এক হাজার ৬১৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে জুলাই ২০১৮ থেকে জুন ২০২২ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য সরকারের অনুমোদন পাওয়া মুন্সিগঞ্জ রাসায়নিক শিল্পনগরী প্রকল্পের বাইরে আলাদাভাবে টঙ্গীর প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে বলে বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘মুন্সিগঞ্জে রাসায়নিক শিল্পনগরী স্থাপনের প্রক্রিয়া থাকার পরও পুরান ঢাকায় রাসায়নিকের গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সম্প্রতি টঙ্গীতে রাসায়নিকের গুদাম প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে।’
গত ২০ ফেব্রুয়ারি চকবাজারের নন্দকুমার দত্ত সড়ক ও চুরিহাট্টা শাহী মসজিদ সড়কে কয়েকটি ভবন গ্রাস করে নেয়া ওই আগুনে ৭১ জন নিহত এবং প্রায় ৪১ জন আহত হন।
বিএসইসি কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) চলতি বছরের ২৮ জুন ৯১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে নতুন প্রকল্পটি অনুমোদন করে। এটি জুলাই ২০১৯ থেকে ডিসেম্বর ২০২০ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
এদিকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টঙ্গীতে রাসায়নিকের গুদাম স্থাপন প্রকল্পটি দরপত্র প্রক্রিয়া এড়িয়ে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) বাস্তবায়ন করতে চায় বিএসইসি। সংস্থাটির মতে, যেকোনো ধরনের দরপত্র প্রক্রিয়া প্রকল্পটি দেরি করিয়ে দিতে পারে।
‘আমরা বিএসইসির প্রস্তাবনা পেয়েছি এবং তা অনুমোদনের জন্য অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠিয়ে দিয়েছি,’ বলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা।
বিএসইসি শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থা এবং তাদের অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন পাওয়ার আগে মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক সম্মতি পেতে হয়।
সরকার থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ক্ষমতাপ্রাপ্ত সংস্থা অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি, বলেন ওই কর্মকর্তা।
টঙ্গীতে রাসায়নিকের গুদাম স্থাপন প্রকল্পের কাজ ডিপিএম পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বিএসইসি জানায়, পুরান ঢাকায় বিদ্যমান রাসায়নিকের ব্যবসা সরিয়ে নিতে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) আওতায় মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে রাসায়নিক শিল্পনগরী স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
‘কিন্তু এমন রাসায়নিক শিল্পনগরী বাস্তবায়নে, যেখানে রাসায়নিক কারখানা ও গুদাম উভয় সরিয়ে নেয়া হবে, অনেক দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন। কারণ এতে ভূমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া জড়িত,’ অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানো প্রস্তাবনায় উল্লেখ করে বিএসইসি।
সংস্থাটি আরও জানায়, টঙ্গী শিল্প এলাকায় বিএসইসির মালিকানাধীন ছয় একর জমিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদামগুলো যত দ্রুত সম্ভব সরিয়ে নেয়াই টঙ্গীতে রাসায়নিকের গুদাম স্থাপন প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য বলে জানায় বিএসইসি।
‘টঙ্গীতে গুদাম স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার পর বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক- তরল, কঠিন, দাহ্য, অদাহ্য, বিস্ফোরক ও তরলীকৃত গ্যাস- সেখানে মজুদ করা সম্ভব হবে,’ প্রস্তাবনায় জানায় বিএসইসি।