চট্টগ্রামের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র নতুন ফিসারিঘাটে প্রতিদিন সকাল-বিকাল ইলিশ বোঝাই ট্রলার ভিড়ছে। এখন রীতিমতো ইলিশে সয়লাব ফিশারিঘাট। বঙ্গোপসাগর থেকে ফিশিং ট্রলারে ইলিশ নিয়ে জেলেরা ঘাটে আসছেন। জেলে, ব্যাপারি আর পাইকারি ক্রেতাদের ভিড়ে মুখর হয়ে আছে ঘাট। কিন্তু ইলিশে সয়লাব হলেও দাম এখনও সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে রয়ে গেছে।
কোতায়ালির ফিসারিঘাট ও কাট্টলি এলাকার সমুদ্র তীর এবং আনন্দবাজার এলাকায় জেলেদের কাছ থেকে প্রতি মণ ইলিশ কেনা হচ্ছে ২০ হাজার টাকা দরে। ৬০০ থেকে ৬২৫ টাকা কেজি দরে পাইকারি কিনে এনে এসব ইলিশ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। প্রতি কেজি ১১ শ থেকে ১২ শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এসব ইলিশ।
ফিসারিঘাট ঘুরে এবং জেলেদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ২৩ জুলাই থেকে ট্রলার নিয়ে জেলেরা গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে বেরিয়ে পড়েন। সোমবার থেকে এসব ট্রলারে মাছ ভর্তি করে কর্ণফুলী নদীর তীরে ফিরছেন জেলেরা। তারা জানান, সমুদ্রে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ছে। ইলিশের আকারও বেশ বড়।
ফিশারিঘাটে ইলিশ নিয়ে আসা এফভি জান্নাত ট্রলারের মালিক ও মাঝি মো. রিদুয়ান জানান, আট দিন আগে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া অংশে মাছ ধরতে যান ২৪ জন জেলে নিয়ে। তিনি দেড় লাখ টাকার ইলিশ মাছ বিক্রি করতে পেরেছেন। বড় তিন মণ ইলিশ এবং ছোট-মাঝারি মিলিয়ে মোট ১২ মণ ইলিশ শিকার করতে পেরেছেন তিনি।
ফিশারিঘাটের সোনালি যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আলী জানান, গভীর সমুদ্র থেকে ফেরত আসা ইলিশ বোঝাই ট্রলার নিয়ে এখন ব্যস্ত হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম নগরীর সবচেয়ে বড় মাছের আড়ত ফিশারিঘাট। নীরবতা কাটিয়ে সরব হয়ে উঠেছে ফিশারিঘাট ও কর্ণফুলি নদী তীরবর্তী জেলে পাড়াগুলো।
তিনি জানান, জেলেদের কাছ থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি মণ কেনা হচ্ছে ২০ হাজার টাকা দামে। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি মণ ১৮ হাজার, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি মণ ১৪ হাজার এবং এর চেয়ে ছোট ইলিশ প্রতি মণ ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কিন্তু এসব ইলিশ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। প্রতি কেজি ১১ শ থেকে ১২ শ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে এসব ইলিশ। আর আড়তে বড়, মাঝারি ও ছোট সাইজের লইট্টা মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে। মাইট্টা মাছ কেজি প্রতি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, চইক্ক্যা মাছ কেজি প্রতি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে ফিশারিঘাটে।
ফিসারিঘাটের বাবুল সরকার আড়তের ম্যানেজার মো. মানিক বলেন, মাছের ট্রলার ফিসারিঘাটে আসার পর মাছ আড়তে তুলে প্রকাশ্যে নিলামে পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয়। এখন ইলিশের ব্যাপক চাহিদা থাকাতে দাম একটু বেশি হলেও দুই-এক দিন পর দাম কমতে শুরু করবে বলে জানান তিনি।