সোমবার নিউ মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, গুলিস্তান, পল্টন, শান্তিরনগর, মৌচাক ও পল্টন এলাকার বিভিন্ন শপিং মল ও মার্কেটে ঘুরে দেখা যায় সবখানে ক্রেতাদের প্রচণ্ড আনাগোনা।
ব্যবসায়ীরা বেচাবিক্রির পরিমাণে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও ক্রেতারা উচ্চ মূল্য নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন।
ইজি, আড়ং, ইস্টেসি, দর্জিবাড়ি, ইনফিনিটি, রেক্স ও প্লাস পয়েন্টের মতো দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো ঈদের নতুন কালেকশন নিয়ে আসায় তাদের আউটলেটগুলোতে বিপুল ভিড় তৈরি হয়েছে।
এপেক্স, বে, বাটা, লোট্টো ও ক্রিসেন্টের মতো জুতার ব্র্যান্ডগুলোও লোভনীয় অফার ও নতুন কালেকশন দিয়ে ক্রেতাদের ভিড় জমিয়েছে।

বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে আসা বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক নুর মোহাম্মদ বলেন, তিনি ২,৭০০ টাকায় পাঞ্জাবি এবং ১,৩০০ টাকায় টি-শার্ট কিনেছেন।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অধিক দামে পণ্য বিক্রি করছে জানিয়ে তিনি এসব নিয়ন্ত্রণ করতে বাজার পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা রাখার দাবি জানান।
শান্তিনগরের ইজি ফ্যাশন লিমিটেডের বিক্রয় কর্মকর্তা সোহেল মাহমুদ ইউএনবিকে জানান, তাদের নতুন পণ্যগুলোর চাহিদা অনেক বেশি।
‘আমরা ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি। আমাদের শাখায় পাঞ্জাবি ১,৬৯০-২,৪৮০, শার্ট ১,৩৫৫-১,৫৮০, টি-শার্ট ৫৮০-৯৯০, জিন্স প্যান্ট ২,২৮০-২,৪৮০ ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট ১,৪৮০-১,৯৯০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে,’ বলেন তিনি।

পুরান ঢাকার এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজিনুর রহমান বলেন, পুরো মাস ছুটি কাটানোর পর তিনি থ্রি -পিস ও শাড়ির সাথে মিলিয়ে কসমেটিকস ও অন্যান্য সামগ্রী কিনতে কয়েকটি মার্কেট ঘুরেছেন।
তবে তিনি ভেজাল ও নিম্নমানের কসমেটিকস নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেন। তিনি এসব অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে দাবি জানান।
প্লাস পয়েন্টের মৌচাক শাখার বিক্রয়কর্মী ইমরান হোসেন জানান, তারা ১,৩৮০-১,৪৮০ টাকায় শার্ট ও ৫৮০-৯৮০ টাকায় টি-শার্ট বিক্রি করছেন।
‘আমরা মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে বিকাশ অ্যাপে ১০ শতাংশ এবং স্বাভাবিকভাবে বিকাশে ৫ শতাংশ ছাড় দিচ্ছি। ক্রেতাদের সমাগম নিয়ে আমরা খুশি,’ যোগ করেন তিনি।

এপেক্স ফুটওয়্যারের বিক্রয়কর্মী আমিনুল ইসলাম জানান, ঈদ উপলক্ষে তারা প্রায় ৫০০ ধরনের নতুন পণ্য নিয়ে এসেছেন।
‘আমরা এ বছর মূল্য পরিশোধে নেক্সাস পে-তে ৩০ শতাংশ, রকেটে ২০ শতাংশ, এনআরবি ব্যাংকের কার্ডধারীদের ১৫ শতাংশ এবং যমুনা ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক ও ইউসিবি ব্যাংকের গ্রাহকদের ১০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছি,’ বলেন তিনি।
সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম আরেফিন বলেন, রমজানের দ্বিতীয় সপ্তাহে তিনি পরিবারের জন্য পোশাক কিনেছেন। ‘অফিসের কাজের অনেক চাপ থাকায় এ মুহূর্তে কেনাকাটা করতে যাওয়া কঠিন।’
এলিফ্যান্ট রোডে বাচ্চার জন্য পাঞ্জাবি, প্যান্ট ও আরও কিছু পোশাক কেনা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে নতুন কালেকশন আনা অনেক দেশী ব্র্যান্ড ও শাখা রয়েছে। কিন্তু পোশাকের দাম অনেক বেশি। তবে, খুশি যে আজ ঈদের কেনাকাট শেষ করতে পারলাম।’

তাগা ম্যানের চিফ ডিজাইনার খাদিজা রহমান জানান, তারা এ বছর নতুন কালেকশন বিশেষ করে শিশু ও পুরুষদের পোশাকের প্রতি ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাচ্ছেন। ‘আমরা মধ্যম-আয়ের ক্রেতাদের লক্ষ্য করে পণ্য উৎপাদন করি। আমাদের পাঞ্জাবি ২,০০০-৫,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ক্রেতাদের কাছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়েছে।’
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন ইউএনবিকে বলেন, এবারের ঈদে তারা ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার পোশাক ও জুতা বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন।