গত ২৪ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত পাঁচটি দেশে সরকারি সফরে যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার এই পাঁচ দেশ সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।
২৪ থেকে ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাইল্যান্ড সফরে যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ সফরে অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি চুক্তি, জ্বালানি, পর্যটন ও শুল্ক সহযোগিতাবিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরুর লেটার অব ইন্টেন্ট সই করেন।
আরও পড়ুন: গাম্বিয়ায় ওআইসি সম্মেলনে যোগ দেবেন হাছান মাহমুদ
এরপর ২৮ থেকে ২৯ এপ্রিল অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় 'হিউম্যানিটি অ্যাট দ্য ক্রসরোডস : অটোনোমাস উইপনস সিস্টেমস অ্যান্ড দ্য চ্যালেঞ্জ অব রেগুলেশন' শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেন ড. হাছান মাহমুদ।
সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার শ্যালেনবার্গের সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অস্ট্রিয়ার বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং দ্বৈত কর এড়ানোর প্রস্তাবিত চুক্তি, পারমাণবিক শক্তির অ-প্রসারণ ও শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল এটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
এছাড়াও অস্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের নিজস্ব কার্যালয় উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ভিয়েনা সফর শেষে ৩০ এপ্রিল ও ১ মে যথাক্রমে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ও যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজিত স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ব্রাসেলসের অনুষ্ঠানে বেলজিয়ামের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিপক্ষীয় বিষয় সম্পর্কিত মহাপরিচালক রাষ্ট্রদূত জেরোএন কুরম্যান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশীয় প্রশান্ত অঞ্চল ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিকলাস কাভার্নস্টর্মসহ বিশিষ্ট অতিথিরা ছিলেন। অন্যদিকে লন্ডনের আয়োজনে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েল, হাউস অব কমন্সের নেতা পেনি মর্ডান্ট, মন্ত্রী লর্ড তারিক আহমেদ, পরিবেশবিষয়ক ছায়াসচিব স্টিভ রিড, বাংলাদেশবিষয়ক সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের চেয়ারম্যান রুশনারা আলী ছিলেন।
এরপর ৩ থেকে ৫ মে পশ্চিম আফ্রিকার গাম্বিয়ার রাজধানী বানজুলে ১৫তম ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সম্মেলনে ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে, আমরা তাদের সহায়তা দিচ্ছি। ওআইসি সম্মেলন সমাপনীতে আমরা রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় সহযোগিতার জন্য ওআইসি সদস্যদেরকে আহ্বান করেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ১০ জন মন্ত্রী ও সংস্থাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়েও তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মামাদোউ তাংগারা, বিচারমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল দাওদা এ জালও, মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ হাসান শুকরি, মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো সেরি উতামা হাজি, ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেত্নো এল পি মারসুদি, আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেইহুন বাইরামভ, বাহরাইনের বিচারমন্ত্রী নওয়াফ বিন মোহামেদ আল-মাওয়াদেহ, ব্রুনাই দারুস-সালামের সেকেন্ড মিনিস্টার ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্স দাতো সেরি সেইতা হাজি এরউইন, জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের স্থায়ী পর্যবেক্ষক হিসেবে নিযুক্ত রিয়াদ মনসুর, ডিজিটাল কো-অপারেশন অর্গাইনাইজেশনের (ডিসিও) মহাসচিব দিমা আল ইয়াহিয়ার সঙ্গে পৃথক বৈঠকগুলোতে পারস্পরিক সহযোগিতার পাশাপাশি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ নিয়ে আলোচনার কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ড সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী
কপ২৯ সম্মেলনে জলবায়ু সহনশীলতা অ্যাডভোকেসি জোরদার করবে বাংলাদেশ: পরিবেশমন্ত্রী