তিনি বলেন, ‘আমরা সন্তুষ্ট যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী বছরের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে অংশ নেবেন।’
‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদান’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ জহির (বীরপ্রতীক), বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী জুলিয়ান ফ্রান্সিস এবং সমাজকর্মী অ্যারোমা দত্ত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু: নতুন হাইকমিশনার দোরাইস্বামী
ড. মোমেন বলেন, ডিসেম্বরে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে মিলিত হয়ে বৈঠক করবেন। এ বৈঠকের সম্ভাব্য তারিখ ১৭ ডিসেম্বর।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয় ছিল ‘মুক্ত বিশ্ব’ এবং গণতন্ত্রের জন্য একটি বিশাল জয়।
এ সময় বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন ড. মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাঙালি বীরের জাতি। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এ জাতি বিশ্বে কখনোই পিছিয়ে থাকতে পারে না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে।
‘জাতির পিতার যে স্বপ্ন ছিল আসুন আমরা সেই ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা মুক্ত এবং ধর্ম নিরপেক্ষ সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন করে শপথ গ্রহণ করি,’ বলেন ড. মোমেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযদ্ধে অসামান্য সমর্থনের জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়ে, উন্নত ভবিষ্যতের জন্য আগামীতেও একসাথে চলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হতে সহায়তা করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী।
‘ঐতিহাসিকভাবেই ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। আমরা সভ্যতা, সংস্কৃতি, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বন্ধনে আবদ্ধ,’ বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ইন্দিরা গান্ধী অসাধারণ ধৈর্য এবং পরিপক্কতার সাথে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্রে বহুপক্ষীয় কৌশল অবলম্বন করেছিলেন।
‘একাত্তরের মার্চ এবং অক্টোবরের মধ্যে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ইন্দিরা গান্ধী বিশ্ব নেতাদের চিঠি লিখে ভারতের সীমান্তের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছিলেন,’ বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি আরও জানান, স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনের লক্ষ্যে ইন্দিরা গান্ধী মস্কো, জার্মানি, ফ্রান্স, ব্রিটেন, বেলজিয়াম এবং যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছিলেন।
তিনি ব্রিটেন ও ফ্রান্স উভয়কেই বাংলাদেশের পক্ষে আনার ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছিলেন এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তানপন্থীদের পদক্ষেপে প্রতিবন্ধকতা তৈরিতে সক্ষম হয়েছিলেন।
‘তিনি নিরস্ত্র বেসামরিক বাঙালি জনগণের ওপর পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মম অত্যাচারের বিষয়ে বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করার চেষ্টা করেছিলেন,’ বলেন ড. মোমেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠায় নয়াদিল্লি আমাদেরকে সহায়তা করেছিল।
‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক ভারতীয় সেনা ও জওয়ান মারা গিয়েছিল। তাদের রক্ত স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে মিশে আছে। আমরা কখনোই তাদের ত্যাগ ভুলব না,’ বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।