২০৪১ সালে একটি আধুনিক, সুখী-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে বাণিজ্যের আধুনিকায়ন অপরিহার্য। এক্ষেত্রে বাণিজ্য হতে হবে স্মার্ট।
এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘স্মার্ট ট্রেড ফর স্মার্ট বাংলাদেশ: ওয়ে ফরওয়ার্ড’ বিষয়ক এক সেমিনারে ব্যবসায়ীরা একথা বলেন।
রবিবার (৩ মার্চ) বিকাল ৪টায় এফবিসিসিআইর বোর্ড রুমে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্ব অর্থনীতিতে এক উদীয়মান শক্তি। এই টেকসই প্রবৃদ্ধির মূলে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্ব ও সাহসী পদক্ষেপ।
আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ১৭ বছর সময় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী: পলক
সেইসঙ্গে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে গত দেড় দশক ধরে আইসিটি খাতকে উৎসাহিত করার মাধ্যমেই সূচিত হয়েছে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের এক নতুন অধ্যায়।
তিনি আরও বলেন, সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক এবং উদ্ভাবনী প্রাযুক্তিগত সমাধানই হচ্ছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ।’
স্মার্ট ইকোনমি গড়ে তুলতে স্মার্ট কৃষি, স্মার্ট বাণিজ্য, স্মার্ট পরিবহন ব্যবস্থার গুরুত্বের কথা তুলে ধরে মাহবুবুল আলম বলেন, কৃষিক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য পরিবহনে স্মার্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং এসব পণ্য সরবরাহ ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ই-কমার্স ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রচার ও প্রসারের ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডাব্লিউটিও) এলডিসি থেকে উত্তরণের পর যে ধরনের চ্যালেঞ্জে পড়তে পারে তা মোকাবিলায় অন্যতম হাতিয়ার হবে জিআই পণ্য ও প্যাটেন্ট। পণ্যের জিআই সার্টিফিকেট দেওয়ার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো এর রপ্তানি বাড়ানো। তাই ক্রস বর্ডার ট্রেড বাড়াতে জিআই পণ্যগুলো অনেক বেশি ভূমিকা রাখবে।
এফবিসিসিআই’র সহসভাপতি ও ইক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, স্মার্ট অর্থনীতি গড়ে তুলতে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে পণ্য পরিবহন খরচ কমাতে হবে। পণ্য পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। পণ্য মূল্য বেড়ে যাওয়ার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।
দেশের নারী উদ্যোক্তা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাত এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই খাতগুলোর সমৃদ্ধির জন্য গবেষণা ও উন্নয়নে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট বাণিজ্যের কোনো বিকল্প নেই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, পণ্য আমদানি ও রপ্তানিতে এলসি খোলার ক্ষেত্রে এখন বর্তমানে যথেষ্ট শিথিলতা অবলম্বন করা হচ্ছে। আমাদের এখন সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে।
এসময় বিভিন্ন খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্থিতিশীল উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই। কৃষকরা যেন সহজে ও ঝামেলামুক্তভাবে প্রয়োজনীয় সার পান সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ‘স্মার্ট ফার্টিলাইজার ডিস্ট্রিবিউশন অ্যাপ বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি আমরা। এটি কার্যকর করতে পারলে একদিকে যেমন কৃষকের হয়রানি কমবে অন্যদিকে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে।
চতুর্থ শিল্প বিল্পবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনগ্রসর এলাকায় শিল্প কারখানা স্থাপনে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে। পাশাপাশি ব্যবসার জন্য বাধা সৃষ্টি করে এমন কোনো নীতিমালা করবে না সরকার।
আরও পড়ুন: আগা খান একাডেমির মানসম্মত শিক্ষার প্রতিশ্রুতি স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ