ইলিশ
সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজবাড়ীতে চলছে ইলিশ শিকার
সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজবাড়ীতে ইলিশ শিকার করছে এক শ্রেণির অসাধু জেলে ও সৌখিন মৎস্য শিকারিরা। রাজবাড়ীর ৪২ কিলোমিটার পদ্মা নদীর অংশে জেলা টাস্কফোর্স কমিটি নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করলেও তাদের আড়ালে মাছ ধরছে জেলেরা। রাজবাড়ী সদর উপজেলার ধাওয়াপাড়া থেকে গোয়ালন্দ উপজেলার বাহির চর দৌলতদিয়া পর্যন্ত পদ্মা নদীর পাড়েই প্রকাশ্যে এসব ইলিশ বিক্রি চলছে।
মা মাছ রক্ষায় ও মাছের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য এ সময় মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বাড়তি লাভের আশায় ইলিশ শিকার করছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। পদ্মা নদীর পাড় থেকে তারা ইলিশ কিনে গ্রাম ঘুরে বিক্রি করছেন। আবার অনেকে ‘হোম ডেলিভারি’ও দিচ্ছেন।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সদর উপজেলার উড়াকান্দা, বরাট অন্তারমোড়, গোয়ালন্দের দেবগ্রামের তেনাপচা ও দৌলতদিয়া কলাবাগান এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে ইলিশ শিকার ও বিক্রির সত্যতা পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ২০০ কেজি ইলিশ জব্দসহ ২২ জেলে আটক
সদর উপজেলার বরাট ইউপির অন্তারমোড়ে দেখা যায়, নদীতে অসংখ্য জেলে নৌকায় মাছ শিকার করছেন। এর এক কিলোমিটার দূরে দেব গ্রামের তেনাপচায় নদীর পাড়ে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের ভিড়। নদী থেকে মাছ নিয়ে জেলেরা আসলেই ক্রেতা, ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। প্রতিটি নৌকায় ১০ থেকে ৩০ কেজি করে ইলিশ দেখা যায়।
দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট এলাকায় পদ্মা নদীতে নৌকা দেখা না গেলেও ঘাট থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার ভাটিতে বাহির চর কলাবাগান এলাকায় সারি সারি নৌকা দেখা যায়। নদী থেকে মাছ ধরে জেলেরা কলাবাগান এলাকার নালায় গিয়ে বিক্রি করছে।
স্থানীয়রা জানায়, ২০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, ৪০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং ৯০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ইলিশ এক হাজার থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কেজি প্রতি ১০০ গ্রাম করে তারা বাড়তি ছাড় পাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা গ্রাম ঘুরে কেজি প্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি দরে বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন।
দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এমরান মাহমুদ তুহিন বলেন, ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে মৎস্য বিভাগকে সহযোগিতা করছেন। প্রকাশ্যে ইলিশ শিকার ও বিক্রির বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজীব বলেন, ৪২ কিলোমিটার পদ্মা নদীপথের মধ্যে ধাওয়া পাড়া থেকে বাহির চর দৌলতদিয়া পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার এলাকা রয়েছে। জনবল স্বল্পতার কারণে এতবড় এলাকায় অভিযান চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সকালে, দুপুরে ও সন্ধ্যার পর পৃথক ভাগ করে অভিযান চালানো হচ্ছে।
একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত আসা যাওয়ার ফাঁকে জেলেরা নেমে পড়েন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, অভিযান চালাতে সরকারিভাবে ২২ দিনের জন্য মাত্র ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ মিলেছে। অথচ এই অভিযানে প্রতিদিন শুধুমাত্র ট্রলারভাড়া, জ্বালানিসহ অন্যান্য খরচ মিলে ১০ হাজার টাকার বেশি লাগছে। পাশাপাশি নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার না থাকায় অভিযানকালে ম্যাজিস্ট্রেটের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয়।
এসব সমস্যা সমাধান হলে ২৪ ঘণ্টা নির্বিঘ্নে অভিযান চালানো সম্ভব বলে জানান মৎস্য কর্মকর্তা।
ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিনের জন্য দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইলিশ শিকার, আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় এবং বিনিময় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ, দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন অমান্য করলে কমপক্ষে এক থেকে দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা ৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড রয়েছে।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইলিশ ধরায় ৯ জেলের কারাদণ্ড
১ মাস আগে
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইলিশ ধরায় ৯ জেলের কারাদণ্ড
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জের পদ্মায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইলিশ ধরার অপরাধে ৯ জেলেকে আটক করে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) দিনব্যাপী পদ্মা নদীতে অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়। এ সময় জেলেদের কাছে থাকা দুটি মাছ ধরার নৌকা ও ৪০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়।
আরও পড়ুন: জবি শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগে ভিক্টর ক্লাসিকের ১২ বাস আটক
আটক জেলেদের প্রত্যেককে ১৫ দিনের করে কারাদণ্ডাদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আর জব্দ করা কারেন্ট জালগুলো পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ইলিশ রক্ষায় নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রত্যেককে ১৫ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এসময় জেলেদের কাছ থেকে দুটি নৌকা ও ৪০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরার অপরাধে ৯৪ জেলের কারাদণ্ড
২ মাস আগে
ঝালকাঠিতে ইলিশ ধরায় ২ জেলেকে কারাদণ্ড
ঝালকাঠিতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ শিকার করার অপরাধে দুই জেলেকে এক বছর করে কারাদণ্ড ও একইসঙ্গে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াসমিনের ভ্রাম্যমান আদালত জেলে মো. মেহেদী ও জিয়া খানকে এই দণ্ড দেন।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাত থেকে শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে অভিযান চালানো হয়।
আরও পড়ুন: নাটোরে স্কুলছাত্রীকে অপহরণের দায়ে যুবককের কারাদণ্ড
জেলা মৎস কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণে সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে মোবাইল কোর্ট চালিয়ে মো. মেহেদী ও জিয়া খান নামে দুই জেলেকে আটক করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
এ সময় ২৫ হাজার মিটার জাল, ১৫ কেজি মাছ ও একটি নৌকা জব্দ করা হয়। মাছগুলো বিভিন্ন এতিম খানায় বিতরণ করা হয়। আটক জাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করে এবং নৌকা ভেঙে ধ্বংস করা হয়।
ইলিশ সম্পদ রক্ষায় জেলা প্রশাসন ও মৎস বিভাগের এ অভিযান ৩ নভেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানান মৎস কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম।
আরও পড়ুন: হত্যা মামলার ১৩ বছর পর ১৬ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
২ মাস আগে
বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৪৭৯ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১০টি চালানে ভারতে রপ্তানি হয়েছে ৪৭৯ মেট্রিক টন ইলিশ।
বুধবার (৯ অক্টোবর) রাত ৮টা পর্যন্ত ৭টি ট্রাকে ২২ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ২০টি ট্রাকে ৫৪ মেট্রিক টন, শনিবার ১৫টি ট্রাকে ৪৫ মেট্রিক টন, রবিবার ৬টি ট্রাকে ১৯ মেট্রিক টন, সোমবার ৩০টি ট্রাকে ৮৯ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৯টি চালানে ভারতে ৪৫৯ টন ইলিশ রপ্তানি
এছাড়া মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) ২৩টি ট্রাকে ৬৯ মেট্রিক টন, বৃহস্পতিবার ৩০টি ট্রাকে ৯২ মেট্রিক টন, শনিবার ১৩টি ট্রাকে ৪২ মেট্রিক টন, সোমবার ৮টি ট্রাকে ২৩ মেট্রিক টন, মঙ্গলবার ৮টি ট্রাকে ২৪ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণার ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশের মধ্যে ভারতে গেল ৪৭৯ টন ইলিশ। ১০টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ১৫৭টি ট্রাকে করে ইলিশের এই চালানগুলো রপ্তানি করেছে। প্রতি কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ১০ মার্কিন ডলারে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ হাজার ১৮০ টাকা।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বেনাপোল মাছ বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক কেজির নিচে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩০০ টাকা।
এক কেজির ওপরে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। অথচ একই ইলিশ প্রায় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কমে ভারতে রপ্তানি হচ্ছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা আসওয়াদুল বলেন, ইলিশ রপ্তানির পরিপত্রটি কয়েক বছর আগের। তবে দেশীয় বাজারদরের সঙ্গে সমন্বয় হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
বেনাপোল চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, সর্বশেষ বুধবার রাতে ৭টি ট্রাকে করে ২২ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে। এ নিয়ে মোট ১০ চালানে ভারতে গেছে ৪৭৯ টন ইলিশ।
আরও পড়ুন: বেনাপোল দিয়ে ৭ চালানে ভারতে গেল ৪১০ মেট্রিকটন ইলিশ
বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ২ দিনে ভারতে ৯৯ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি
২ মাস আগে
বেনাপোল দিয়ে ৭ চালানে ভারতে গেল ৪১০ মেট্রিকটন ইলিশ
বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৭ চালানে ভারতে গেল ৪১০ মেট্রিক টন ইলিশ।
এরমধ্যে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ২০ ট্রাকে ৫৪ টন, গত শনিবার ১৫ ট্রাকে ৪৫ টন, গত রবিবার ৬ ট্রাকে ১৯ টন, গত সোমবার ৩০ ট্রাকে ৮৯ টন।
মঙ্গলবার ২৩ ট্রাকে ৬৯ টন, বৃহস্পতিবার ৩০ ট্রাকে ৯২ টন এবং আজ শনিবার সন্ধ্যার পর ১৩ ট্রাকে করে ৪২ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে।
আরও পড়ুন: সারাদেশে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ ২২ দিন: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ১০ ডলার। যা বাংলাদেশি ১ হাজার ১৮০ টাকা দরে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, ইলিশ রপ্তানির পরিপত্রটি কয়েক বছর আগের। তখনকার বাজারদরের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি কেজি ইলিশ ১০ ডলার রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই পরিপত্র অনুযায়ীই ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে। তবে দেশীয় বাজারদরের সঙ্গে মিল রেখে ইলিশের দাম সমন্বয় হতে পারে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ডেপুটি ডিরেক্টর রাশেদুল সজিব নাজির বলেন, বেনাপোল দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) থেকে শনিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত ৭ চালানে ভারতে গেল ৪১০ মেট্রিক টন ইলিশ।
তিনি আরও বলেন, রপ্তানিকারকদের আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানি শেষ করতে হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ২ দিনে ভারতে ৯৯ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি
২ মাস আগে
ইলিশ রপ্তানি বন্ধে হাইকোর্টে রিট
দেশ থেকে স্থায়ীভাবে জাতীয় মাছ ইলিশ রপ্তানি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে এবার হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদনটি করেন আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।
রিটে বাণিজ্য সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর ও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে।
এছাড়া ইলিশ রপ্তানি থেকে বিরত থাকতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, সে প্রশ্ন তুলে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে রিটে।
সেইসঙ্গে উপযুক্ত বা সাশ্রয়ী দামে দেশে ইলিশ মাছ বিক্রির ব্যবস্থা করতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিবের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
ইলিশ রপ্তানি বন্ধে এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর বিবাদীদের আইনি নোটিশ পাঠান আইনজীবী মাহমুদুল হাসান। নোটিশ পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে ইলিশ রপ্তানি স্থায়ীভাবে বন্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছিলেন। নইলে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট আবেদন করার কথা বলা হয়েছিল সে নোটিশে।
কিন্তু এ নোটিশ দেওয়ার ৩ দিনের মাথায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভারতে দ্বিতীয় দফায় আরও ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: ভারতে রপ্তানির খবরে বেড়েছে ইলিশের দাম
দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৪ সেপ্টেম্বর প্রথম দফায় দুই হাজার ৪৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয়। ভারতে রপ্তানির জন্য দুই দফায় মোট দুই হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
রিটকারী আইনজীবী মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বিবাদীদের কাছ থেকে নোটিশের জবাব না পেয়ে ও ইলিশ রপ্তানি বন্ধে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ চোখে না পড়ায় রিট আবেদনটি করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এখতিয়ার সম্পন্ন বেঞ্চে রিটটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।’
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। কিন্তু বর্তমানে ইলিশ মাছের অত্যাধিক দামের কারণে বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী এই মাছ কেনার কথা চিন্তাও করতে পারে না। মধ্যবিত্তরাও এই ইলিশ মাছ কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। বাজারে ইলিশ মাছের গড় দাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি। পদ্মার ইলিশের দাম গড়ে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি। কিন্তু বাজারে পদ্মার ইলিশ পাওয়া যায় না বললেই চলে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেশের মানুষের চাহিদার কথা চিন্তা না করে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে দেশের বাজারে ইলিশের দাম আরও বেড়েছে। আরও দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে দেশের বাজারের চেয়ে কম দামে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশের রপ্তানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী ইলিশ মুক্তভাবে রপ্তানিযোগ্য পণ্য নয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ অনায্যভাবে, জণগণের স্বার্থ উপেক্ষা করে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরা ও বিক্রি বন্ধ
দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে এবার প্রায় ৫ হাজার টন ইলিশ মাছ রপ্তানির পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেতে এরই মধ্যে শতাধিক প্রতিষ্ঠান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। তা থেকে পর্যায়ক্রমে ৫৯টি প্রতিষ্ঠানকে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
আগামী ১ অক্টোবর থেকে দুর্গাপূজা শুরু। সাধারণত দুর্গাপূজা উপলক্ষেই ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হয়।
২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত রপ্তানি বন্ধ থাকলেও ২০১৯ থেকে দেশটিতে আবার ইলিশ রপ্তানি চালু করা হয়।
গত বছর ভারতে ১ হাজার ৪০০ টন ইলিশ রপ্তানি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতির প্রতিবাদে অন্তর্বর্তী সরকারকে আইনি নোটিশ
২ মাস আগে
ভারতে রপ্তানির খবরে বেড়েছে ইলিশের দাম
ভারতে রপ্তানির খবরে আরও বেড়েছে জাতীয় মাছ ইলিশের দাম। তাই মধ্য ও নিম্নবিত্তের নাগালের বাইরে চলে গেছে ইলিশ। দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিবছরই ইলিশ রপ্তানি করা হয়। তবে এ বছরও সরকার ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করার অনুমতি দিয়েছে। যার ফলে রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশে ইলিশের দাম ক্রমাগত বাড়ছে, যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য একটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) পটুয়াখালী জেলার পৌর নিউমার্কেট মৎস্য বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে ইলিশের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এর ফলে ইলিশের দাম ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। কিছুদিন আগে ১ কেজি ইলিশের দাম ছিল ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। বর্তমানে তা ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকায় পৌঁছেছে। অন্যদিকে ১ কেজি ৫০০ গ্রাম বা দেড় কেজি মাছের দাম ১ হাজার ৮০০ টাকা। ঝাটকা ৬৫০ টাকা। ছোট ঝাটকা ৫০০ টাকা করে চলছে।
আরও পড়ুন: ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরা ও বিক্রি বন্ধ
এক ক্রেতা বলেন, বর্তমানে ইলিশ কেনার সামর্থ্য হারাতে বসেছি। দাম এত বেশি যে, কিনতে গেলে সাধারণ পরিবারের বাজেটেই টান পড়ে।
মাছ বিক্রেতা মো. খোকন বলেন, রপ্তানির কারণে বাজারে ইলিশের সরবরাহ কমে যাওয়ায় তারা বেশি দামে মাছ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এর পাশাপাশি, পরিবহন ও অন্যান্য খরচও বেড়েছে বলে জানান তিনি।
তবে ব্যবসায়ীদের একাংশ মনে করেন, বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়াতে সরকার উদ্যোগ নিলে দাম কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে।
এ বিষয়ে এক মৎস্য আড়ৎদার জানান, ভারতে ইলিশ রপ্তানির ফলে দেশীয় বাজারে ইলিশের দাম বৃদ্ধির প্রভাব সাধারণ মানুষের ওপর পড়ছে। সরকার যদি দ্রুত পদক্ষেপ নেয় ও বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশের সরবরাহ নিশ্চিত করে, তবে ক্রেতাদের ভোগান্তি কিছুটা কমবে।
মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, আবহাওয়ার প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে বিগত ২০-২৫ দিন গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ বন্ধ ছিল। তাই আলিপুর, মহিপুর বন্দরে মাছ কম এসেছে। আবহাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় কিছুদিনের মধ্যে বাজারে মৎস্য সরবরাহ বাড়বে। খুব তারাতারি ইলিশের দাম কমবে ও মানুষের ক্রয়ক্ষমতার ভেতরে চলে আসবে।
ভোক্তা অধিদপ্তর জানায়, নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছেন তারা। অস্বাভাবিক মূল্যে বিক্রয়ের কোনো প্রমাণ পেলে তারা আইন অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতির প্রতিবাদে অন্তর্বর্তী সরকারকে আইনি নোটিশ
ভারতের ‘বিশেষ অনুরোধে’ ইলিশ রপ্তানির অনুমতি: মৎস্য উপদেষ্টা
২ মাস আগে
ভরা মৌসুমেও খুলনার বাজারে দেখা মিলছে না ইলিশের, দামও চড়া
খুলনা, ৩০ আগস্ট (ইউএনবি)- ইলিশের ভরা মৌসুমেও খুলনা বাজারে নেই ইলিশ। দুই-একটা মিললেও তার দাম বেশ চড়া। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাছের আড়তে ইলিশ মাছ নেই। যদি পাওয়া যায়ও দাম অনেক বেশি হওয়ায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।
খুলনার বিভিন্ন মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ বাজারে ইলিশ মাছ নেই। আর যা আছে তার দাম অনেক চড়া। খুলনা ইলিশ ঘাট বলে পরিচিত ৪ নম্বর ঘাট এলাকায় ইলিশ ব্যবসায়ীদের কাছেও ইলিশের মজুদ খুবই কম।
৪ নম্বর ঘাট এলাকার সর্ববৃহৎ ইলিশ ব্যবসায়ী আবু সাঈদ। চার পুরুষ ধরে ইলিশ ব্যবসা করেন তিনি। আবু সাঈদ বলেন, ‘এবারের মতো ইলিশের আকাল আর কখনো হয় নাই। আগে যেখানে তার ভাণ্ডারে প্রতিদিন সাগর ও বরিশাল এলাকা থেকে ২ থেকে ৩শ মণ ইলিশ আসত। এবার সেখানে ৩ থেকে ৪ মণের মতো ইলিশ আসছে। আর যেগুলো আসছে সেগুলোর ইলিশের সাইজ ছোট, আবার দামও বেশি।’
নগরীর সন্ধ্যা বাজার এলাকায় দেখা যায় দাম বেড়েছে ইলিশ মাছের। ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা, ৯০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ইলিশের দাম ১৫০০ থেকে ১৬৫০ টাকা। ১ কেজি ২০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ৩০০ গ্রাম ইলিশের কেজি ২ হাজার থেকে ২২০০ টাকা।
আরও পড়ুন: খুলনার কাঁচাবাজারে দাম বেড়েছে সবজি-মাছের, কমেছে মাংসের
গল্লামারী বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আফজাল বলেন, ‘আগের তুলনায় দাম একটু বাড়তি। মূলত আড়তে নেই ইলিশ মাছ। এখন নদ-নদী-সাগরে যদি জেলেরা ইলিশ মাছ না পেয়ে থাকে তাহলে দাম বাড়তি থাকবে। গেল ১ সপ্তাহ আগেও মাছের দাম কিছুটা কম ছিল।’
বাজারে মাছ কিনতে আসা লিপি বলেন, ‘আমি এসেছিলাম কিছু ইলিশ মাছ কিনতে কিন্তু যে দাম তাতে ইলিশ মাছ কেনা সম্ভব না। এখনতো বাজারে কোনো সিন্ডিকেট নেই বা দেশের বাহিরে কোনো মাছ রপ্তানি হচ্ছে না। তারপরও দাম বেশি।’
খুলনা নিরালায় বাজার করতে আসা মনোজ বলেন, ‘এবছর ছেলে-মেয়েদের ইলিশ খাওয়াতে পারি নাই। শুধু বাজারের এমাথা থেকে ওমাথা ঘুরছি।’
বরিশালের বড় গভীর নদ-নদীগুলোতে চর পড়ে যাওয়া ইলিশ মাছ কম আসছে বলে জানান খুলনার রূপসা বাজারের আড়তদার নয়ন।
খুলনা মৎস্য অধিদপ্তর জেলা কর্মকর্তা জয়দেব পাল জানান, এবছর বৃষ্টিপাত হলেও যে পরিমাণ মাছ আসার কথা, ঠিক সেই পরিমাণ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। নদীর গভীরতা কমে যাওয়ার পাশাপাশি বৃষ্টিপাত কম থাকাসহ মাছ ধরতে না পারা মাছের স্বল্পতার কারণ হতে পারে।
আরও পড়ুন: মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ সংকট, বিপাকে জেলেরা
৩ মাস আগে
মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ সংকট, বিপাকে জেলেরা
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর পাঁচ সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না।
জেলেরা হতাশ হয়ে ফিরছেন নদী থেকে। তাদের অধিকাংশই ঋণ পরিশোধ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
জেলেরা জানান, ইলিশের আশায় তারা নদীতে গেলেও তাদের খরচের টাকা উঠছে না। উপরন্তু বাড়ছে এনজিও ও মহাজনের ঋণের বোঝা। এছাড়া এ পেশা ছেড়ে দেওয়ার কথাও বলছেন কেউ কেউ।
আরও পড়ুন: ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করছে: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, নদীর পানি আরেকটু বাড়লে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাবে।
স্থানীয়রা জানান, ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদী থেকে দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ ইলিশ আহরণ করা হলেও এবার ভরা বর্ষায় জেলেদের জালে পর্যাপ্ত ইলিশ নেই। যে পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছে তা দিয়ে ট্রলারের ইঞ্জিনের তেলের দামসহ অন্যন্য খরচও উঠে না।
ভোলার মেঘনা নদীর ইলিশা ও তুলাতুলি মাছঘাটে গিয়ে দেখা যায়, আড়তদারদের মাছের বাক্সগুলো খাঁ খাঁ করছে। জেলার প্রায় অর্ধশতাধিক ছোট বড় ঘাটের এখন এমন অবস্থা। জেলেদের পাশপাশি আড়তদাররাও রয়েছেন বিপাকে।
মাছের আড়তদাররা জানান, জেলেসহ তারাও বিপাকে দিন কাটাচ্ছেন। নদীতে ইলিশের সংকট থাকায় তারাও দেনায় জড়িয়ে পড়ছেন।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে কমেছে ইলিশের দাম
৫ মাস আগে
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করছে: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করছে এবং ইলিশ বেড়ে উঠার পথে কোনোভাবেই যাতে বাধা সৃষ্টি না হয় সেজন্য যা যা করা দরকার তা করা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘এ বছর জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের কর্মসূচি ১১ মার্চ থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত পালন করা হচ্ছে। ‘ইলিশ হলো মাছের রাজা, জাটকা ধরলে হবে সাজা’ এই প্রতিপাদ্যে আমাদের এবারের কর্মসূচি। এ সময় ইলিশের অভয়াশ্রম সুরক্ষা এবং জাটকা নিধন বন্ধে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। জাটকা আহরণ বন্ধকালে ইলিশ আহরণে জড়িতদের যাতে সমস্যা না নয়, সেজন্য তাদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন শেখ হাসিনা: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
বুধবার (৬ মার্চ) রাজধানীর সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২৪ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে ব্র্যান্ডেড এবং পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম সেরা মাছ ইলিশ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ইলিশের উৎপাদন অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে। আশা করছি- ভবিষ্যতে এটা আরও ব্যাপক আকার ধারণ করবে।
ইলিশ উৎপাদনকারী দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম স্থানে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাটকা রক্ষায় ও মা ইলিশ আহরণ বন্ধে জলে, স্থলে ও আকাশপথে বিভিন্নভাবে মনিটর করা হচ্ছে। ইলিশের অভয়াশ্রমে জাটকা নিধনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, যারা কারেন্ট জাল, বেহুন্দি জালসহ অন্যান্য ক্ষতিকর জাল তৈরি করে জাটকা নিধন করে তাদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা প্রদান ও জরিমানা করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, জাটকাসহ অন্যান্য মৎস্যসম্পদ ধ্বংসকারী অবৈধ জাল নির্মূলে এ বছর বিশেষ কম্বিং অপারেশন পরিচালনা করে ৩০ দিনে ১৭টি জেলায় মোট ৯৩১টি মোবাইল কোর্ট ও ৩ হাজার ৪৭৪টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যার মাধ্যমে- ৭ হাজার ৬৬৯টি বেহুন্দি জাল, ৪৪৮ দশমিক ৭১ লাখ মিটার কারেন্ট জাল এবং ১৯ হাজার ৭৪২টি বেড় জাল, চরঘড়া জাল, মশারি জাল ও পাইজাল আটক করা হয়েছে এবং প্রায় ২৩ লাখ টাকা জরিমানা এবং ১৯২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল প্রদান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা খুব কঠোর অবস্থান নিয়েছি।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাটকা আহরণে বিরত ৩ লাখ ৬১ হাজার ৭১টি জেলে পরিবারকে মাসিক ৪০ কেজি হারে ৪ মাসে ৫৭ হাজার ৭৭১ মেট্রিক টন ভিজিএফ বিতরণ করা হয়েছে। কারণ, আমাদের মৎস্যজীবীদের পরিবারের কথাও মাথায় রাখতে হয়।
আরও পড়ুন: রমজান মাসে কম লাভে পণ্য বিক্রয়ের আহ্বান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর
মন্ত্রী আরও বলেন, ভিজিএফ সহায়তার পাশাপাশি জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩১ হাজার ৭০০ জেলেকে চাহিদানুযায়ী নানা উপকরণ প্রদান করা হয়েছে।
ইলিশ সংরক্ষণে শুধু মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর নয়, সকলকে সম্পৃক্ত থাকতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, পুলিশ, র্যাব, নৌবাহিনী, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে।
এমন কি মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ও আমাদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে। আমরা জাটকা ধরবো না। বড় ইলিশ তৈরির সুযোগ করে দেবো। আমরা বড় ইলিশ খাওয়ার সুযোগ থেকে নিজেদের বঞ্চিত করবো না। এটা হোক জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহে আমাদের অঙ্গীকার।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান, জাটকা নিধনের সাথে যারা জড়িত, গোচরীভূত হওয়া মাত্রই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় সরকার কাজ করছে। মা ইলিশ রক্ষা পেলে ইলিশের উৎপাদন বাড়বে। আর উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে দাম কমে আসবে।
মন্ত্রী বলেন, তবে দাম বৃদ্ধির বিষয়ে মধ্যস্বত্বভোগীরা জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার এসব বিষয় সদিচ্ছার সঙ্গে মনিটরিং করছে।
শুধুমাত্র আইন প্রয়োগের মাধ্যমে জাটকা বা মা ইলিশ ধরা বন্ধ করা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের জাটকা বা মা ইলিশ ধরা বন্ধে সামাজিক ক্যাম্পেইন চালাতে হবে, জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে।
আরও পড়ুন: দেশে কোরবানির পশুর কোন সংকট নেই: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
৯ মাস আগে