চলতি বছরের বসন্তে বসটনের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হওয়া ১২৭জন নারীর ওপর জরিপ চালিয়ে গবেষণাটি করা হয়। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত এ গবেষণাটি করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেল্থের অর্থায়নে।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ওই সমস্ত গর্ভবতী নারীদের মধ্যে ৬৪ জনের করোনা পজেটিভ ছিল। তবে পরবর্তীতে তাদের গর্ভে জন্ম নেওয়া নবযাতকদের মধ্যে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: করোনায় যুক্তরাজ্যে গর্ভবর্তী নার্সের মৃত্যু, সুস্থ রয়েছে তার সন্তান
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিস কেনেডি শ্রিভার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেল্থ অ্যান্ড হিউম্রান ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ডায়ানা বিয়াঞ্চি বলেন, এ গবেষণাটি আবারও আশ্বস্থ করল যে, মা গর্ভবতী হলেও নবযাতকের করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও গবেষণা হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) তথ্য অনুসারে, বর্তমানে অন্যান্য নারীদের তুলনায় গর্ভবতী নারীরা করোনাভাইরাসের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে বলে মনে করা হচ্ছে। করোনা আক্রান্ত নারীরা সময়ের আগে জন্ম দেওয়াসহ নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে পারে বলেও শঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা: গর্ভবতী নারীদের নমুনা আগে পরীক্ষার নির্দেশ
তবে স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, করোনায় আক্রান্ত মায়েদের ক্ষেত্রে নবজাতকদের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি সম্পর্কে এখনও অনেক কিছুই অজানা। জন্মের পরে নবজাতকের মধ্যে ভাইরাস পজিটিভ পাওয়ার উদাহরণ রয়েছে। তবে সেটি মায়ের গর্ভ থেকেই পজিটিভ নিয়ে জন্ম, নাকি জন্ম হওয়ার পর সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে সংক্রমিত, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় (জেএইচইউ) থেকে প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বব্যাপী আরও ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে আরও ৬ লাখ মানুষের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭,৩৫৯
জেএইচইউ এর তথ্য অনুযায়ী, মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ১৫ হাজার ৮১৫ জনে। মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ছিল ১৭ লাখ ১ হাজার ৬৫৬ জন।
এছাড়া করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৭৯ লাখ ৫৫ হাজার ৭৪৯ জনে। মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল ৭ কোটি ৭৩ লাখ ৩৫ হাজার ৪৪২ জন।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। চলতি বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে মহামারি ঘোষণা করে। এর আগে ২০ জানুয়ারি জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
আরও পড়ুন: করোনা: বিশ্বে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার মানুষের মৃত্যু
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত এক কোটি ৮২ লাখ ১৭ হাজার ১৫৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মোট ৩ লাখ ২২ হাজার ৫৮৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজারেরও অধিক মানুষ মারা গেছেন। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র দুটি করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে। ফাইজারের পর গত সপ্তাহে মর্ডানার ভ্যাকসিনও অনুমোদন দেয় দেশটির কর্তৃপক্ষ।
পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারত রয়েছে করোনায় আক্রান্ত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে এবং মৃত্যু নিয়ে আছে তৃতীয় অবস্থানে। ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল আক্রান্ত দেশের তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকলেও সর্বাধিক মৃতের সংখ্যায় রয়েছে দ্বিতীয়তে।