুদীর্ঘ বছর স্বাস্থ্য বিভাগে চেইন অব কমান্ড বলে কিছু নেই। যার কারণে ইচ্ছেমত নিয়োগ অথবা বদলির রেওয়াজ চলমান।
তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকরি করে সরকারের নির্দেশনা মানবেন না এটা হতে পারে না। এখান থেকে বেড়িয়ে না আসা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগের সুফল আসবে না।
বরগুনা সিভিল সার্জন ডা. প্রদীপ চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘বরগুনা জেলায় চিকিৎসক সংকট তীব্র। এ সংকট কিছুটা কাটিয়ে উঠতে ১৮ ডিসেম্বর ১৩ জন চিকিৎসককে পদায়ন করা হয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র ৪জন যোগদান করলেও বাকীরা এখনো যোগদান করেনি। এ বিষয়ে দু’দফায় চিঠির মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বদলি আদেশে ৩ দিনের মধ্যে যোগদান করার কথা থাকলেও তারা এ বিষয়ে গুরুত্ব দেননি। সরকারি চাকরি বিধি অনুযায়ী এটা তারা করতে পারেন না।’
আরও পড়ুন: চিকিৎসক-নার্সসহ বিএসএমএমইউয়ের ১৫ জন বরখাস্ত
৩৬ দিন আগে
স্বাস্থ্যব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে জনগণ, সরকারি হাসপাতালে অতিরিক্ত চাপ
স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ জনগণের জন্য এটি মেটানো খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। একারণে অনেকেই খরচ কমাতে সরকারি হাসপাতালের উপর নির্ভর করেন।
বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার আর্থিক সক্ষমতা যাদের নেই, তারা স্বাস্থ্যসেবার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল এবং ঢাকা শিশু হাসপাতালের মতো সরকারি হাসপাতালের দারস্থ হন।
এসব হাসপাতালে কম খরচে পরিষেবা দেওয়া হলেও, নানা কারণে এসব হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের অসন্তোষের পরিমাণই বেশি। আর্থিক চাপ সত্ত্বেও তারা বেসরকারি হাসপাতালে যেতে বাধ্য হন।
আরও পড়ুন: ঢামেকে দুর্ভোগের অপর নাম শৌচাগার, নেই নারী-প্রতিবন্ধীদের কোনো সুবিধা
সরকারি হাসপাতালে সম্পদের সীমাবদ্ধতা
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান খান অকপটে বাড়তি রোগীর সংখ্যা এবং সীমিত সম্পদের কথা উল্লেখ করেন। জনসাধারণের স্বাস্থ্যসেবা সুবিধার সমস্যার কথা খোলাখুলিভাবে স্বীকার করেন তিনি।
ঢামেকের মতো সরকারি হাসপাতালগুলো যথেষ্ট চাপের মধ্যে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমাদের সক্ষমতার চেয়ে চাহিদা অনেক বেশি। অতিরিক্ত ভিড়, দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা এবং প্রয়োজনীয় সম্পদের ঘাটতি রয়েছে।’
জনগণের একটি বড় অংশ এসব হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল হওয়ায়, ওয়ার্ডে রোগীদের গাদাগাদি করে থাকতে হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন স্তরের কর্মীরাও ব্যস্ততা থাকায় সেবার জন্য দীর্ঘ লাইন ধরে অপেক্ষা করতে হয়।
এসব কারণে রোগীদের উপর গভীরভাবে প্রভাব পড়ে।
ঢামেকে ভর্তি থাকা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মিলন হক বলেন, অতিরিক্ত রোগীর চাপের কারণে সুষ্ঠু স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায় না।
তিনি বলেন, ‘আমার বেশ কয়েক ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতা ছিল, তবে আমি সময়মতো ডাক্তারদের কাছে পাইনি।’
যেকোনো ধরনের সেবা পেতে দেরি তো হয়ই। এছাড়াও অপ্রতুল সুযোগ-সুবিধা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অপেশাদার আচরণের অভিযোগও করেন মিলন।
সঠিক যত্নের অভাব শেষ পর্যন্ত তিনি একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হন। এ কারণে তার ব্যয় অনেক বেড়ে যায়।
বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করা মিলনের জন্য অতিরিক্ত আর্থিক বোঝা। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনা করে অতিরিক্ত ব্যয় করে বেসরকারি হাসপাতালে চিৎিসা নিতে বাধ্য হন তিনি।
একই রকম পরিস্থিতি আরও অনেকের। ঢাকা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শিশুদের অভিভাবকরাও একইরকম কথা জানালেন।
সম্প্রতি এক দম্পতি তাদের দুই বছরের মেয়ে মাহিকে সেখানে নিয়ে যান। কিন্তু একটি বেডের ব্যবস্থা করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
মাহির বাবা বলেন, ‘আমি জানি না কতদিন আমরা এই খরচ বহন করতে পারব, তবে আমার সন্তানের স্বাস্থ্যই আমার কাছে প্রধান বিষয়।’
অত্যাবশ্যক চিকিৎসা সেবা এবং ব্যক্তিগত আর্থিক অবস্থার ব্যবধানের মধ্যে এমন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি অনেক পরিবারকে এমন সমস্যায় পড়তে হয়।
বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার আবেদন
বেসরকারি হাসপাতালগুলো ব্যয়বহুল হলেও, সেবার মানের কারণে আর্থিক সংকট মোকাবিলা করেও অনেকে এখানে আসতে বাধ্য হন। রোগীরা সাধারণত বেসরকারি হাসপাতালের পরিষেবা এবং সুবিধাগুলোর মানে সন্তুষ্ট হতে পারেন। যদিও এর জন্য চড়া মূল্য দিতে হয়।
৫৮ বছর বয়সি এনামুল করিম সম্প্রতি একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সেখানকার পরিষেবার বিষয়ে তিনি ইতিবাচক অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। সরকারি হাসপাতালগুলোতে তিনি যেসব সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন তার থেকে এটি সম্পূর্ণ আলাদা ছিল।
এনামুল বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা অবিশ্বাস্যভাবে দক্ষ, কিন্তু রোগীর সংখ্যার কারণে আমরা প্রায়ই সরাসরি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হই। তাদের অনেকেরই ব্যক্তিগত অনুশীলন রয়েছে এবং ব্যয়বহুল হলেও বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়াই ভালো।’
স্বাস্থ্যসেবায় ব্যক্তিগত ব্যয় বাড়ছে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের রিপোর্টে উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশ করেছে: ২০২০ সালে বাংলাদেশে ব্যক্তিগত খরচে স্বাস্থ্যব্যয় প্রায় ৬৯ শতাংশে পৌঁছেছে।
ওষুধপত্রসহ নানা ধরনের চিকিৎসা সামগ্রীর কারণে উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যক্তিগত খরচ হচ্ছে। তারপরে ডায়াগনস্টিকস এবং অন্যান্য চিকিৎসা পরিষেবা রয়েছে।
সাধারণ অর্থনৈতিক মন্দা এবং জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। অনেকের জন্য স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন। এর কারণে মানুষ আর্থিক নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবার মধ্যে একটি বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। আর্থিক সমস্যার কারণে চিকিৎসা বিলম্বিত হলে স্বাস্থ্য সমস্যা আরও গুরুতর হয়ে উঠতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে চিকিৎসার খরচ বাড়িয়ে দিতে পারে।
এছাড়াও, ‘ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যব্যয়’ শুধু চিকিৎসা খরচের ওপরই প্রভাব ফেলছে না। এর বাইরেও ব্যক্তির উৎপাদনশীলতা হ্রাস, উপার্জন হারানো এবং যাতায়াত খরচ-ব্যক্তি ও পরিবার উভয়ের উপরই ভারী বোঝা হিসেবে প্রভাব ফেলে।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি গবেষণা এই ব্যয়গুলোকে তিন ভাগে ভাগ করেছে। যেমন-সরাসরি চিকিৎসা (স্বাস্থ্যসেবা সংস্থানগুলোর ব্যয়), সরাসরি চিকিৎসা বহির্ভূত (পরিবহন এবং যত্নশীল সহায়তার মতো ব্যয়) এবং পরোক্ষ (উত্পাদনশীলতা হারিয়ে যাওয়া)।
এসব ব্যয় সম্মিলিতভাবে বিশাল অর্থনৈতিক বোঝা তৈরি করে, এর প্রভাব পড়ে পরিবার ও বৃহত্তর সমাজে। বর্তমান ব্যবস্থার সত্যিকারের আর্থিক প্রভাব বোঝার জন্য চিকিৎসা বহির্ভূত ব্যয়সহ স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়ের ব্যাপক মূল্যায়ন অপরিহার্য।
আরও পড়ুন: ওষুধ ঘাটতি-সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য ঢামেক হাসপাতালে
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় কাঠামোগত বৈষম্য
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোর মধ্যে ৩,৯৭৬টি সরকারি হাসপাতাল এবং ৯৭৫টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে।
তবুও, পদ্ধতিগত অদক্ষতা এবং সম্পদের অভাবের কারণে জনসাধারণ সঠিক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না। সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এপিডেমিওলজিক্যাল ট্রেনিংয়ের (সিআইইটি) গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র ১৩ শতাংশ বাংলাদেশি সরকারি হাসপাতালে সেবা নিচ্ছেন। ২৭ শতাংশ বেসরকারি বা এনজিও সেবা ব্যবহার করে।
আশঙ্কাজনকভাবে, একটি বড় বা ৬০ শতাংশ প্রবেশযোগ্যতা ও সামর্থ্যের অভাবে অযোগ্য সেবাদানকারীদের কাছে যায়।
পেনসিলভেনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির সৈয়দ সাদ আন্দালিবের নেতৃত্বে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এসব হাসপাতাল যে অর্থনৈতিক কাঠামোর মধ্যে পরিচালিত হয় তা পরিষেবার মানকে প্রভাবিত করে।
সরকারি হাসপাতালগুলো সীমাবদ্ধ সরকারি বাজেটের অধীনে পরিচালিত হয়, অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে পরিচালনা করা হয়। তারা রোগীদের আকৃষ্ট করতে এবং ধরে রাখতে উচ্চমানের সেবাদানের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করে।
এই পরিস্থিতি বড় বৈষম্য তৈরি করে, যা অনেক মানুষকে ব্যয় সত্ত্বেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিতে বাধ্য করে।
আরও পড়ুন: অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত ঢামেক হাসপাতাল
স্বাস্থ্যসেবা সংস্কারের জন্য আহ্বান
ঢামেক হাসপাতালের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর পদ্ধতিগত সংস্কার অত্যন্ত জরুরি।
গুণগত সেবাদানে প্রতিবন্ধকতা দূর করতে প্রয়োজন সম্পদের বণ্টনে কৌশলগত পরিবর্তন, রোগী ব্যবস্থাপনায় উন্নতি এবং সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মী প্রশিক্ষণের মানোন্নয়ন।
নীতি নির্ধারকরা এবং স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবীরা প্রতিনিয়ত সংস্কারের আহ্বান জানাচ্ছেন। যাতে সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার মধ্যে বৈষম্য দূর করা যায়, রোগীদের উপর আর্থিক চাপ কমানো যায় এবং সাশ্রয়ী, গুণগত সেবা প্রদান করা যায়।
ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যব্যয় মোকাবিলা এবং সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবা প্রচারের প্রচেষ্টা "হেলথ কেয়ার ফাইন্যান্সিং স্ট্র্যাটেজি ২০১২-৩২"-এর লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এখানে এমন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে, যেখানে আর্থিক সীমাবদ্ধতা মানসম্মত চিকিৎসার প্রাপ্তির যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হয় না।
সঠিক সংস্কারের মাধ্যমে, বাংলাদেশ এই লক্ষ্য অর্জনে অগ্রগতি করতে পারলে, দেশের নাগরিকদের জন্য সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি বাস্তবায়ন হবে।
আরও পড়ুন: ঢামেক ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের বহির্বিভাগ পুরোদমে চালু
১১৯ দিন আগে
ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, চাপ সৃষ্টি হচ্ছে ভঙ্গুর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর
এ বছরও দেশজুড়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। একই সঙ্গে হাসপাতালগুলো সুযোগ-সুবিধার অপ্রতুলতার কারণে ক্রমবর্ধমান রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
এরই মধ্যে হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বেড়েছে। অক্টোবরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩১ জনে, আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ৩৪ জন।
দুই মাস আগে সেপ্টেম্বরে ভয়াবহ ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা নিয়ে সতর্ক করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। অক্টোবরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকায় মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত কয়েক মাসের তুলনায় এখন প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা।এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর ৫৫ শতাংশই ঢাকার বাইরের।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপিটাল, ঢাকার মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চাপ সামলাতে সাধারণ ওয়ার্ডের বাইরেও আলাদা করে সিঁড়ির কাছে রোগীদের জন্য বেডের ব্যবস্থা করতে হয়েছে।এসব হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত বড়দের ও শিশুদের জন্য আলাদা ফ্লোরে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এসব হসপিটালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক মাসের তুলনায় এ মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। গত মাসের তুলনায় এ মাসে ক্রমাগত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চলতি বছর আগস্ট মাসে হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৮০০’র বেশি রোগী। আর এ মাসে এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজারের বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন। এখনও মাস শেষ হতে বাকি আরও ৭ দিন।
চিকিৎসকরা বলেন, বেশিরভাগ রোগী ডেঙ্গু জ্বরের ভয়াবহ রূপ শক সিনড্রোম অবস্থা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তাদের ব্লাড প্রেশার কমে যাচ্ছে, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কিছুটা অচল হয়ে আসছে, বমি হচ্ছে, শরীরে পানি চলে আসছে, কিছুটা ল্যাথার্জিক- এমন অবস্থা নিয়ে আসছে।
আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ড. মুশতাক আহমেদ ইউএনবিকে বলেন, প্রথমত রোগীর সংখ্যা বাড়লে আনুপাতিক হারে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে। দ্বিতীয়ত গত বছর সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে যেসব কারণে, সেগুলো কিন্তু দূর হয়নি।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে আরও ১৯৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি
তিনি আরও বলেন, আমাদের যে চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে, সেটা বিকেন্দ্রীকরণ হয়নি। এছাড়া যেসব রোগীকে শনাক্ত করা হচ্ছে কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ রোগী নয়, তাদের মাঠপর্যায়ে হাসপাতালে রাখার কথা, আবার যারা জটিল রোগী তাদেরও একসঙ্গে রাখা হচ্ছে, ফলে তারা যথার্থ চিকিৎসা পাচ্ছে না। সব এক জায়গায় হওয়ার কারণে ব্যবস্থাপনা করা যাচ্ছে না। যতই ডাক্তার দেন, স্যালাইন দেন, ফ্লোরে রোগী রেখে কী সমাধান করা যায়? কাজেই চিকিৎসা ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ করা খুব দরকার।
তিনি জানান, অনেক ক্ষেত্রেই রোগীকে উপজেলা পর্যায়ে প্রাথমিক চিকিৎসা না দিয়ে জেলা কিংবা বিভাগীয় হাসপাতালে রেফার করা হয়। এতে মধ্যবর্তী সময়ে অনেক রোগী প্লাটিলেট কমে গিয়ে মুমূর্ষু হয়ে যায়। অন্তিম অবস্থায় চিকিৎসা পাওয়া এসব রোগীকে সুস্থ করা কঠিন হয়ে পড়ে বলে জানাচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার ইউএনবিকে বলেন, ডেঙ্গু রোগীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সই চিকিৎসা দিতে পারে। অথচ তা না করে জেলা হাসপাতালে ট্রান্সফার করে বা বিভাগীয় হাসপাতালে ট্রান্সফার করে দেয়।এতে যে সময় লাগে তাতে রোগীর প্লাজমালি কেইস হয়ে যায়, প্লাটিলেট কাউন্ট কমে গিয়ে এই রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নিতে হবে:
অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, কীভাবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা যাবে সেটি সবাই জানে। কিন্তু প্রতিবারই আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছি। প্রতিবারই বলছি আমরা কাজ করছি, এটা করছি, সেটা করছি। কিন্তু নাগরিকরা ফলাফল পাচ্ছে না। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় বিজ্ঞান ভিত্তিকভাবে সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনার প্রয়োগ ঘটাতে হবে।
তিনি বলেন, সরকারের যেসব প্রতিষ্ঠান বা যারা এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে রয়েছে তাদের চাকরি নয় বরং সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।
হটস্পট ম্যানেজমেন্টের আওতায় যেসব বাড়িতে ডেঙ্গু রোগী আছে সেখানে ২০০ মিটারের মধ্যে ক্রাশ কর্মসূচি করতে হবে। উড়ন্ত এডিস মশা ও লার্ভা ধ্বংস করতে হবে। ফলে ওই বাড়িতে বা আশেপাশের বাড়িতে কেউ আক্রান্ত হবে না।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ড. মহ. শের আলী ইউএনবিকে বলেন, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনে 'মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সমন্বিত উপায়ে ও যথাযথভাবে বাস্তবায়ন' নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সারাদেশে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। মৃত্যু হারও বেড়েছে। যদিওবা এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে আমরা যথাযথ গুরুত্ব সহকারে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘যেসব এলাকায় ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বেশি সেসব এলাকায় গতকাল রবিবার থেকে আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ সমন্বিতভাবে বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেছে। এর মাধ্যমে আমরা ডেঙ্গু রোগের বিস্তার কমিয়ে আনতে সক্ষম হব।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. মাহমুদুল হাসান ইউএনবিকে বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটানোর পাশাপাশি এডিসের লার্ভা জন্মাতে পারে এমন উৎসগুলো পরিচ্ছন্ন করার মাধ্যমে ধ্বংস করতে হবে৷ স্বাস্থ বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও প্রকৌশল বিভাগ সম্মিলিতভাবে কাজ করলে ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত তদারকি টিম প্রতিটি অঞ্চলে পরিচালিত কার্যক্রম সঠিকভাবে তদারকি করছে। শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য নাগরিকদের সম্পৃক্ত করতে হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে হবে।'
নগরবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আমাদের কর্মীরা বাসাবাড়ির আশপাশ পরিষ্কার করে এবং ওষুধ ছিটায়। কিন্তু বাসাবাড়ির ভেতরে আমাদের কর্মীদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব হয় না। তাই নিজেদের বাসাবাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ফ্রিজ, এসি, ফুলের টব, অব্যবহৃত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের খোলা প্যাকেট, বিভিন্ন ধরনের খোলা পাত্র, ছাদ কিংবা অন্য কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।'
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) থেকে একযোগে ডিএনসিসির সব ওয়ার্ডে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ মশা নিধন কর্মসূচি শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এই বিশেষ কর্মসূচি ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিচালনা করা হবে।
সপ্তাহব্যাপী পরিচালিত বিশেষ মশা নিধন কর্মসূচিতে প্রতিটি ওয়ার্ডকে বিভিন্ন সাব ব্লকে ভাগ করে প্রতিটি ব্লকের সব বাড়ি পরিদর্শনের মাধ্যমে এডিস মশার প্রজনন স্থল চিহ্নিত করে কীটনাশক প্রয়োগ এবং ধ্বংস করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একজন রোগীও যেন মারা না যায়: উপদেষ্টা হাসান আরিফ
১৬৮ দিন আগে
‘কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ’
ইয়াঙ্গুনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন বলেছেন, কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতিসংঘ স্বীকৃত ‘শেখ হাসিনা উদ্যোগ’ সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের একটি অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি।
শুক্রবার (১২ জুলাই) ইয়াঙ্গুনের ইউনিভার্সিটি অব পাবলিক হেলথ-এ ‘কমিউনিটি বেসড হেলথকেয়ার: রোড টু অ্যাচিভ ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন।
ইয়াঙ্গুনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও ইউনিভার্সিটি অব পাবলিক হেলথ যৌথভাবে সেমিনারটি আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল: শেখ হাসিনার উদ্যোগ তুলে ধরে জাতিসংঘে রেজুলেশন গৃহীত
রাষ্ট্রদূত ড. হোসেন তার বক্তৃতায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি বহুমুখী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্যোগের মাধ্যমে জনগণের স্বাস্থ্য উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
তিনি আরও বলেন, সুস্বাস্থ্যের সামাজিক মানদণ্ডের উন্নতির সঙ্গে এই উদ্যোগগুলোর সম্মিলিত প্রভাবে বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে, যা প্রতিবেশী অনেক দেশ এবং অনেক উন্নয়নশীল দেশকে ছাড়িয়ে গেছে।’
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা, স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও রোগনির্ণয়, নিয়মিত টিকাদান, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা এবং প্রয়োজনে উন্নত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলের প্রান্তিক জনগণের ব্যাপক উপকার করছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতিসংঘ ঘোষিত ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।
কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা প্রবর্তনের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, এই উদ্যোগটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুপ্রেরণায় বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরে কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণাটি চালু করেছিলেন।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ১২টি কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন
রাষ্ট্রদূত গভীর শ্রদ্ধায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন, যিনি সর্বপ্রথম স্বাস্থ্যসেবাকে গ্রামীণ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার ধারণা দিয়েছিলেন।
২৪১ দিন আগে
স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের সময় নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
ভুয়া চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘সরকার এরই মধ্যে এসবের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। আশা করি, আপনারা এ ব্যাপারে সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন।’
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে 'চতুর্থ আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন-২০২৪' এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশন ও যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারভেনশনাল একাডেমি এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: অমর একুশে: ভাষা শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
তিনি চিকিৎসকদের সংবেদনশীলতা ও উদারতার সঙ্গে রোগীদের চিকিৎসা করতে এবং রোগীর মর্যাদা ও গোপনীয়তা রক্ষায় সর্বোচ্চ যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, 'চিকিৎসা বিজ্ঞান প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল, যত নতুন নতুন রোগের আবির্ভাব হচ্ছে, চিকিৎসা বিজ্ঞান সেগুলোকে প্রতিরোধ করতে এগিয়ে যাচ্ছে।’
চিকিৎসাবিষয়ক শিক্ষা, চিকিৎসা, সেবা ও গবেষণা কার্যক্রমে গতিশীলতা এবং উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রকৃতি মাথায় রেখে চিকিৎসা, শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
হৃদরোগ, ক্যান্সার, এইডসসহ অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
জনগণের দোরগোড়ায় সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকারের নিরন্তর প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকারের লক্ষ্য প্রত্যেক নাগরিকের জন্য দূষণমুক্ত, পরিবেশবান্ধব স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন নিশ্চিত করার মাধ্যমে কল্যাণমূলক সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করা।
দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আরও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারি, বেসরকারি খাত ও চিকিৎসকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ক্ষমতার অপব্যবহার যেন না হয় তা নিশ্চিত করুন: রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন
দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা প্রদান চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার উন্নত চিকিৎসাসেবার জন্য ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তারা (গরিবরা) যেন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হয় বা অর্থের অভাবে অবহেলিত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।’
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, ইন্টারভেনশনাল একাডেমির কোর্স চেয়ারম্যান ডা. রাজেশ এম দেব, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এবং বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির ‘এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’ গ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ
৩৮০ দিন আগে
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে সহায়তা করতে পেরে গর্বিত: ইউএনওপিএস’র নির্বাহী পরিচালক
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস (ইউএনওপিএস) এর নির্বাহী পরিচালক জর্জ মোরেরা দা সিলভা শনিবার (২৮ অক্টোবর) ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজিজেস অব দ্য চেস্ট অ্যান্ড হাসপাতাল (এনআইডিসিএইচ) পরিদর্শন করেছেন।
এটি বাংলাদেশের ২৯টি হাসপাতালের মধ্যে একটি, যেখানে জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচির (এনএমইপি) মতো অংশীদারদের সঙ্গে এবং গ্লোবাল ফান্ডের অর্থায়নে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে সমর্থন করার জন্য অক্সিজেন প্ল্যান্ট সুবিধা নির্মাণ করছে ইউএনওপিএস।
এনআইডিসিএইচসহ এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে সারা বাংলাদেশে কৌশলগতভাবে পার্টনার হাসপাতাল নির্বাচন করা হয়েছিল। যাতে সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ের অত্যাবশ্যকীয় চিকিৎসা পরিষেবা নিশ্চিত করা যায়।
অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে ইউএনওপিএস অত্যাবশ্যকীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও সরবরাহ সংগ্রহে সহায়তা করেছে এবং অক্সিজেন থেরাপি ইউনিট স্থাপনের মাধ্যমে হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা পরিকাঠামো উন্নত করেছে।
তাই বাংলাদেশের সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাগুলোকে কোভিড-১৯ মহামারির মতো জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতিতে গুরুতর চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য শক্তিশালী করা হয়েছে।
এই কাজের অগ্রগতির বিষয়ে মোরেরা দা সিলভা বলেন, ‘সকলকে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য এনআইডিসিএইচ কর্মীদের আত্মোৎসর্গ অনুপ্রেরণাদায়ক। অক্সিজেন প্লান্ট নির্মাণসহ তার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে ইউএনওপিএস বাংলাদেশকে সমর্থন করতে পেরে গর্বিত।’
এনআইডিসিএইচ-এর পরিচালক ডা. মো. খায়রুল আনাম বলেছেন, ‘আমাদের এবং সারাদেশের অন্যান্য হাসপাতালে অক্সিজেন থেরাপির ক্ষমতা সম্প্রসারণ কোভিড-১৯ এবং অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি গেম-চেঞ্জার হয়েছে।’
নির্বাহী পরিচালক ইউএনওপিএস ও বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব জোরদার করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন অংশীদার ও জাতিসংঘের সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
ইউএনওপিএসের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশে এটিই তার প্রথম সফর।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি ‘শক্তিশালী অংশীদারিত্বের’ মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য উন্মুখ তারা।
নির্বাহী পরিচালক জানান, তারা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং জনগণের জন্য একটি টেকসই, স্থিতিস্থাপক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশের ‘প্রতিশ্রুতির পুনরাবৃত্তির’ প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
৪৯৯ দিন আগে
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে নতুন সচিব হিসেবে যোগ দিয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে নতুন সচিব হিসেবে যোগ দিয়েছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
সোমবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মুহ. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের অবসর ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের নতুন সচিব হিসেবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের যোগদান উপলক্ষে ‘বিদায় সংবর্ধনা ও বরণ’ অনুষ্ঠান হয়।
আরও পড়ুন: লকডাউন: স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সকল প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশ
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে সদ্য বিদায়ী সিনিয়র সচিব ড. মুহ. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারকে ফুল দিয়ে বিদায় জানান ও স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন।
একই সময়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নতুন যোগদান করা সচিব জাহাঙ্গীর আলমকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসময় বলেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে বিদায়ী সিনিয়র সচিব ড. মুহ. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার সততা ও অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন। বিদায়ের পরও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ বিদায়ী সিনিয়র সচিবের কর্মকাণ্ড স্মরণ রাখবে। নতুন যোগদান করা সচিব জাহাঙ্গীর আলমের আগামী দিনের কাজের মাধ্যমে জাতি তাকে মনে রাখবে বলে উল্লেখ করেন ও শুভকামনা জানান মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে নতুন সচিব জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কাজ করার সুযোগ পাওয়া নিঃসন্দেহে জীবনের অন্যতম একটি বিশেষ সুযোগ। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধিতে নিরলস কাজ করতে চাই।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে করোনা বেড বাড়ানো হবে: স্বাস্থ্য সচিব
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবকে বদলি
৫১৮ দিন আগে
ইসলামী ব্যাংক-মেডিক্স স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত চুক্তি সই
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি এবং ইউনাইটেড হেলথকেয়ার সার্ভিসেস লিমিটেডের সহযোগী সংস্থা মেডিক্স একটি কর্পোরেট চুক্তি সই করেছে।
এই চুক্তির আওতায় ব্যাংকের গ্রাহক ও কর্মচারীরা বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষায় বিশেষ ছাড় পাবেন।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মুহাম্মদ কায়সার আলী এবং ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফয়জুর রহমান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নথি বিনিময় করেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার এএফএম কামালউদ্দিন, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হক এবং সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এ এম শহীদুল আমরান, ইউনাইটেড হসপিটাল লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার ডা. মো. ফজলারাব্বী খান, সেন্টার অপারেশন অ্যান্ড কর্পোরেট মার্কেটিং এর প্রধান তারেক সামি রহমান এবং মেডিক্সের কর্পোরেট অ্যাকাউন্টস ম্যানেজার শরিফুল ইসলাম খান ইউসুফজাইসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স সংগ্রহের জন্য পুরস্কার পেল ইসলামী ব্যাংক
`কমনওয়েলথ বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’পেল ইসলামী ব্যাংক
ইসলামী ব্যাংক যুব উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে উৎসাহিত করতে পারে : ড. সালেহউদ্দিন
৫৩১ দিন আগে
স্বাস্থ্যসেবার উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ৫টি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
আন্তর্জাতিক অংশীদাররা দেশের সার্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতিতে তাদের সহায়তা প্রসারিত করতে পারে এমন পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার(২১ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ (ইউএইচসি)’ বিষয়ক ইউএনজেএ’র উচ্চ পর্যায়ের সভায় দেওয়া বক্তেব্যে এই পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি প্রথম যে ক্ষেত্রটি উল্লেখ করেছেন তা হলো- শিশু, মা এবং কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যের জন্য টেকসই উন্নয়ন সহায়তা এবং অভিবাসীদের স্বাস্থ্য এবং জলবায়ু-স্বাস্থ্য সম্পর্কের সঙ্গে সম্পর্কিত।
তার দ্বিতীয় পরামর্শটি ছিল সকলের জন্য স্বাস্থ্য আইডিসহ একটি আন্তঃ-পরিচালন পদ্ধতি, ডেটা-চালিত স্বাস্থ্য তথ্য সিস্টেম বিকাশে দক্ষতা ভাগ করে নেওয়া।
তিনি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে উপযোগী একটি শক্তিশালী স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প গড়ে তুলতে সহায়তা কামনা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর চতুর্থ আহ্বানটি ছিল দ্রুত বর্ধনশীল স্বাস্থ্য-প্রযুক্তি স্টার্ট আপ সহ স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগ বাড়ানো।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
তার পঞ্চম প্রস্তাবে তিনি জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য পেটেন্ট প্রকাশ এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরের বিষয়ে টিআরআইপি বাধ্যবাধকতা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রজন্ম ইউএইচসি প্রচার করে ইতিহাস পরিবর্তন করতে পারে। আসুন আমরা সকলে এটি সম্ভব করার জন্য হাত একতাবদ্ধ হই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা প্রদান সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী অথচ এসডিজি’র অর্জনযোগ্য লক্ষ্যমাত্রা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা সরকারের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিশেষায়িত মেডিকেল হাসপাতাল পর্যন্ত একটি দেশব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা তৃণমূলে বেসরকারি অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করি।’
তিনি উল্লেখ করেন, স্বাস্থ্য খাতে ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগ লভ্যাংশ দিচ্ছে। সরকার মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি এক লাখ জীবিত জন্মে ১৬৩ জনে নামিয়ে এনেছে। নবজাতকের মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ১৫ এবং পাঁচ বছরের কম বয়সীদের মৃত্যুহার ২৮ জনে নেমেছে।
অধিবেশনে তিনি বলেন,‘শিশুদের টিকাদানের উপর আমাদের জোর প্রচেষ্টায় সার্বজনীন কভারেজ অর্জন করেছে। আমাদের গড় আয়ু এখন ৭৩ বছরের কাছাকাছি।’
শেখ হাসিনা আরও জানান, বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় বিশ্বের অন্যতম সেরা দেশ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ডেঙ্গু মোকাবিলায় হাই অ্যালার্টে কাজ করছি।’ সরকার ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের জন্য উন্নত চিকিৎসা চালু করছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বাইডেনের নৈশভোজে যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ মানবিক ও শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে চিকিৎসা সেবা প্রদানের মান নির্ধারণ করেছে।’
মানসিক স্বাস্থ্য এবং স্নায়বিক রোগের বিষয়ে সরকারের নীতি ও হস্তক্ষেপ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে বলে উল্লেখ কর তিনি বলেন, এটি সাংস্কৃতিকভাবে সংবেদনশীল পদ্ধতিতে প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে।
তিনি বলেন, সরকার অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিতে 'ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচ' প্রচার করছে।
তিনি আরও বলেন,‘আমরা পুষ্টি, দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা এবং ডুবে যাওয়া সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য সুবিধা শূন্য বা সর্বনিম্ন খরচে সেবা প্রদান করে, যা জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশকে কভার করে।
তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি স্বাস্থ্য ব্যয়ের জন্য কেউ কষ্ট পাবে না। একটি প্রশিক্ষিত কর্মী বাহিনী দিয়ে তাদের পরিষেবার গুণমান উন্নত করার দিকে আমাদের দৃষ্টি রয়েছে।’
তিনি বলেন, তার সরকারের পরবর্তী টার্গেট হলো খরচ পরিশোধের জন্য একটি কার্যকর অর্থায়ন মডেল তৈরি করা।
বাংলাদেশে ওষুধের চাহিদার ৯৮ শতাংশ অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের মাধ্যমে পূরণ করা হয় বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সামুদ্রিক সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহারের লক্ষ্যে বিবিএনজে চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ
৫৩৬ দিন আগে