রবিবার (২০ নভেম্বর) থেকে কাতারে শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপ ফুটবল। চার বছর পর এই আয়োজনকে ঘিরে মেতে ওঠেন পুরো বিশ্বের ফুটবল ভক্তরা। বাংলাদেশেও এ থেকে পিছিয়ে নেই।
বিশ্বকাপের সময় পতাকা টাঙানো থেকে শুরু করে বড়পর্দায় আয়োজন করে খেলা দেখা সবই হয় এখানে।
দেশের তারকারাও বিশ্বকাপের সময়টা নিজেদেরে পছন্দের দল নিয়ে নানান আলোচনায় মেতে ওঠেন।
সঙ্গীতশিল্পী আসিফ আকবর এরইমধ্যে তার ফেইসবুক পেজে একটি পোস্ট করেছেন।
লেখাটি পাঠকদের জন্য নিচে তুলে ধারা হলো।
আরও পড়ুন: আসিফ আকবরের মুক্তি দাবিতে মানববন্ধন
১৯৮২ সালে ক্লাস ফোরে পড়ি। বাসায় ছয় চ্যানেলের সাদাকালো ফিলিপস টিভি। রাত জেগে খেলা নিয়ে আব্বার কোন অবজেকশন নেই, এদিকে আম্মাও ব্রাজিল সাপোর্টার। তিনি খেলা দেখেন, সঙ্গে আমরাও। বাসায় লোকজন ভরপুর একটা উৎসবমুখর পরিবেশ। বেগম জার্মানির সাপোর্টার হলেও ব্রাজিলের প্রতি দুর্বল, রণ সরাসরি ব্রাজিল।
রুদ্র মেসি সাপোর্টার হলেও বেসিক ব্রাজিল। আমার মেয়ে রঙ্গন ছোট হলেও ওর ম্যাচুরিটি বলে সেও ব্রাজিল সাপোর্টার।
ভাইবোনদের মধ্যে ইতালী জার্মানি আর ইংল্যান্ডের আনকমন সাপোর্টারদের অকার্যকর উপস্থিতি সহনীয় পর্যায়েই আছে।
আর্জেন্টিনার কোন সাপোর্টার নেই ঘরে, কষ্টদায়ক ব্যাপার একটু।
শনিবার খবর পেলাম বৌমা ঈশিতা আর্জেন্টিনা সমর্থক, অবশ্য এই বিষয় নিয়ে তার ব্রাজিলিয়ান হাজবেন্ডের সঙ্গে এখনো সাংঘর্ষিক কোন কিছু দৃশ্যমান হয়নি। শ্বশুর হিসেবে আমি স্বাগত জানিয়েছি। চার বছর পরপর ফুটবল বিশ্বকাপ ফিরে আসে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ আখ্যা নিয়ে।
ক্রিকেট খেলা শিখেছি, নিজে স্পোর্টিং মেন্টালিটির। ইদানীংকালে খেলাধুলার মূল স্পিরিট অভদ্র লেভেলের তর্কে পৌঁছে গেছে। সমর্থকদের আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে প্রতিমুহূর্তে স্পোর্টিং স্পিরিট নিহত হচ্ছে।
অথচ বিশ্বভ্রাতৃত্বের সিম্বলিক যথার্থতা খোঁজা হয় বিশ্বসেরা এসব টুর্নামেন্টে।
আমার আশেপাশে আর্জেন্টাইন সাপোর্টারের সংখ্যা আশঙ্কাজনক।
জার্মানি ইতালীর কিছু জেনুইন সাপোর্টারও ফসিল হিসেবে টিকে আছে।
আজকে আর্জেন্টাইন বন্ধুদের কাছে মুচলেকা দিয়েছি-ব্রাজিল ভাল না খেললেও তাদের সঙ্গে অসৌজন্যতা করবো না। যদি করি তাইলে তারা বাসায় খেলা দেখবে, আমাকে বয়কট করবে।
এই ধরনের হুমকির মুখে আরও স্পোর্টিং হওয়ার শপথ নিতেই হয়েছে।
আসুন বিনোদিত হই, খেলাকে খেলা হিসেবেই নেই, অনেক কাহিনীতে জর্জরিত বিশ্বে একটু আনন্দিত থাকি। আনন্দ করুন, সমালোচনা করুন, মজা করুন, স্মার্ট সমর্থক হিসেবে অন্য দলের সমর্থকদেরও সম্মান দিন।
যে কোন স্পোর্টস নিছক বিনোদন নয়, জীবনযুদ্ধের বৈশ্বিক কাঠিন্যের বিরুদ্ধে কিছুটা আনন্দ পাবার জন্য এক মহাবিদ্রোহ।
পরষ্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা বা শত্রুতা তৈরির ক্ষেত্র নয়। তাই আর কোন মূর্খতা নয়, বি স্পোর্টিং।
আরও পড়ুন: প্রকাশ হলো আসিফ আকবরের জীবনীগ্রন্থ