দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এ সকল আম। তবে গত বছরের তুলনায় এবার আমের ফলন কম হলেও দর ভালো পাওয়ায় খুশি জেলার আমচাষীরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের বড় বাজার কানসাট ছাড়াও পুরাতন বাজার, ভোলাহাটসহ অন্যান্য হাট-বাজারে এখন আম আর আম। পাকা আমের মিষ্টি গন্ধে মাতোয়ারা সবাই। খিরসাপাত, বম্বাই খিরসা, ল্যাংড়া, লখনাসহ বাহারী নামের সুস্বাদু আমের বেচাকেনা চলছে। বর্তমানে ১৮’শ টাকা থেকে ৩৫’শ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে এসব আম।
অথচ গত বছরে এসব আম বিক্রি হয়েছিলো মাত্র ৭০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা মণ দরে। ফলে গেল মৌসুমে আমের নায্যমূল্য না পেয়ে জেলার আমচাষীরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছিলেন। তবে এবার দর ভালো পেয়ে তারা খুশি।
আম ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের পর থেকে জমজমাট চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাজারগুলো। এরইমধ্যে শেষ হয়ে গেছে গোপালভোগ জাতের আমের সরবরাহ। বাজার এখন ক্ষিরসাপাত ও ল্যাংড়া আমের দখলে। আমের রাজা ফজলি বাজারে আসতে শুরু করেছে। তারপর বাজার মাতাবে আশ্বিনা আম।
ব্যব্সায়ীরা আরও জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম সুমিষ্ট হওয়ায় দেশের অন্যান্য জেলায় এ আমের বিশেষ চাহিদা রয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা আসছেন আম কেনার জন্য। প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ আম কেনাবেচা হচ্ছে এবং এখান থেকে বিভিন্ন জেলায় চালান যাচ্ছে।
কানসাট এলাকার আম চাষী সাকির হোসেন জানান, এ বছরের অবস্থা তুলনামূলক ভালো। কারণ গত বছর দেখা গেছে যে আমের দর ১২’শ টাকা ছিল, সেই আমের দাম এই বছর ২হাজার থেকে ৩হাজার টাকা।
সদর উপজেলার আম চাষী আব্দুর রাকিব জানান, আমের দাম এবার আমরা ভালো পাচ্ছি। এমন দাম যদি থাকে তাহলে আমাদের জন্য ভালো।
মাসুদুল হক নিখিল নামে সদর পুরাতন বাজারের এক আম বিক্রেতা জানান, বাজারের অবস্থা ভালো,বর্তমানে প্রতি মণ খিরসাপাত বিক্রী হচ্ছে ৩৩’শ থেকে ৩৬’শ টাকা, ল্যাংড়া বিক্রী হচ্ছে ২৪’শ থেকে ২৬’শ টাকা, বম্বাই খিরসা ১৮’শ থেকে ২হাজার টাকা।
ঢাকা থেকে আসা আমের পাইকারী ক্রেতা মো. কাবিন বলেন, আমি ঢাকা বাদামতলি, যাত্রাবাড়িতে ব্যবসা করি। এখান থেকে আম নিয়ে যাই। তবে এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় আমের দাম বেশি। এখানকার আম ভালো বলেই আমরা প্রতিবারই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আম কিনে নিয়ে যাই।
কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুরুল হুদা মনে করেন, ভালো দাম পাওয়ায় আগামী বছর চাষীরা বেশী আম উৎপাদনে আগ্রহী হবে এবং ফলনও বাড়বে। তিনি জানান, চলতি বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৩১ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে।