একুশ পেরোনোর ৬৮ বছর পরেও সেই অব্যক্ত ক্ষুধা থেকেই যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তবে জেলা প্রশাসন থেকে আগামী বছর জেলার সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলকভাবে শহীদ মিনার বাস্তবায়ন করার কথা জানানো হয়েছে।
মেহেরপুর জেলায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ ১৬৮টি, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩০৮টি এবং কিন্ডারগার্টেন রয়েছে ১৬৯টি। সব মিলিয়ে ৬৪৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৪৯টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। প্রাইভেট ও কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠানগুলোর একটিতেও নেই শহীদ মিনার।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুরের তিনটি উপজেলায় নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল, মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, ভোকেশনাল ও স্কুল অ্যান্ড কলেজ রয়েছে ১৬৮টি।
এর মধ্যে মেহেরপুর সদর উপজেলায় নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৯টি, কলেজ ৪টি, মাদরাসা রয়েছে ১১টি, ভোকেশনাল ১টি, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ৩টি। এর মধ্যে ১২টিতে শহীদ মিনার রয়েছে।
মুজিবনগর উপজেলায় নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৬টি, কলেজ ২টি, মাদরাসা রয়েছে ৪টি, ভোকেশনাল ১টি। এর মধ্যে ১৩টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে।
গাংনী উপজেলায় নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৫টি, কলেজ ৮টি, মাদরাসা রয়েছে ১০টি, ভোকেশনাল ১টি, স্কুল এন্ড কলেজ ৩টি। এর মধ্যে ২০টিতে শহীদ মিনার রয়েছে।
এদিকে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে খোঁজ নিয়ে আরও করুণ চিত্র দেখা গেছে। জেলার তিনটি উপজেলায় ৩০৮টি বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ৪টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলার ১০৯টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২টিতে, মুজিবনগর উপজেলায় ৩৮টির মধ্যে ১টি বিদ্যালয়ে এবং গাংনীতে ১৬১টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ১টিতে শহীদ মিনার রয়েছে।
জেলা জাসদের সভাপতি ওমর আলী জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকা অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। বর্তমান সরকারের দ্রুত এ দিকে নজর দেয়া উচিত।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মহা. ফজলে রহমান বলেন, ৩০৮টি বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ৪টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। বিদ্যালয়গুলোতে ভবন নির্মাণের প্রকল্পে ‘শহীদ মিনার নির্মাণ’ ট্যাগ করে দিলে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব।
জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আমান উদ্দিন মন্ডল বলেন, ‘জেলার এতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেটি বোধগম্য নয়। আমি নতুন এসেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলকে জানানো হবে।’
মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনি বলেন, ‘শতকরা ৯০ শতাংশ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই এটি খুবই দুঃখজনক। তবে আগামী বছরের ২১ শে ফেব্রুয়ারির আগেই জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার গড়ে তোলা হবে।’