বৈরি আবহাওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলে কাঙ্খিত পাট উৎপাদন না হওয়ায় ভারত, পাকিস্তান ও চীনের কাঁচাপাটের চাহিদা অনুযায়ী রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে মোংলা বন্দর দিয়ে খুলনার দৌলতপুরের কাঁচাপাট রপ্তানি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
এ মৌসুমে চাহিদা অনুযায়ী কাঁচাপাট কিনতে পারেননি রপ্তানিকারকরা। তারপরও চলছে কৃত্রিম সংকট।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত পাঁচ বছরে কৃষকরা পাটের ন্যায্যমূল্য পায়নি। ফলে তারা পাট চাষ কমিয়ে দিয়েছে। গতবারের বন্যা ও আম্ফানের কারণে পাট আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে ফরিদপুর, রংপুর, যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনার পাইকগাছা ও ডুমুরিয়ায় কাঙ্খিত পাট উৎপাদন হয়নি। বিগত বছরগুলোতে কৃষক প্রতি মণ পাট দু’হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করে। গত জুলাই থেকে দৌলতপুর মোকামে পাট আসার পরিমাণ কমে যাওয়ায় প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে পাঁচ হাজার টাকা দরে ।
খুলনার পাট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত অর্থ বছরে ১৮৮ কোটি ৩৯ লাখ ৬৬ হাজার টাকা মূল্যের ১ লাখ ৭৫ হাজার ২০০ বেল পাট রপ্তানি হয়েছিলে। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে রপ্তানি হয় ৮৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা মূল্যের ৬৯ হাজার বেল পাট । মোংলা সমুদ্র বন্দর দিয়ে পাকিস্তান, চীন ও বেলজিয়ামেও পাট রপ্তানি হয়। বেনাপোল, বাংলাবান্দা দিয়ে রপ্তানি হয় ভারতে। খুলনার দৌলতপুরের আকুঞ্জী ব্রাদার্স, রোশনি কবির, এস আর জুট, নামফা ট্রেড ইন্টা., ইয়াসিন ব্রাদার্স, মামুন জুট, রিপন এন্টারপ্রাইজ ও রিফাত এন্টার প্রাইজ পাট রপ্তানি করে আসছে।
পাট অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'দৌলতপুর মোকামে কাঁচাপাটের আমদানি অনেক কম। সেকারণে রপ্তানি কম হয়েছে। গত তিন যুগে দৌলতপুর মোকামে এমন সংকট হয়নি।'
দৌলতপুর পাট রপ্তানিকারক শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, 'আম্পানের কারণে উৎপাদন কম হওয়ায় সেখানে পাট রপ্তানি কমেছে। অপরদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পাট কলগুলো বাংলাদেশের কাঁচা পাটের ওপর নির্ভরশীল। ভারত গোল্ডেন ফাইবারস কোয়ালিটির পাট ক্রয় করে। যা এশিয়ার মধ্যে শুধুমাত্র ফরিদপুর অঞ্চলেই উৎপাদিত হয়। মূলত উৎপাদন কমের কারণে রপ্তানি বাণিজ্যে এই ভাটা।'